০৫:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
ময়মনসিংহে বন্ধুর হাতে যুবক নিহত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলাকাভিত্তিক আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৩ মহাখালীতে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আগুন, দ্রুত নিয়ন্ত্রণে খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফুল পাঠানো মার্কিন প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান অ্যান্ডুরিলের ড্রোন পরীক্ষায় ধারাবাহিক ব্যর্থতা নিহত দুইজনের পরিচয় সিলেটে গোয়ালঘর থেকে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার  ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিক্রিয়া: আগামী বছরের জি-২০ আমন্ত্রণ না-পাওয়াকে ‘দুঃখজনক’ বলল রামাফোসা খুলনায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত, আরেকজন আহত পাকিস্তানের ডিআই খান অভিযানে ২২ সন্ত্রাসী নিহত

ভারতের নতুন শ্রম আইন নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ

ভারতে নতুন শ্রম আইন কার্যকরের প্রতিবাদে ২৬ নভেম্বর হাজারো শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসে। তাদের অভিযোগ, এই আইনগুলো শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার কমিয়ে দেবে এবং কর্পোরেট স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে।

দেশে সম্প্রতি উপনিবেশিক যুগের পুরনো আইন বাতিল করে নতুন চারটি সমন্বিত শ্রম কোড চালু হয়েছে। পূর্বের ২৯টি শ্রম আইনকে একত্র করে নিয়মের সংখ্যা ১,৪০০ থেকে কমিয়ে প্রায় ৩৫০-এ আনা হয়েছে। সরকারের দাবি—এটি শ্রম আইনকে সহজ, কার্যকর ও আধুনিক করবে। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনগুলোর মতে এই পরিবর্তন শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিকর।

দেশজুড়ে বিক্ষোভের চিত্র

নিউ ট্রেড ইউনিয়ন ইনিশিয়েটিভ-এর গৌতম মোদী জানান, বিভিন্ন সেক্টরের শ্রমিক কারখানার সামনে ও শহরের কেন্দ্রে বিক্ষোভ করেছে। তার কথায়, সরকার শ্রমিকদের অন্ধকারে রেখে আইন পরিবর্তন করেছে এবং ন্যায়বিচার ও সমতার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।

নতুন শ্রম কোডে কী বদলাচ্ছে

নতুন আইনগুলো নিরাপত্তা মান বাড়ানোর পাশাপাশি গিগ-ওয়ার্কার এর জন্য সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা বাধ্যতামূলক করেছে। তবে একই সঙ্গে বাড়তি কারখানা শিফট চালুর সুযোগ দিয়েছে, ধর্মঘট ডাকার প্রক্রিয়াকে কঠিন করেছে এবং মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠান গুলোকে সহজে শ্রমিক ছাঁটাই করার অনুমতি দিয়েছে।

সবচেয়ে বিতর্কিত পরিবর্তন হলো—যেসব প্রতিষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি কর্মী থাকলে আগে সরকারি অনুমতি ছাড়া ছাঁটাই করা যেত না, সেই সংখ্যাটি বাড়িয়ে ৩০০ করা হয়েছে। ফলে ৩০০ জন পর্যন্ত কর্মী থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন অনুমতি ছাড়াই শ্রমিক ছাঁটাই করতে পারবে।

এটি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। বিরোধী দল সমর্থিত ইউনিয়নগুলো একে বলেছে “শ্রমিকদের প্রতি প্রতারণা”। সেন্টার অব ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন-এর মতে, সরকার শ্রমিক-বান্ধব রূপ দেখাতে চাইছে, কিন্তু বাস্তবে এটি স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় শ্রমিক অধিকার সংকোচন।

সরকারের অবস্থান

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, নতুন আইনগুলো বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাধা দূর করবে এবং স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বিস্তৃত ও অগ্রসর শ্রম সংস্কার হবে। তার মতে, জটিল ও ঝামেলাপূর্ণ নিয়ম দূর করতেই এই পদক্ষেপ।

অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট

ভারত এখন বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল বড় অর্থনীতি। কিন্তু সাম্প্রতিক মন্থরতার কারণে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে, যা দেশের জন্য লাখ লাখ নতুন চাকরি তৈরি করতে প্রয়োজনীয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের রাশিয়ান তেল কেনা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে শুল্ক আরোপ করায় অর্থনীতি আরও চাপে পড়েছে। ফলে জ্বালানি নিরাপত্তা ও বাণিজ্য সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

নোমুরা-এর বিশ্লেষকদের মতে, শ্রম আইন সংস্কার হলো পুরনো ও জটিল আইনগুলো আধুনিক করার প্রচেষ্টা। কিন্তু একই সঙ্গে এটি সরকারের দ্রুত অর্থনৈতিক সংস্কারের ধারা, বিশেষ করে ৫০ শতাংশ ট্রাম্প ট্যারিফের পরিপ্রেক্ষিতে।


#ভারত #নতুন_শ্রম_আইন #শ্রমিক_বিক্ষোভ #শ্রমিক_অধিকার #নরেন্দ্র_মোদী #অর্থনীতি #ইউনিয়ন #ট্রাম্প_শুল্ক #নোমুরা #শ্রম_সংস্কার

জনপ্রিয় সংবাদ

ময়মনসিংহে বন্ধুর হাতে যুবক নিহত

ভারতের নতুন শ্রম আইন নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ

০৪:০৯:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

ভারতে নতুন শ্রম আইন কার্যকরের প্রতিবাদে ২৬ নভেম্বর হাজারো শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসে। তাদের অভিযোগ, এই আইনগুলো শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার কমিয়ে দেবে এবং কর্পোরেট স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে।

দেশে সম্প্রতি উপনিবেশিক যুগের পুরনো আইন বাতিল করে নতুন চারটি সমন্বিত শ্রম কোড চালু হয়েছে। পূর্বের ২৯টি শ্রম আইনকে একত্র করে নিয়মের সংখ্যা ১,৪০০ থেকে কমিয়ে প্রায় ৩৫০-এ আনা হয়েছে। সরকারের দাবি—এটি শ্রম আইনকে সহজ, কার্যকর ও আধুনিক করবে। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনগুলোর মতে এই পরিবর্তন শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিকর।

দেশজুড়ে বিক্ষোভের চিত্র

নিউ ট্রেড ইউনিয়ন ইনিশিয়েটিভ-এর গৌতম মোদী জানান, বিভিন্ন সেক্টরের শ্রমিক কারখানার সামনে ও শহরের কেন্দ্রে বিক্ষোভ করেছে। তার কথায়, সরকার শ্রমিকদের অন্ধকারে রেখে আইন পরিবর্তন করেছে এবং ন্যায়বিচার ও সমতার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।

নতুন শ্রম কোডে কী বদলাচ্ছে

নতুন আইনগুলো নিরাপত্তা মান বাড়ানোর পাশাপাশি গিগ-ওয়ার্কার এর জন্য সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা বাধ্যতামূলক করেছে। তবে একই সঙ্গে বাড়তি কারখানা শিফট চালুর সুযোগ দিয়েছে, ধর্মঘট ডাকার প্রক্রিয়াকে কঠিন করেছে এবং মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠান গুলোকে সহজে শ্রমিক ছাঁটাই করার অনুমতি দিয়েছে।

সবচেয়ে বিতর্কিত পরিবর্তন হলো—যেসব প্রতিষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি কর্মী থাকলে আগে সরকারি অনুমতি ছাড়া ছাঁটাই করা যেত না, সেই সংখ্যাটি বাড়িয়ে ৩০০ করা হয়েছে। ফলে ৩০০ জন পর্যন্ত কর্মী থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন অনুমতি ছাড়াই শ্রমিক ছাঁটাই করতে পারবে।

এটি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। বিরোধী দল সমর্থিত ইউনিয়নগুলো একে বলেছে “শ্রমিকদের প্রতি প্রতারণা”। সেন্টার অব ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন-এর মতে, সরকার শ্রমিক-বান্ধব রূপ দেখাতে চাইছে, কিন্তু বাস্তবে এটি স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় শ্রমিক অধিকার সংকোচন।

সরকারের অবস্থান

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, নতুন আইনগুলো বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাধা দূর করবে এবং স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বিস্তৃত ও অগ্রসর শ্রম সংস্কার হবে। তার মতে, জটিল ও ঝামেলাপূর্ণ নিয়ম দূর করতেই এই পদক্ষেপ।

অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট

ভারত এখন বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল বড় অর্থনীতি। কিন্তু সাম্প্রতিক মন্থরতার কারণে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে, যা দেশের জন্য লাখ লাখ নতুন চাকরি তৈরি করতে প্রয়োজনীয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের রাশিয়ান তেল কেনা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে শুল্ক আরোপ করায় অর্থনীতি আরও চাপে পড়েছে। ফলে জ্বালানি নিরাপত্তা ও বাণিজ্য সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

নোমুরা-এর বিশ্লেষকদের মতে, শ্রম আইন সংস্কার হলো পুরনো ও জটিল আইনগুলো আধুনিক করার প্রচেষ্টা। কিন্তু একই সঙ্গে এটি সরকারের দ্রুত অর্থনৈতিক সংস্কারের ধারা, বিশেষ করে ৫০ শতাংশ ট্রাম্প ট্যারিফের পরিপ্রেক্ষিতে।


#ভারত #নতুন_শ্রম_আইন #শ্রমিক_বিক্ষোভ #শ্রমিক_অধিকার #নরেন্দ্র_মোদী #অর্থনীতি #ইউনিয়ন #ট্রাম্প_শুল্ক #নোমুরা #শ্রম_সংস্কার