পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার ডেরা ইসমাইল খান জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর পরিচালিত একটি গোয়েন্দাভিত্তিক অভিযানে (আইবিও) ভারত-সমর্থিত ২২ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রেক্ষাপটে এই অভিযানকে বড় ধরনের সাফল্য হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
অভিযানের বিবরণ
নিরাপত্তা বাহিনী জানায়, নিহত সন্ত্রাসীরা ভারত-সমর্থিত গোষ্ঠী ‘ফিতনা আল-খারিজ’ এর সদস্য ছিল। আইএসপিআর জানায়, অভিযানের পর এলাকায় আরও কোনো ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসী লুকিয়ে আছে কি না তা নিশ্চিত করতে স্যানিটাইজেশন অপারেশন চলছে।
আইএসপিআরের অবস্থান
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ‘আজম-এ-ইস্তেহকাম’ নীতির অধীনে বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ দমনে অভিযান অব্যাহত থাকবে। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, দেশের ভেতর থেকে সন্ত্রাসবাদ সম্পূর্ণ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এই প্রচেষ্টা পুরো গতিতে চলবে।

দেশজুড়ে সহিংসতা বৃদ্ধির চিত্র
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (সিআরএসএস) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে (কিউ৩) পাকিস্তানে সামগ্রিক সহিংসতা ৪৬% বেড়েছে। এই সময়ে ৩২৯টি সহিংস ঘটনায় ৯০১ জন নিহত এবং ৫৯৯ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে সাধারণ নাগরিক, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং সন্ত্রাসীরা রয়েছে।
২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালের সহিংসতা
সিআরএসএস জানায়, ২০২৫ সালের প্রথম তিন প্রান্তিকে ২,৪১৪ জন নিহত হয়েছে, যা ২০২৪ সালের পুরো বছরের মৃত্যুর সংখ্যার (২,৫৪৬ জন) কাছাকাছি। কিউ৩-এর ৯০১ নিহতের মধ্যে ৫১৬ জন (৫৭%) সন্ত্রাসী বা অপরাধী ছিল, আর বাকি ৩৮৫ জন সাধারণ জনগণ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। বিস্তারিত হিসেবে দেখা যায়—সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছে ২১৯ জন (২৪%) এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছে ১৬৬ জন (১৮%)।

সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল: খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান
আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এই দুই প্রদেশে সন্ত্রাসী হামলা ও সহিংসতার মূল কেন্দ্র দেখা গেছে। এ দু’টি অঞ্চল মিলিয়ে দেশের মোট সহিংসতার ৯৬% ঘটেছে। খাইবার পাখতুনখোয়া ছিল সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা, যেখানে মোট নিহতের ৭১% (৬৩৮ জন) এবং মোট সহিংস ঘটনার ৬৭% (২২১টি) সংঘটিত হয়েছে। বেলুচিস্তান ছিল দ্বিতীয় স্থানে, যেখানে ২৩০ জন নিহত হয়েছে (২৫% এর বেশি) এবং ৮৫টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় বৃদ্ধির হার
সিআরএসএস-এর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, খাইবার পাখতুনখোয়া মৃত্যুহার দ্বিতীয় প্রান্তিকের (৩৯০ জন) তুলনায় তৃতীয় প্রান্তিকে (৬৩৮ জন) ৬৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে বেলুচিস্তানে মৃত্যু ১৯০ থেকে বেড়ে ২৩০-এ পৌঁছেছে, যা ২১% বৃদ্ধি নির্দেশ করে।
#নিরাপত্তা #সন্ত্রাসবাদ #ডিআই_খান #পাকিস্তান #আইএসপিআর #সহিংসতা_প্রতিবেদন
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















