কাইভ নিশ্চিত করেছে—ইউক্রেনীয় নৌ–ড্রোন ব্ল্যাক সাগরে রাশিয়ার তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’–এর দু’টি তেলবাহী ট্যাঙ্কারে হামলা চালিয়েছে। যুদ্ধকালীন রুশ তেল–রাজস্ব ব্যাহত করতেই এই তীব্র পদক্ষেপ—যা সংঘাতকে আরও এক ধাপ উত্তপ্ত করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তুরস্কের মেরিটাইম ডিরেক্টরেট প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে—পানির ওপর দিয়ে ছুটে যাওয়া Sea Baby ড্রোন ট্যাঙ্কারের গায়ে ধাক্কা খেয়ে বিস্ফোরিত হচ্ছে; মুহূর্তেই আকাশ ভরে যাচ্ছে আগুন আর কালো ধোঁয়ায়।
তুর্কি কর্তৃপক্ষ শনাক্ত করেছে—হামলার শিকার জাহাজ দুটি হলো Kairos ও Virat, দুটিই গাম্বিয়ার পতাকাবাহী। শুক্রবার তুরস্কের উপকূলে প্রথম হামলা হয়, এরপর শনিবার Virat–এ দ্বিতীয় আঘাত আসে। কোনো হতাহতের খবর নেই।
রাশিয়ার ‘শ্যাডো ফ্লিট’—নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর পুরোনো জাহাজ–নেটওয়ার্ক
২০২২–এর পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রাশিয়া শত শত পুরোনো ট্যাঙ্কার ব্যবহার করছে—অস্বচ্ছ মালিকানা, গোপন বীমা ব্যবস্থা আর ধোঁয়াশা পরিবহন রুট নিয়ে এই ফ্লিটকে বলা হয় ‘শ্যাডো ফ্লিট’।
Kairos–কে আঘাত করা হয় দক্ষিণ–পশ্চিম ব্ল্যাক সাগরে, আর Virat–কে আরও পূর্বে। লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকা অনুযায়ী দুটিই নিষেধাজ্ঞাভুক্ত জাহাজ।
তুরস্কের কোস্টগার্ড আগুন নেভাতে দুইটি উদ্ধারজাহাজ পাঠায়। আংকারা জানিয়েছে—হামলার পরপরই তারা সহায়তা দিচ্ছিল।
এই হামলা স্পষ্ট ইঙ্গিত—ইউক্রেন এখন শুধু রুশ বন্দর বা স্থলভিত্তিক জ্বালানি অবকাঠামো নয়, বরং সরাসরি রুশ তেল–বহনকারী জাহাজকেও লক্ষ্যবস্তু করছে। তেলই মস্কোর যুদ্ধ–অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু।
নোভোরোসিস্কে আরও ক্ষয়ক্ষতি—ক্যাস্পিয়ান পাইপলাইন কনসোর্টিয়ামের লোডিং স্থগিত
অন্যদিকে, রাতের মধ্যে রুশ ব্ল্যাক সি বন্দরে নোভোরোসিস্ক–এ ড্রোনবোট হামলায় একটি মোরিং পয়েন্ট গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর ফলে CPC (Caspian Pipeline Consortium) তেল–লোডিং বন্ধ করে দিয়েছে। এই কনসোর্টিয়াম রাশিয়া, কাজাখস্তান, ExxonMobil, Chevron ও Shell–এর যৌথ মালিকানাধীন।
কাজাখ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইবেক স্মাদিয়ারভ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন—“এটি তৃতীয় বড় আঘাত, যা কিয়েভ–আস্তানা সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করছে।” তিনি ইউক্রেনকে ভবিষ্যৎ হামলা রোধে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে বলেন।
যুদ্ধ–সমাপ্তি নিয়ে আলোচনার প্রচেষ্টা—কিয়েভ প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রে
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন—শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা রুস্তেম উমেরভ–এর নেতৃত্বে একটি দল যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে যুদ্ধ শেষ করার সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য।
উমেরভ দায়িত্ব নিচ্ছেন সাবেক প্রধান আলোচক আন্দ্রি ইয়ারমাকের জায়গায়—যার বাসায় শুক্রবার দুর্নীতি–বিরোধী সংস্থার তল্লাশি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেন আলোচনা রবিবার ফ্লোরিডায় শুরু হবে, আর মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ পরের সপ্তাহে মস্কোতে বৈঠক করবেন।
পরিস্থিতি একদিকে উত্তপ্ত, অন্যদিকে কূটনৈতিক দরজা খোলা রাখার চেষ্টাও চলছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















