জিন ভাণ্ডার গড়ার দৌড়
বর্ষের পর বর্ষ শিকার, বাসস্থান হারানো ও স্বজনবিবাহের কারণে চিতাবাঘের সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনই ঝুঁকিতে পড়েছে তাদের জিনগত বৈচিত্র্য। অনেক এলাকায় এখন ছোট ছোট বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠীতে সীমিত সংখ্যক চিতা বেঁচে আছে, যেখানে একই বংশের মধ্যে মিলন বাড়ায় রোগপ্রবণতা ও সন্তান ধারণে সমস্যা বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা তাই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সুস্থ পুরুষ চিতার শুক্রাণু সংগ্রহ করে বিশেষায়িত স্পার্ম ব্যাংকে সংরক্ষণ শুরু করেছেন, যাতে ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে এগুলো দিয়ে শক্তিশালী বংশধারা তৈরি করা যায়। এই উদ্যোগ সফল হলে হারিয়ে যাওয়ার আগে অন্তত কিছু জিনগত বৈশিষ্ট্য নিরাপদে রাখা সম্ভব হবে, যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য “ইনস্যুরেন্স পলিসি” হিসেবে কাজ করতে পারে।

প্রযুক্তি, ব্যয় আর মাঠের বাস্তবতার সমন্বয়
স্পার্ম ব্যাংক গড়ে তুলতে উন্নত ল্যাব, প্রশিক্ষিত ভেটেরিনারি টিম এবং দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন—তিনটিই দরকার, যা আফ্রিকার অনেক দেশে সহজ নয়। পরীক্ষাগারে জমাট বাঁধা শুক্রাণু দিয়ে কৃত্রিম প্রজনন বা ইন ভিট্রো প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশে আইন, নীতি ও জনমতকেও প্রস্তুত করতে হয়। তবু গবেষকেরা আশাবাদী যে, মাঠ পর্যায়ের সংরক্ষণ কাজের পাশাপাশি এই প্রযুক্তি ছোট বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠীগুলোর জিনগত শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে। একই পথে হাঁটার কথা ভাবছেন অন্য প্রজাতির গবেষকেরাও—দুর্লভ হরিণ, গরিলা বা অন্যান্য বড় বিড়ালজাত প্রাণীর জন্যও একই ধরনের বায়ো–ব্যাংক তৈরি হলে আগামী দশকগুলোতে বিলুপ্তি ঠেকাতে তা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তবে বন ধ্বংস, অবৈধ শিকার ও জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা না করলে শুধু স্পার্ম ব্যাংক দিয়েই প্রকৃতিকে রক্ষা করা যাবে না—এ কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















