ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের প্রতিরূপ নির্মাণকে কেন্দ্র করে বাড়ছে উত্তেজনা। সম্ভাব্য অস্থিরতা ঠেকাতে রাজ্য ও কেন্দ্র—উভয় প্রশাসনই নিরাপত্তা জোরদার করেছে। হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ না করলেও স্থানীয় জনমনে নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে।
আদালতের অবস্থান: দায়িত্ব রাজ্যের
কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, বাবরি মসজিদের প্রতিরূপ নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও আদালত এতে হস্তক্ষেপ করবে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা রাজ্য সরকারের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন বিচারপতিরা। অনুষ্ঠানের আয়োজক তৃণমূলের এমএলএ হুমায়ুন কবিরকে এই ঘটনার পর দল সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। উল্লেখ্য, ৬ ডিসেম্বরই ভারতের ইতিহাসে বহুল আলোচিত বাবরি মসজিদ ধ্বংসের স্মরণ দিবস পালিত হয়।
নিরাপত্তা কঠোর: রাজ্য–কেন্দ্র একসঙ্গে তৎপর

রাজ্য সরকার আদালতকে জানায়, পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং বেলডাঙায় বিশেষ নজরদারি চলছে। কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর থেকেই মুর্শিদাবাদে অবস্থানরত কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর ১৯টি কোম্পানি প্রয়োজনে মুহূর্তেই মোতায়েন করা সম্ভব। স্থানীয় প্রশাসন রুট মার্চসহ সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখছে।
আবেদনকারীর শঙ্কা: উত্তেজনা বাড়তে পারে
একটি আবেদনে অনুষ্ঠান স্থগিতের দাবি জানানো হয়। আবেদনকারীদের যুক্তি—হুমায়ুন কবিরের কিছু মন্তব্য এবং প্রতিরূপ নির্মাণের সিদ্ধান্ত সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দিতে পারে। আদালত হস্তক্ষেপ না করায় আবেদনকারীর আইনজীবীরা বলেন, পরিস্থিতি অবনতি ঘটলে এর দায়ভার রাজ্যকেই নিতে হবে।
হুমায়ুন কবিরের বক্তব্য
হুমায়ুন কবির আদালতের সিদ্ধান্তকে ‘সংবিধানের জয়’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, কোনো ধরনের সহিংসতা উসকে দেওয়ার ইচ্ছা তাঁর নেই এবং অনুষ্ঠানটি শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনের জন্য দুই হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবেন। তাঁর দাবি, হাজারো মানুষ অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হবেন।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, সংবেদনশীল এলাকায় এমন কর্মসূচি রাজনৈতিকভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন। বরখাস্ত হওয়ার পর হুমায়ুন কবির ঘোষণা করেছেন যে তিনি ১২ ডিসেম্বর নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবেন। অন্যদিকে বিজেপি নেতা অর্জুন সিং বলেন, ‘বাবরি’ নামটি ব্যবহার করাটাই সংবিধানের প্রতি অবমাননা এবং প্রয়োজনে তারা কর্মসূচি প্রতিহত করবে।
স্থানীয়দের উদ্বেগ
রাজনৈতিক চাপান–উতোরের মাঝে সবচেয়ে বেশি শঙ্কায় স্থানীয় সাধারণ মানুষ। বহুদিনের শান্তিপূর্ণ এলাকা আবারও সংঘাতের আবহে ঢুকে পড়বে কি না—এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। প্রশাসন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করলেও স্থানীয়দের মতে, উত্তেজনা শান্ত করতে রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সংলাপ ও আস্থা তৈরি করাটাই বেশি জরুরি।
#ভারত #বাবরি_মসজিদ #মুর্শিদাবাদ #পশ্চিমবঙ্গ #সাম্প্রদায়িক_সম্প্রীতি #সারাক্ষণ_রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















