জাপানের বিনোদন জগতে এখন নতুন ঢেউ। অ্যানিমে, গেমস ও ক্রীড়া খ্যাতির দেশটিতে এবার জনপ্রিয় হচ্ছে পশ্চিমা ধাঁচের স্ট্যান্ড-আপ কমেডি—যার নেতৃত্বে আছেন ইউরি কলিন্স, বিউ জে ফক্স, শোটা সাইমু, ইভানস মুসোকাসহ বহু বিদেশি ও দ্বিভাষী শিল্পী।
পপ কালচারের দাপট, তবু কমেডিতে ভিন্ন চিত্র
জাপানি সিনেমা, নাটক, অ্যানিমে ঘরোয়া বাজারে রেকর্ড গড়লেও কমেডিতে দীর্ঘদিন ধরে নেতৃত্ব ছিল ঐতিহ্যবাহী ‘মানজাই’-এর। এই দুই-জনের কথোপকথনভিত্তিক কমেডি টিভি জগতে দাপট দেখালেও দর্শকদের কাছে নতুন স্বাদ এনে দিচ্ছে স্ট্যান্ড-আপ।
শিবুয়ায় ঘর বাঁধা নতুন হাস্যজগৎ

২০১৫ সালে স্ট্যান্ড-আপ টোকিও প্ল্যাটফর্ম গড়ে ওঠে। পরে ২০২২ সালে শিবুয়ায় তৈরি হয় টোকিও কমেডি বার (TCB)। মহামারি-পরবর্তী সময়ে প্রতি রাতে তিনটি পর্যন্ত শো চলছে এখানে। বিদেশি দর্শক, ভাষা শিখতে আসা জাপানি তরুণ, আবার জাপানি ভাষার শো—সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে শিল্পীরা।
ভাষা, সংস্কৃতি ও হাসির নতুন রূপ
দ্বিভাষী শিল্পীদের বড় চ্যালেঞ্জ—সংস্কৃতিভেদে হাসির পার্থক্য।
শোটা সাইমুম বলেন, ইংরেজিতে কথা বলতে বিদেশিদের জন্য কনটেক্সট বদলাতে হয়, কিন্তু জাপানি দর্শকদের কাছে একই রসিকতা অনেক সময় কাজই করে না।
তবু জাপানি দর্শকদের মনোযোগী শোনার স্বভাব স্ট্যান্ড-আপকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে—যেখানে শুধু কৌতুক নয়, নতুন অভিজ্ঞতা শেয়ার করা যায়।
পরিচয়, বৈচিত্র্য ও বাস্তবতার গল্প
স্ট্যান্ড-আপের জনপ্রিয়তা বাড়ছে কারণ এতে উঠে আসছে বাস্তব অভিজ্ঞতা—বিদেশি হিসেবে জীবন, ভাষার সংগ্রাম, বর্ণবৈষম্য, সম্পর্ক, যৌনতা, সমাজের লুকানো চাপ।

● ইউরি কলিন্স, দেড় মিলিয়নের কাছাকাছি অনলাইন অনুসারীসহ, দুই ভাষাতেই দেশের স্টার পারফর্মার। তাঁর ‘হাফু’ পরিচয় ও সম্পর্কভিত্তিক কন্টেন্ট তরুণদের কাছে তুমুল গ্রহণযোগ্য।
● কেনিয়ান কমেডিয়ান ইভানস মুসকা স্ট্যান্ড-আপকে ব্যবহার করছেন বৈষম্য, পুলিশের হয়রানি বা ভিসার সংগ্রাম—এই অদেখা বাস্তবতা তুলে ধরতে।
মানজাইকে সরিয়ে নয়, পাশাপাশি নিজের জায়গা তৈরি
জাপানের বড় মঞ্চে মানজাই এখনও রাজত্ব করছে। তবু প্যাট্রিক হারলানের মতো বর্ষীয়ানরা মনে করেন, স্ট্যান্ড-আপের জন্যতৈরি হচ্ছে। ১২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের দেশে ১ লাখের একটি দর্শকগোষ্ঠী থাকলে সফল হওয়া সম্ভব।
সামনে কোন পথে জাপানের কমেডি?
মানজাই মূলধারায় থাকলেও স্ট্যান্ড-আপ সমাজের অঘোষিত কথাগুলোকে প্রকাশের জায়গা দিচ্ছে। ভাষার নিয়ম ভাঙা, বৈচিত্র্য, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা—সব মিলিয়ে জাপানের হাসির ধরন বদলে যাচ্ছে দ্রুত।


সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















