পাকিস্তানে রাজনৈতিক উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে নিয়ে তীব্র সমালোচনার পর কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে এবার সরাসরি ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ বলে আক্রমণ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর পাল্টা বক্তব্য
ইসলামাবাদে এক টেলিভিশন সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, ইমরান খান পরিবার-সদস্যদের সাক্ষাৎ আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘বিভাজন সৃষ্টির’ প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি সরাসরি নাম না নিয়ে খানকে “নার্সিসিস্ট” এবং এমন এক ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করেন, যিনি মনে করেন, “আমি ক্ষমতায় না থাকলে আর কিছুই থাকা উচিত নয়।”
অভিযোগ-প্রত্যাঘাতের পালা

এই প্রতিক্রিয়ার আগে খান তার এক পোস্টে সেনাপ্রধান মুনিরকে ‘মানসিকভাবে অস্থিতিশীল’ আখ্যা দেন এবং অভিযোগ করেন যে তার নেতৃত্বে পাকিস্তানে আইনের শাসন ধসে পড়েছে। তিনি দাবি করেন, তাকে এবং তার স্ত্রীকে সাজানো মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং তাকে একক কারাবাসে মানসিক চাপে রাখা হয়েছে।
ইমরান খানের মুখপাত্র জুলফিকার বুখারি বলেন, সেনাবাহিনীর এই বক্তব্য ‘রাগের বহিঃপ্রকাশ’, যা খানের ওপর কঠোর দমন-পীড়নের ভূমিকা রাখবে। তিনি দাবি করেন, খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ বন্ধ করে আরও চাপ তৈরির প্রস্তুতি চলছে।
সেনাবাহিনীর অভিযোগ: বিদেশি প্রচারযন্ত্র সক্রিয়
সংবাদ সম্মেলনে চৌধুরী খানের পোস্ট দেখিয়ে বলেন, আফগান ও ভারতীয় গণমাধ্যম তার কথাকে ‘বাড়িয়ে প্রচার’ করছে। তার ভাষায়, ‘একজন মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষের অসার অভিযোগ’ ভিত্তিহীন এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে করা।

সেনাবাহিনীর নতুন কাঠামো ও ইমরান খানের অবস্থান
সর্বশেষ উত্তেজনা এমন সময়ে দেখা দিল যখন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সেনাপ্রধান মুনিরকে নবগঠিত ডিফেন্স ফোর্সেস প্রধান হিসেবে উন্নীত করার অনুমোদন দিয়েছেন। খান ২০২৩ সালের দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি হয়ে আছেন, এবং আরও বহু মামলার মুখোমুখি।
সেনাবাহিনী দাবি করছে, ২০২৩ সালের ৯ মে সামরিক স্থাপনায় হামলায় ইমরান খানের ভূমিকা ছিল। খান অবশ্য এই অভিযোগে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপট
খান ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন। তার দল পিটিআই এখনো দাবি করে ২০২৪ সালের নির্বাচন জালিয়াতিপূর্ণ ছিল। সেনাবাহিনী বলছে, খানের বক্তব্য জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং বিদেশি স্বার্থের সঙ্গে ‘গভীর যোগাযোগে’ পরিচালিত।

সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















