নিউইয়র্কের বিখ্যাত অ্যাপারচার ফাউন্ডেশন এবার তাদের বাৎসরিক গালায় সম্মান জানাল মাত্র ৩০ বছর বয়সে বিশ্ব ফটোগ্রাফিতে আলোড়ন তোলা টাইলার মিচেলকে। দীর্ঘ ক্যারিয়ারের পর শিল্পীরা সাধারণত এ স্বীকৃতি পান, কিন্তু মিচেল অল্প সময়েই তৈরি করেছেন এক বিরল অবস্থান।
গ্লোবাল ফটোগ্রাফিতে মিটিওরিক রাইজ
২০১৮ সালে ভোগ–এর ১২৬ বছরের ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ কভার ফটোগ্রাফার হন মিচেল। সেই সংখ্যায় তিনি বিয়ন্সেকে ফুলেল হেডড্রেসে চিত্রায়িত করেন। এরপর তার ক্যামেরায় উঠে আসে কমলা হ্যারিসসহ আরও বহু বৈশ্বিক ব্যক্তিত্ব। এলটন জন ও ডেভিড ফার্নিশ তার কাজ সংগ্রহে এনেছেন; লন্ডনের ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজিয়ামেও প্রদর্শিত হয়েছে তার ছবি।
রেকর্ডমূল্যে বিক্রি ও আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী
অক্টোবরে তার “রিভারসাইড সিন ফ্রম ড্রিমিং ইন রিয়েল টাইম” ছবিটি নিলামে ৫৪,১৮০ ডলারে বিক্রি হয়েছে—প্রাক্কলনের দ্বিগুণ। বর্তমানে প্যারিসের মেজঁ ইউরোপেয়েন দ্য লা ফটোগ্রাফি–তে চলছে তার ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী “উইশ দিস ওয়াজ রিয়েল”, সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে সমনামিক মনোগ্রাফ।
গাগোসিয়ান গ্যালারি ২০২৪ সাল থেকে তাকে প্রতিনিধিত্ব করছে—এবং তাদের মতে তিনি নিঃসন্দেহে “তার প্রজন্মের শীর্ষ শিল্পী”।
শৈশব থেকে ভিজ্যুয়াল গল্পের জগতে
১৯৯৫ সালে জর্জিয়ার অ্যালবানি শহরে জন্ম মিচেলের। কিশোর বয়সে স্কেটবোর্ডিংয়ের ভিডিও বানানো থেকে শুরু হলেও নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন প্রোগ্রাম–এ পড়ার সময় তিনি বুঝতে পারেন—ফটোগ্রাফিই তার গল্প বলার সবচেয়ে দ্রুত ও শক্তিশালী মাধ্যম।

গর্ডন পার্কস, রয় ডিকেরাভা ও ক্যারি মে উইমসের কাজ তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। ২০ বছর বয়সে কিউবা সফর ছিল তার “ভিজ্যুয়াল অ্যাওয়েকেনিং”, যেখানে তিনি নিজের স্টাইল ও একটি শক্তিশালী পোর্টফোলিও গড়ে তুলতে সক্ষম হন।
রং, টেক্সটাইল ও স্বপ্নময় নান্দনিকতা
মিচেলের ছবিতে রং থাকে তীব্র ও জীবন্ত—যা সোটাবির ছবি বিভাগের প্রধান এমিলি বিয়ারম্যান “হাইপার-স্যাচুরেটেড” বলে বর্ণনা করেন। কাপড়, জাল, চাদর—বিভিন্ন টেক্সটাইল তার ছবিতে গভীরতা যোগ করে।
বিয়ন্সের কভার শুটেও ব্যবহৃত হয়েছিল একটি সাধারণ কটন শিট, ঝুলছিল কেবল কাপড় শুকানোর দড়িতে।
তার ছবিতে মানুষ থাকে স্বস্তিতে, স্বতঃস্ফূর্ত মুহূর্তে—যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ চরিত্রগুলো যেন এক “ব্ল্যাক ইউটোপিয়া”র অংশ।
ফ্যাশন, আর্ট ও অ্যাবস্ট্রাকশন এর মাঝের সেতু
মিচেলের লক্ষ্য—ফটোগ্রাফির প্রচলিত সীমা ভেঙে ফেলা। তার কথায়, তিনি চিত্রায়ণে “আর্ট, ফ্যাশন, পোর্ট্রেট, অ্যাবস্ট্রাকশন—এসবের মধ্যে নরম স্রোতের মতো স্লিপেজ” খুঁজে বেড়ান। এবং শেষ পর্যন্ত দর্শকদের তিনি আহ্বান করেন—“দেখতে, অনুভব করতে, এবং বোঝার চেষ্টা করতে।”
Sarakhon Report 



















