আগে আডভেন্ট ক্যালেন্ডার মানেই ছিল সাধারণ কাগজের দরজা খুলে বাইবেলের বাণী দেখা। এখন সেই ক্যালেন্ডার বদলে গেছে রঙিন, বিলাসী আর নানা রকম চমকে ভরা এক উৎসবে—শিশু, বড়, বাবা-মা, এমনকি পোষা প্রাণী ও বাগানের পাখির জন্যও মিলছে আলাদা সংস্করণ।
আডভেন্ট ক্যালেন্ডারের বদলে যাওয়া রূপ
আগে ডিসেম্বরজুড়ে প্রতিদিন ছোট্ট দরজা খুললেই দেখা মিলত ছবি বা ধর্মীয় টেক্সট। কখনও একটু ভাগ্য ভালো হলে থাকত চকোলেট।
এখন বাজারে পাওয়া যায় আরো অনেক ব্যতিক্রম—
পোর্ট ওয়াইন, পর্ক স্ক্র্যাচিংস, প্রোটিন পাউডার, ওয়ার্কআউট গিয়ার, এমনকি স্লাইম-ভর্তি ক্যালেন্ডার।
বিলাসের দিক দিয়ে আরও বিস্ময়কর—১২ দিনের ক্যাভিয়ার কাউন্টডাউন, যার দাম প্রায় এক হাজার ডলার সমান।
কেন এত জনপ্রিয়?
ব্রিটেনে ইপসস (Ipsos)–এর এক জরিপ বলছে, ৭২ শতাংশ মানুষ এখন আডভেন্ট ক্যালেন্ডার কিনে থাকেন।
আমেরিকায় বোন মামা (Bonne Maman)–এর জ্যাম ক্যালেন্ডার প্রতিবছরই মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায়। ২০১৭ থেকে উৎপাদন চার গুণ বাড়িয়েও চাহিদা সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।
বিউটির দুনিয়াতেও ভীষণ জনপ্রিয়—স্পেস এনকে (Space NK)–র ক্যালেন্ডার এ বছর কয়েক সপ্তাহেই শেষ।

ছোট ছোট আনন্দের মনোবিজ্ঞান
১৯শ শতকের জার্মান প্রোটেস্ট্যান্টদের প্রার্থনা থেকে শুরু হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে।
আজ এটি জনপ্রিয় হওয়ার মূল কারণ হলো আমাদের “ছোট করে একটু আনন্দ” পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা।
বিখ্যাত ব্যবসায়ী লিওনার্ড লডার একে বলেছিলেন “লিপস্টিক ইফেক্ট”—অর্থনৈতিক চাপের সময় মানুষ ছোট, সস্তা কিন্তু আনন্দদায়ক কিছু কিনতে চায়।
সোশ্যাল মিডিয়ার উন্মাদনা
লিবার্টি (Liberty) তাদের ক্যালেন্ডারে এবার দিয়েছে বিশেষ সংস্করণের ব্যাগ। এই ক্যালেন্ডার ঘিরে লন্ডনে আয়োজন করা হয় ঝলমলে অনুষ্ঠান।
এ ধরনের সীমিত পণ্যের কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় আগ্রহ আকাশছোঁয়া।
টিকটকে (TikTok) #AdventCalendar ট্যাগে আছে ১৩ লাখের বেশি ভিডিও।

ব্র্যান্ডের লাভ আর ভবিষ্যতের ক্যালেন্ডার
ব্র্যান্ডগুলো নতুন ক্রেতা আকর্ষণ করতে আডভেন্ট ক্যালেন্ডারকে কাজে লাগাচ্ছে দারুণভাবে।
ক্রিসমাস ছাড়িয়ে এখন বাজারে এসেছে হ্যালোইন আডভেন্ট ক্যালেন্ডার।
আডভেন্ট ক্যালেন্ডার শপের (Advent Calendar Shop) পরিচালক কেট টার্ভি বিশ্বাস করেন—
আগামী দিনগুলোয় মাদার্স ডে, এমনকি জন্মদিনের আগেও দেখা যেতে পারে এ ধরনের কাউন্টডাউন ক্যালেন্ডার।
সারা বছর একটু উৎসবের অনুভূতি—কে-ই বা চাইবে না?
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















