সীমান্ত গ্রাম ফাঁকা, আবারও আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই
থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার বিতর্কিত সীমান্ত এলাকা তা ক্রাবেই মন্দিরঘেঁষা অঞ্চলে নতুন করে গোলাগুলি শুরু হওয়ায় দুই দেশের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো দ্রুত ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। সা কেও ও বুড়িরাম প্রদেশে হাজারো মানুষকে স্কুল ও কমিউনিটি সেন্টারে গড়ে তোলা জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে কাম্বোডিয়ার সামরওং শহরের কাছাকাছি গ্রামগুলোর বাসিন্দারা আবারও ট্রাক্টর ও মোটরসাইকেলে গৃহস্থালি সামগ্রী তুলে নিরাপদ স্থানে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার গ্রামেই থেকে গেছেন, কারণ বাড়ি-ঘর ও গবাদিপশু পাহারা না দিলে লুটপাটের শঙ্কা রয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির পর কয়েক মাস সীমান্ত অপেক্ষাকৃত শান্ত থাকলেও এই সহিংসতা সেই সমঝোতার টেকসই হওয়া নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। ব্যাংকক ও ফনম পেন উভয়ই একে অপরকে যুদ্ধবিরতি ভাঙার অভিযোগ তুলছে, সঙ্গে বেসামরিক এলাকায় গোলাবর্ষণের কথাও বলছে। কিন্তু দুই দেশের সীমান্তবাসীর কাছে এই সংঘাত মূলত জাতীয় গৌরবের নয়; বরং এর মানে হলো আবারও জমি, ফসল, স্কুল ও আয়ের পথ হারিয়ে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া।
আবারও ঘরছাড়া সীমান্তবাসী
থাইল্যান্ডের সীমান্ত গ্রামগুলোতে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও গ্রামপ্রধানরা টায়ার ও বালুর বস্তা দিয়ে তৈরি অস্থায়ী বাঙ্কারে পাহারা দিচ্ছেন, আর বেশির ভাগ পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের আশঙ্কা, গোলাগুলি দীর্ঘস্থায়ী হলে এসব কেন্দ্রই অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরে পরিণত হবে; ফলে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসাসেবার ওপর চাপ ভয়াবহভাবে বেড়ে যাবে। অনেক শিশু আবারও স্কুলের ক্লাসরুমের বদলে আশ্রয়কেন্দ্রের ঘরে দিন কাটাচ্ছে, পড়াশোনাও থমকে গেছে।
কাম্বোডিয়ার পাশে বসবাসকারী অনেকে আগের সংঘাতের স্মৃতি থেকে আগেভাগেই ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছিলেন। গুলির শব্দ বাড়তেই তারা ভেতরের জেলাগুলোতে সরে যাচ্ছেন, যেখানে গির্জা, মসজিদ ও স্থানীয় কমিউনিটি নেটওয়ার্কের সহায়তায় খাবার ও অস্থায়ী আশ্রয় মিলছে। সহায়তাকর্মীরা বলছেন, নতুন করে বাস্তুচ্যুতি সীমান্ত এলাকার দারিদ্র্য ও জমি-বিতর্ক আরও জটিল করে তুলবে, কারণ এখানে অনেকেরই জমির বৈধ কাগজপত্র নেই। দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার জন্য এই সংঘাত আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদি সীমান্তবিতর্ককে সময়মতো রাজনৈতিক সমাধানে না নিলে তা দ্রুতই পুরো অঞ্চলের বাণিজ্য ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















