হাইব্রিড কাজ, অনলাইন মিটিং আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিস্তারে অফিসের পরিবেশ বদলে গেছে। ফলে কর্মক্ষেত্রে আচরণবিধিও বদলাতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভদ্রতা কখনো পুরানো হয় না, তবে সময়ের সঙ্গে তা নতুনভাবে শিখতে হয়। বিশিষ্ট শিষ্টাচার বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল পোস্ট সেনিং জানিয়েছেন, বর্তমান কর্মজগতে সফল হতে হলে সহকর্মীদের প্রতি সম্মান ও যত্নশীল হওয়াই মূল নিয়ম।
হাইব্রিড কাজের যুগে নতুন শিষ্টাচারের প্রয়োজন
মহামারির পর কর্মজীবন বদলে গেছে। অফিসে নিয়মিত উপস্থিতি কমে এসেছে, ভিডিও কল বেড়েছে। নতুন প্রজন্মের কর্মীরা প্রযুক্তিনির্ভর কাজের ধরনে অভ্যস্ত। ফলে কে কিভাবে আচরণ করবে, কোন পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে—এসব নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবকিছুর কেন্দ্রে রয়েছে অন্যের প্রতি শালীনতা ও সম্মান দেখানো।
মিটিংয়ে ফোন বেজে উঠলে কী করবেন
অফিস মিটিং বা অনলাইন বৈঠকের সময় ফোন বাজলে সেটি নীরব রেখে মিটিং শেষে দেখা উচিত। জরুরি মনে হলে দুঃখ প্রকাশ করে সাময়িকভাবে বের হওয়াই শালীনতা।
অনলাইন মিটিংয়ে ক্যামেরা চালু রাখা কি বাধ্যতামূলক
বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইন মিটিংয়ে ক্যামেরা চালু রাখা শিষ্টাচারের অংশ। মুখ দেখা গেলে যোগাযোগ আরও স্বাভাবিক হয় এবং সহকর্মীদের প্রতি সম্মান প্রকাশ পায়।

শিষ্টাচারের কঠিন মুহূর্ত: করমর্দনে বিব্রত পরিস্থিতি
কারও সঙ্গে পরিচয়ের সময় হাত মেলানো নিয়ম, এমনকি তার হাত নোংরা দেখলেও। পরিস্থিতি সামাল দিতে পরে হাত ধুয়ে নেওয়াই শ্রেয়। হাত মেলানো এড়িয়ে যাওয়া অসম্মানজনক হতে পারে।
ইমেইলে ইমোজি কি গ্রহণযোগ্য
ইমেইলে ইমোজি ব্যবহার ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে। ঘনিষ্ঠ সহকর্মী হলে ব্যবহার করা যায়, তবে অধিকাংশ আনুষ্ঠানিক ইমেইলে ইমোজি ব্যবহারকে অপরিপক্ব মনে হতে পারে।
ড্রেস কোড না থাকলেও পোশাকে সচেতনতা জরুরি
অফিসে পোশাক সম্পর্কে কঠোর নিয়ম না থাকলেও অভিজ্ঞ সহকর্মী বা মানবসম্পদ বিভাগ থেকে পরামর্শ নেওয়াই উত্তম। পোশাক অফিসের পরিবেশের সঙ্গে মানানসই হওয়া জরুরি।
বাড়ি থেকে কাজেও পেশাদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ
অনলাইন মিটিংয়ে অংশ নেওয়ার সময় ন্যূনতম পেশাদারিত্ব বজায় রাখা উচিত। টি-শার্ট পরে থাকা ঠিক আছে, তবে মিটিংয়ে যোগ দেওয়ার সময় পরিপাটি থাকা সম্মানজনক।
মিটিংয়ের সময় ক্যালেন্ডার লিংক পাঠানো কি উপযুক্ত
প্রথমবার যোগাযোগের সময় নিজের ক্যালেন্ডার লিংক পাঠানো অশোভন মনে হতে পারে। বরং নিজের সুবিধাজনক সময়গুলো জানিয়ে অপর পক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া উচিত।

অফিসে অনলাইন কল নেওয়ার সময় কী আচরণ শোভন
খোলা অফিসে ভিডিও কল বা ফোন রিসিভ করলে অন্যরা বিরক্ত হতে পারে। তাই সম্ভব হলে ব্যক্তিগত স্থানে গিয়ে কল করা শালীনতা।
নেটওয়ার্কিং ইভেন্টে পানীয় হাতে রাখার নিয়ম
হ্যান্ডশেক করতে সুবিধা হয় এমনভাবে পানীয়টি বিপরীত হাতে রাখা উচিত, যাতে করমর্দনের সময় হাত ভেজা না থাকে।
সহকর্মীর ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে কীভাবে কথা বলবেন
কারও দেহগন্ধজনিত সমস্যা থাকলে সবার সামনে নয়, ব্যক্তিগতভাবে, সম্মান রেখে জানানোই উত্তম। এতে তাকে বিব্রত না করে সাহায্য করা যায়।
কর্মজীবনের পরিবেশ বদলালেও মূল নিয়ম একই—অন্যকে সম্মান করা, পেশাদার থাকা এবং যোগাযোগে শালীনতা বজায় রাখা। প্রযুক্তি যতই আধুনিক হোক, মানবিক আচরণই শেষ কথা।
#কর্মক্ষেত্র #অফিসশিষ্টাচার #হাইব্রিডকাজ #অনলাইনমিটিং #অফিসসংস্কৃতি #ব্যবসায়শিষ্টাচার #পেশাদারিত্ব #কাজেরনিয়ম #দক্ষতা #অফিসট্রেন্ড
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















