ওসলোতে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেত্রী মারিয়া করিনা মাচাদো বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে ভেনেজুয়েলার উপকূল থেকে একটি তেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করেছে, তা মাদুরো সরকারের আর্থিক রুট চাপে ফেলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বড় ভূমিকা রাখছে। তার ভাষায়, মাদুরো শাসন এখন বুঝতে শুরু করেছে যে বিশ্ব তাদের কর্মকাণ্ড গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
নরওয়েতে একদিন আগে দেশ থেকে তার সাহসী পালিয়ে আসার ঘটনার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মাচাদো বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথমবারের মতো মাদুরো সরকারকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে তাদের দমন-পীড়ন আর শাস্তিহীন থাকবে না। তিনি মনে করেন, এসব পদক্ষেপেই সরকার দুর্বল হয়ে পড়েছে।
পরিস্থিতি ও মার্কিন পদক্ষেপ
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর জানায়, এই ট্যাংকার জব্দের লক্ষ্য ছিল উপকূলে অপেক্ষায় থাকা অন্যান্য জাহাজকেও সতর্ক করা। মাচাদো বলেন, মাদুরো সরকার এতদিন মনে করত সবই করতে পারে—গুম, নির্যাতন, তরুণীদের ওপর যৌন সহিংসতা। কিন্তু এখন তারা বুঝতে পারছে যে বিশ্ব তাকিয়ে আছে।
তার নোবেল জয় উদযাপন করতে এই সপ্তাহে শত শত ভেনেজুয়েলান ওসলোতে জড়ো হয়। গত বছরের নির্বাচনে যাকে তিনি সমর্থন করেছিলেন, সেই প্রার্থীর বিপক্ষে কারচুপির অভিযোগের পর তাকে ভোটে অংশ নিতে নিষিদ্ধ করা হয়। প্রায় এক বছর আত্মগোপনে থাকার পর বুধবার তিনি প্রথমবার জনসমক্ষে আসেন।
পালিয়ে আসা ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা
মাচাদো বলেন, তিনি গোপনেই দেশ ছাড়তে পেরেছেন, কারণ নিরাপত্তা বাহিনী জানত না তিনি কোথায় ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে কিছু সহায়তা তিনি পেয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন, তবে বিস্তারিত দেননি। সংশ্লিষ্টদের মতে, পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে ট্রাম্প প্রশাসন অবগত ছিল, যদিও সম্পৃক্ততার মাত্রা স্পষ্ট নয়।
তিনি বলেন, এটি ছিল তার জীবনের অন্যতম জরুরি সিদ্ধান্ত এবং তাকে নোবেল অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতেই হতো। ঝুঁকি বেড়েছে জানলেও তিনি দেশে ফিরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
ভেনেজুয়েলায় হস্তক্ষেপ বিতর্ক
মার্কিন আকাশ হামলা ও ট্যাংকার জব্দকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের গুঞ্জন বাড়লেও মাচাদো এ প্রশ্ন এড়িয়ে যান। বরং তিনি দাবি করেন, ভেনেজুয়েলাই দীর্ঘদিন ধরে রুশ ও ইরানি এজেন্ট, মধ্যপ্রাচ্যের সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং মাদকচক্রের আক্রমণের শিকার।
তার মতে, মাদুরো প্রশাসনের আর্থিক প্রবাহ চেপে ধরা জরুরি, কারণ কালোবাজারি তেলের অর্থ জনগণের খাদ্য, শিক্ষক বা হাসপাতালের জন্য নয়; বরং তা ব্যবহৃত হয় দমন ও নিপীড়নে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















