নয় বছরের অপেক্ষা শেষে পর্দায় ফিরেই জুটোপিয়ার শিয়াল নিক আর খরগোশ জুডি আবারও দর্শকের হৃদয় দখল করেছে। নতুন ছবির মুক্তির পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাগৃহে ছুটির সপ্তাহান্তে আয় আকাশচুম্বী, আর অনলাইনে উচ্ছ্বাস আরও তীব্র। এই উচ্ছ্বাস শুধু শিশুদের নয়, বরং এক বিস্তৃত ও অদ্ভুত ফ্যানডমের, যারা এই দুই চরিত্রকে ঘিরে বছরের পর বছর কথোপকথন বাঁচিয়ে রেখেছে।
নয় বছরের অপেক্ষা, কথোপকথনের আগুন
প্রথম ছবির পর থেকে ভক্তদের আলোচনা থামেনি। সামাজিক মাধ্যমে নিককে নিয়ে আকর্ষণের কথা প্রকাশ্যে বলেছিলেন এক তরুণ কনটেন্ট নির্মাতা। শুরুতে কৌতুক আর বিতর্ক মিলিয়ে বিষয়টি ভাইরাল হলেও সময়ের সঙ্গে তা রূপ নেয় সাংস্কৃতিক আলোচনায়। নতুন ছবির ঝলক প্রকাশের পর সেই উচ্ছ্বাস আরও বেড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত নির্মাতা প্রতিষ্ঠানও বিষয়টি লক্ষ্য করে প্রিমিয়ারে আমন্ত্রণ জানায়, লাল গালিচায় সাক্ষাৎকারের সুযোগ দেয়। ভক্তদের কাছে এটি যেন স্বীকৃতির মুহূর্ত।
গল্পের ভেতরে নতুন ইঙ্গিত
জুটোপিয়ার শহরে শিকারি আর শিকার একসঙ্গে থাকার গল্পে এবার যোগ হয়েছে নতুন রহস্য। পুলিশ দলে অংশীদার নিক ও জুডি এক ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পড়ে, যেখানে সরীসৃপদের শহরে নিষেধাজ্ঞা বড় প্রশ্ন হয়ে ওঠে। গল্পের আবেগী কেন্দ্রে আছে এই দুই চরিত্রের পারস্পরিক ভরসা, বোঝাপড়া আর নীরব টান। চুম্বন নেই, তবু দৃষ্টির ভাষা আর সুরের ব্যবহার ভক্তদের কল্পনাকে উসকে দেয়।

অনলাইনে ফ্যানডমের বিস্তার
ছবির বাইরে অনলাইনে গড়ে উঠেছে বিশাল জগৎ। চরিত্রভিত্তিক ভিডিও, শিল্পকর্ম আর খবরের আলাদা প্ল্যাটফর্মে জুটোপিয়ার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। কখনও জুডির পোশাক নিয়ে তারকা সমালোচনার আদলে আলোচনা, কখনও নিককে নিয়ে মজার ভিডিও। এদের একাংশ পশুপ্রেমী সাজপোশাকের সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হলেও সবাই সেখান থেকে আসেন না। তবু সবাই মিলে একটি আলাদা ভাষা তৈরি করেছে।
ফ্যান নির্মিত গল্পের প্রভাব
ভক্তদের ভালোবাসা শুধু আলোচনা নয়, সৃষ্টি। এক তরুণ শিল্পী কিশোর বয়সে শুরু করে প্রায় দুই ঘণ্টার একটি অনানুষ্ঠানিক চলচ্চিত্র বানিয়েছেন, যা অনলাইনে লাখো মানুষ দেখেছে। আরেকটি ওয়েব কমিক একসময় এতটাই আলোচনায় আসে যে মূল জগতের বাইরে পরিচিতি পায়। এসব কাজ দেখিয়ে দেয়, ফ্যান মিডিয়া কীভাবে চরিত্রগুলোর ভাবমূর্তি গড়ে দেয় এবং মূল নির্মাণকে প্রভাবিত করে।

উইল্ডহপসের মোহ
অনলাইনে নিক আর জুডিকে একসঙ্গে ডাকা হয় এক নামেই। যদিও ছবিতে তাদের বন্ধুত্বের বাইরে কিছু স্পষ্ট নয়, তবু সম্ভাব্য আন্তঃপ্রজাতি সম্পর্কের ধারণাই ফ্যানডমের কেন্দ্রে। নতুন ছবির কিছু দৃশ্য দেখে অনেকেই মনে করছেন, নির্মাতারা ভক্তদের ইঙ্গিত বুঝে সম্পর্কটিকে আরও গভীর করেছেন।
নির্মাতা আর ভক্তের সহাবস্থান
নির্মাতারা সরাসরি কিছু না বললেও ইঙ্গিত স্পষ্ট। সামাজিক মাধ্যমে নিককে নিয়ে অফিসিয়াল ভিডিও প্রকাশ, গল্পে আবেগের পরিমাণ বাড়ানো—সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে ভক্তদের কৌতূহলকে ধীরে ধীরে ক্যাননের দিকে টেনে আনা হচ্ছে। এই সহাবস্থানই হয়তো নতুন ছবির সাফল্যের বড় কারণ।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















