টেলিভিশন আর সিনেমা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে নতুন প্রজন্ম। সেই শূন্যতা পূরণ করছে ইউটিউবভিত্তিক গল্পনির্ভর ভিডিও আর স্বল্পদৈর্ঘ্যের সিরিজ। আলফা প্রজন্মের দর্শকদের টানতে যাঁরা নতুন ভাষা তৈরি করছেন, তাঁদের অন্যতম অ্যালান চিকিন চৌ। তাঁর তৈরি সিরিজ ‘অ্যালানের ইউনিভার্স’ এখন কোটি কোটি শিশুকিশোরের দৈনন্দিন বিনোদনের অংশ হয়ে উঠেছে
শুরুর কয়েক সেকেন্ডেই দর্শক বাঁধা
একটি ভিডিওর প্রথম কয়েক সেকেন্ডেই সিদ্ধান্ত হয়ে যায় দর্শক থাকবে কি না। এই বাস্তবতা ভালো করেই বোঝেন অ্যালান। তাঁর জনপ্রিয় পর্ব ‘আমার প্রেমিক কি নেকড়েমানব’ শুরু হতেই শ্রেণিকক্ষে উড়তে থাকে কাগজের বিমান, হঠাৎই হাজির নেকড়েমানব। আতঙ্ক, চমক আর আবেগ মিলিয়ে প্রথম মুহূর্তেই দর্শক আটকে যায়। এই কয়েক সেকেন্ডের দৃশ্য নিখুঁত করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় দেন তিনি ও তাঁর দল।

গল্প, আবেগ আর গতি
শুধু চমক নয়, গল্পের শক্তিতেই আলফা প্রজন্মকে ধরে রাখার কৌশল তৈরি করেছেন অ্যালান। তাঁর ভিডিওতে আবেগ, সম্পর্ক আর পারিবারিক বার্তা থাকে সহজ ভাষায়। সংলাপ কম, ভিজ্যুয়াল বেশি হওয়ায় ভাষার সীমা পেরিয়ে ভিডিও পৌঁছে যায় বিশ্বের নানা প্রান্তে। ছোট ভিডিও দিয়ে শুরু হলেও দর্শকের চাহিদা বুঝে দীর্ঘ পর্বে যান তিনি।
ইউটিউবেই তৈরি হচ্ছে নতুন টেলিভিশন
অ্যালানের সিরিজ অনেকটা পুরনো কিশোর ধারাবাহিকের মতো, তবে মোবাইল আর টেলিভিশনের পর্দার উপযোগী করে তৈরি। ইউটিউব এখন কেবল ভিডিও প্ল্যাটফর্ম নয়, বরং নতুন ধরনের স্ট্রিমিং জগৎ। দীর্ঘ ভিডিও মানুষ এখন বড় পর্দায় দেখছে, ফলে নির্মাতাদের ভাবনাও বদলাতে হচ্ছে। প্রতিটি পর্বে উত্তেজনা ধরে রাখা এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

স্টুডিও থেকে ব্র্যান্ডে রূপান্তর
ইউটিউব সাফল্যের পর অ্যালান এগোচ্ছেন বড় পরিসরে। স্টুডিও, অভিনয়শিল্পী, প্রযোজনা দল নিয়ে তাঁর কাজ এখন পূর্ণাঙ্গ বিনোদন প্রতিষ্ঠানের মতো। বিজ্ঞাপন, পণ্য বিক্রি আর ব্র্যান্ড সহযোগিতার মাধ্যমে আয় বাড়ছে। লক্ষ্য একটাই, এই অনলাইন সিরিজকে বড় বিনোদন ফ্র্যাঞ্চাইজিতে রূপ দেওয়া।
ভবিষ্যতের বিনোদনের দিকনির্দেশ
বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যালানের মতো নির্মাতারাই ঠিক করে দিচ্ছেন ভবিষ্যতের বিনোদনের ভাষা। দর্শকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ, দ্রুত প্রতিক্রিয়া আর গল্পভিত্তিক নির্মাণ—এই তিন শক্তিতেই বদলে যাচ্ছে মিডিয়ার সংজ্ঞা। টেলিভিশন আর সিনেমার বাইরে গড়ে উঠছে এক নতুন জগৎ, যেখানে আলফা প্রজন্মই শেষ কথা বলছে।



সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















