জুলাই ঐক্যের ডাকে রাজধানীতে ঘোষিত ‘মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাই কমিশন’ কর্মসূচি বুধবার বিকালে বাড্ডায় আটকে দেয় পুলিশ। ভারতীয় হাই কমিশনের দিকে অগ্রসর হওয়া এই মিছিল উত্তর বাড্ডার হোসেন মার্কেটের সামনে থামিয়ে দেওয়া হয়।
বাড্ডায় আটকে দেওয়া মিছিল
রামপুরা ব্রিজ এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে এগোনোর সময় উত্তর বাড্ডায় পুলিশ বাধা দেয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান জানান, আন্দোলনকারীদের হোসেন মার্কেটের সামনে আটকে রাখা হয়। সেখানে তারা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। বক্তব্য শেষ করে বিকাল পাঁচটার কিছু আগে তারা এলাকা ত্যাগ করেন।
কর্মসূচির পেছনের দাবি
জুলাই অভ্যুত্থানের একাধিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত মোর্চা ‘জুলাই ঐক্য’ এই কর্মসূচির ডাক দেয়। তাদের দাবি ছিল, শেখ হাসিনাসহ জুলাই গণহত্যার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দেশে ফিরিয়ে আনা এবং ভারতীয় প্রক্সি রাজনৈতিক দল ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চলমান ষড়যন্ত্রের অভিযোগের প্রতিবাদ।
আইভ্যাক সাময়িক বন্ধ
এ পরিস্থিতির মধ্যে নিরাপত্তা বিবেচনায় ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখা হয়। আইভ্যাকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে দুপুর দুইটা থেকে সেদিনের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। যাদের ওই দিনের ভিসা আবেদন জমার সময় নির্ধারিত ছিল, তাদের পরবর্তী তারিখে নতুন স্লট দেওয়ার কথা জানানো হয়।
দিল্লির প্রতিক্রিয়া
এই কর্মসূচির প্রেক্ষাপটে দিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনারকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকায় ভারতীয় মিশনকে ঘিরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি তৈরির ঘোষণার বিষয়টিও নজরে আনা হয়েছে।
ভারতের অবস্থান
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে উগ্রবাদী শক্তিগুলো যে মিথ্যা বয়ান তৈরির চেষ্টা করছে, ভারত তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে। একই সঙ্গে তারা অভিযোগ করে, এসব ঘটনার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বিস্তারিত তদন্ত করেনি এবং অর্থবহ কোনো প্রমাণও ভারতের কাছে উপস্থাপন করা হয়নি।
পাল্টা কূটনৈতিক তৎপরতা
এর আগে সোমবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। ওইদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পুনরায় জানায় বাংলাদেশ।
জুলাই অভ্যুত্থান দমনের চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই তারা ভারতে অবস্থান করছেন।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















