০৩:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মব ভায়োলেন্সে সন্দেহভাজন চোরের মৃত্যু, চারজন আটক দুটি গণমাধ্যমে হামলা ও মবতন্ত্রের উত্থান জাতির জন্য লজ্জা: সালাহউদ্দিন ঘরেই রক্তাক্ত মৃত্যু, গলা কাটা অবস্থায় কৃষকের মরদেহ উদ্ধার এআই উন্মাদনায় বাজারের ভেতরের সতর্ক সংকেত, শর্ট বিক্রেতারা কোথায় বাজি ধরছেন ট্রাম্প অনিশ্চয়তায় এশিয়া: দক্ষিণ কোরিয়ার চোখে নিঃসঙ্গ ও কঠিন ভবিষ্যৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে হাতের কাজের ভবিষ্যৎ নিরাপদ মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে দৌড়—এল ফাশার দখলের পর সুদানে গণপলায়ন এশিয়াকে বেঁধে রাখা কালো স্রোত: কুরোশিও যেভাবে ইতিহাস, সংস্কৃতি আর জলবায়ু গড়ে তুলেছে ইউরোপে খাবারের যুদ্ধ: কার্বোনারার প্লেট ঘিরে নতুন জাতীয়তাবাদ জেন অস্টেনের উপন্যাসে অর্থনীতির নীরব ভাষা: সমাজ, প্রেম আর টাকার বাস্তব হিসাব

এআই যুগে জাদুর নতুন খেলা, বিস্ময় ধরে রাখার লড়াই

এক সময় বিস্ময় তৈরি করাই ছিল জাদুর মূল শক্তি। কিন্তু আজকের ডিজিটাল দুনিয়ায়, যেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবকিছু মুহূর্তে ফাঁস হয়ে যায়, সেখানে সেই বিস্ময় টিকিয়ে রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবু জাদু হারিয়ে যায়নি। বরং কৌশল বদলে নতুন সময়ের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন জাদুকররা।

হুডিনির উত্তরাধিকার

বিশ শতকের শুরুতে হ্যারি হুডিনি ছিলেন জাদুর সবচেয়ে আলোচিত নাম। সহকর্মীদের সমালোচনা সত্ত্বেও তিনি দর্শকের মনে ভয় ও কৌতূহল একসঙ্গে জাগাতে জানতেন। পুলিশের থানা কিংবা সংবাদপত্রের অফিসকে মঞ্চ বানিয়ে তিনি জাদুকে পরিণত করেছিলেন বড় আয়োজনের শিল্পে। তার সাফল্যের মূল ছিল রহস্যকে ব্যবসায়িক বুদ্ধির সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া।

সামাজিক মাধ্যমের চাপ

এক শতক পর সেই জাদুকরদেরই নতুন সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। স্বল্প মনোযোগ, অগণিত প্রতিযোগী আর টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে কৌশল ফাঁস হওয়ার ঝুঁকি জাদুকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছে। অনেক ভিডিওতে পুরো কৌশল দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা একদিকে কৌতূহল নষ্ট করছে, আবার অন্যদিকে বিপুল দর্শকও টানছে।

গোপন ফাঁসের নতুন শিল্প

কিছু জাদুকর এই ফাঁসকেই নতুন শিল্প হিসেবে নিয়েছেন। তারা বলেন, কখনো কখনো কৌশলের রহস্য জানাটাই দর্শকের কাছে বেশি আকর্ষণীয়। এমন ভিডিও কোটি কোটি বার দেখা হচ্ছে, আর সেখান থেকেই আসছে বড় আয়ের পথ। তবে পুরনো ধারার অনেক শিল্পী মনে করেন, এতে জাদুর আসল আত্মা ক্ষয় হচ্ছে।

How magicians stay relevant in the age of AI | The Economist

মঞ্চে বিস্ময়ের লড়াই

মঞ্চভিত্তিক জাদু এখনো আলাদা গুরুত্ব ধরে রেখেছে। লাস ভেগাস বা লস অ্যাঞ্জেলেসের বিশেষ ক্লাবে মোবাইল নিষিদ্ধ করে দর্শকদের বাস্তব অভিজ্ঞতার মধ্যে টেনে নেওয়া হচ্ছে। এখানে রহস্যের আবহ, আলো, শব্দ আর সরাসরি উপস্থিতি মিলিয়ে এমন অনুভূতি তৈরি হয়, যা পর্দায় ধরা পড়ে না।

প্রযুক্তির সহায়তা

প্রযুক্তি একদিকে দর্শককে জাদুতে অনীহা তৈরি করলেও অন্যদিকে জাদুকরদের হাতেও দিয়েছে নতুন সরঞ্জাম। সেন্সর, গোপন যন্ত্র আর পর্দার ব্যবহার বড় মঞ্চকে ছোট খরচে সম্ভব করছে। এতে জাদু আরও দৃশ্যমান হলেও মূল চ্যালেঞ্জ থেকে যাচ্ছে, বিস্ময়ের সেই মুহূর্তটি তৈরি করা।

বিস্ময়ের প্রয়োজন

দর্শক আজ দ্রুত ফল চায়, চোখধাঁধানো দৃশ্য খোঁজে। তবু জাদুকররা বিশ্বাস করেন, জীবনের জটিলতায় মানুষ এখনো বিস্ময়ের জন্য অপেক্ষা করে। ছোট একটি কৌশল, সঠিক পরিবেশে, দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিকতায় হঠাৎ এক চমক এনে দিতে পারে। হুডিনির কথাই যেন আবার সত্যি হচ্ছে, বিস্ময় ছাড়া জীবন ফিকে।

#জাদু #এআই_যুগ #বিস্ময় #সামাজিকমাধ্যম #সংস্কৃতি #শিল্প

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মব ভায়োলেন্সে সন্দেহভাজন চোরের মৃত্যু, চারজন আটক

এআই যুগে জাদুর নতুন খেলা, বিস্ময় ধরে রাখার লড়াই

০২:১১:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

এক সময় বিস্ময় তৈরি করাই ছিল জাদুর মূল শক্তি। কিন্তু আজকের ডিজিটাল দুনিয়ায়, যেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবকিছু মুহূর্তে ফাঁস হয়ে যায়, সেখানে সেই বিস্ময় টিকিয়ে রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবু জাদু হারিয়ে যায়নি। বরং কৌশল বদলে নতুন সময়ের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন জাদুকররা।

হুডিনির উত্তরাধিকার

বিশ শতকের শুরুতে হ্যারি হুডিনি ছিলেন জাদুর সবচেয়ে আলোচিত নাম। সহকর্মীদের সমালোচনা সত্ত্বেও তিনি দর্শকের মনে ভয় ও কৌতূহল একসঙ্গে জাগাতে জানতেন। পুলিশের থানা কিংবা সংবাদপত্রের অফিসকে মঞ্চ বানিয়ে তিনি জাদুকে পরিণত করেছিলেন বড় আয়োজনের শিল্পে। তার সাফল্যের মূল ছিল রহস্যকে ব্যবসায়িক বুদ্ধির সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া।

সামাজিক মাধ্যমের চাপ

এক শতক পর সেই জাদুকরদেরই নতুন সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। স্বল্প মনোযোগ, অগণিত প্রতিযোগী আর টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে কৌশল ফাঁস হওয়ার ঝুঁকি জাদুকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছে। অনেক ভিডিওতে পুরো কৌশল দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা একদিকে কৌতূহল নষ্ট করছে, আবার অন্যদিকে বিপুল দর্শকও টানছে।

গোপন ফাঁসের নতুন শিল্প

কিছু জাদুকর এই ফাঁসকেই নতুন শিল্প হিসেবে নিয়েছেন। তারা বলেন, কখনো কখনো কৌশলের রহস্য জানাটাই দর্শকের কাছে বেশি আকর্ষণীয়। এমন ভিডিও কোটি কোটি বার দেখা হচ্ছে, আর সেখান থেকেই আসছে বড় আয়ের পথ। তবে পুরনো ধারার অনেক শিল্পী মনে করেন, এতে জাদুর আসল আত্মা ক্ষয় হচ্ছে।

How magicians stay relevant in the age of AI | The Economist

মঞ্চে বিস্ময়ের লড়াই

মঞ্চভিত্তিক জাদু এখনো আলাদা গুরুত্ব ধরে রেখেছে। লাস ভেগাস বা লস অ্যাঞ্জেলেসের বিশেষ ক্লাবে মোবাইল নিষিদ্ধ করে দর্শকদের বাস্তব অভিজ্ঞতার মধ্যে টেনে নেওয়া হচ্ছে। এখানে রহস্যের আবহ, আলো, শব্দ আর সরাসরি উপস্থিতি মিলিয়ে এমন অনুভূতি তৈরি হয়, যা পর্দায় ধরা পড়ে না।

প্রযুক্তির সহায়তা

প্রযুক্তি একদিকে দর্শককে জাদুতে অনীহা তৈরি করলেও অন্যদিকে জাদুকরদের হাতেও দিয়েছে নতুন সরঞ্জাম। সেন্সর, গোপন যন্ত্র আর পর্দার ব্যবহার বড় মঞ্চকে ছোট খরচে সম্ভব করছে। এতে জাদু আরও দৃশ্যমান হলেও মূল চ্যালেঞ্জ থেকে যাচ্ছে, বিস্ময়ের সেই মুহূর্তটি তৈরি করা।

বিস্ময়ের প্রয়োজন

দর্শক আজ দ্রুত ফল চায়, চোখধাঁধানো দৃশ্য খোঁজে। তবু জাদুকররা বিশ্বাস করেন, জীবনের জটিলতায় মানুষ এখনো বিস্ময়ের জন্য অপেক্ষা করে। ছোট একটি কৌশল, সঠিক পরিবেশে, দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিকতায় হঠাৎ এক চমক এনে দিতে পারে। হুডিনির কথাই যেন আবার সত্যি হচ্ছে, বিস্ময় ছাড়া জীবন ফিকে।

#জাদু #এআই_যুগ #বিস্ময় #সামাজিকমাধ্যম #সংস্কৃতি #শিল্প