সিডনির বন্ডি বিচে ভয়াবহ হামলার পর তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে অভিযুক্ত বাবা ও ছেলের ফিলিপাইন সফর। অস্ট্রেলীয় তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে তারা প্রায় এক মাস ফিলিপাইনে অবস্থান করেছিলেন। দক্ষিণ ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গিবাদের ইতিহাস থাকায় এই সফর নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়। তবে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে সেখানে কোনো ধরনের জঙ্গি প্রশিক্ষণের প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছে ফিলিপাইনের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ।
তদন্তে কী জানা গেছে
তদন্ত কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, সাজিদ আক্রম ও তাঁর ছেলে নভীদ আক্রম নভেম্বরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মিন্দানাওয়ের দাভাও শহরে ছিলেন। স্থানীয় একটি হোটেলে একই কক্ষে তারা অবস্থান করতেন এবং খুব কম সময়ের জন্য বাইরে যেতেন। হোটেলকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের সঙ্গে কারও নিয়মিত যোগাযোগ বা সন্দেহজনক চলাচল দেখা যায়নি। হামলার পর পুলিশ হোটেল কক্ষ তল্লাশি করলেও উল্লেখযোগ্য কিছু পাওয়া যায়নি।

ফিলিপাইনের অবস্থান
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র স্পষ্টভাবে বলেছেন, দেশটিকে জঙ্গি প্রশিক্ষণের ঘাঁটি হিসেবে তুলে ধরা বিভ্রান্তিকর। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও সেনাপ্রধানও জানিয়েছেন, মিন্দানাওয়ে আইএস সংশ্লিষ্ট সক্রিয় জঙ্গির সংখ্যা এখন সীমিত এবং অভিযুক্তদের প্রশিক্ষণের কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। তাদের মতে, শুধু সফর করাই জঙ্গি প্রশিক্ষণের প্রমাণ হতে পারে না ।
মিন্দানাওয়ের অতীত ও বর্তমান বাস্তবতা
একসময় মিন্দানাও ছিল আল-কায়েদা ও আইএস সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর শক্ত ঘাঁটি। বিশেষ করে মারাওই শহরে কয়েক বছর আগে বড় ধরনের সংঘাত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জঙ্গিবাদের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামরিক অভিযান, শান্তিচুক্তি ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের ফলে জঙ্গি তৎপরতা অনেকটাই কমেছে বলে বিশ্লেষকদের মত। তবুও কিছু গবেষক মনে করেন, পুরোপুরি ঝুঁকি কেটে যায়নি এবং বিচ্ছিন্ন কাঠামো এখনো রয়ে গেছে।
হামলার প্রভাব ও বিশ্লেষণ
বন্ডি বিচের এই হামলা অস্ট্রেলিয়ায় কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে বিবেচিত হচ্ছে। এতে অন্তত ১৫ জন নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের হামলার জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ অপরিহার্য নয়। বরং সহিংস উগ্রবাদ আজ অনেক ক্ষেত্রে আলগা আদর্শের ছায়ায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে সংঘটিত হচ্ছে। ফলে তদন্তে সফরের প্রাসঙ্গিকতা থাকলেও, সরাসরি মিন্দানাওকে দায়ী করার মতো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















