চীনের দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো এখন নিজেদের গল্প বলছে নিজেদের মাটিতেই। পশ্চিমা শহর বা বিদেশি স্থাপনার বদলে চীনের পাহাড়, ঐতিহাসিক নগর, তৃণভূমি ও সাংস্কৃতিক স্থাপনাকে সামনে রেখে তারা তৈরি করছে বিজ্ঞাপন ও প্রচারাভিযান। এতে যেমন উঠে আসছে দেশের দীর্ঘ ইতিহাস ও সৌন্দর্য, তেমনি প্রকাশ পাচ্ছে চীনা সংস্কৃতির প্রতি নতুন আত্মবিশ্বাস
নিজস্ব ভূগোলেই আত্মবিশ্বাসের প্রদর্শন
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিক চীনা প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য প্রচারের জন্য দেশের ভেতরের ঐতিহ্যবাহী স্থান বেছে নিচ্ছে। কোনো গাড়ি নির্মাতা প্রাচীন পাহাড়ি সিঁড়িতে গাড়ি চালানোর দৃশ্য তুলে ধরছে, আবার কেউ তাং রাজবংশের আদলে গড়া ঐতিহাসিক এলাকায় শুট করছে বিজ্ঞাপন। উদ্দেশ্য একটাই, আধুনিক প্রযুক্তি ও পণ্যের সঙ্গে চীনের গৌরবময় অতীতকে একসূত্রে বাঁধা।

বিপণনে আবেগ ও পরিচয়ের খোঁজ
বিশ্লেষকদের মতে, তরুণ প্রজন্ম এখন কেনাকাটার সময় আবেগী সংযোগকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তাদের কাছে বিদেশে ধারণ করা বিজ্ঞাপন আর আলাদা আকর্ষণ তৈরি করছে না। বরং নিজ দেশের সংস্কৃতি, প্রকৃতি ও ইতিহাসে নিজেদের প্রতিফলন খুঁজে পাচ্ছে তারা। ফলে ব্র্যান্ডগুলো সেই আবেগকে কাজে লাগাতে ঘরের মাটিতেই গল্প সাজাচ্ছে
রাষ্ট্রীয় বার্তা ও বাণিজ্যের মিল
চীনের নেতৃত্ব দীর্ঘদিন ধরেই সাংস্কৃতিক আত্মবিশ্বাস জোরদারের কথা বলছে। সেই রাষ্ট্রীয় বার্তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে ব্যবসা ও বিপণন কৌশলেও। স্থানীয় সরকারগুলোও ঐতিহ্য রক্ষা ও পর্যটন বাড়াতে ব্র্যান্ডের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ নিচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন অর্থনীতি চাঙা হচ্ছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুনভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে চীনের পরিচয়
সমালোচনা ও দায়িত্বের প্রশ্ন
তবে এই প্রবণতার সঙ্গে সমালোচনাও রয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, কিছু প্রতিষ্ঠান কেবল দৃশ্যের সৌন্দর্য ব্যবহার করছে, ইতিহাস ও সামাজিক প্রেক্ষাপটকে যথাযথ সম্মান না দিয়েই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যতে এমন উদ্যোগে ঝুঁকি মূল্যায়ন ও সাংস্কৃতিক প্রভাব পর্যালোচনা জরুরি হয়ে উঠবে, যাতে ঐতিহ্য কেবল প্রদর্শনী না হয়ে অর্থবহ অংশীদারিত্বে রূপ নেয়
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















