০৮:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে আঘাত: মাইকেল মিলার দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে ‘হিন্দু চরমপন্থীদের’ বিক্ষোভ – কী ঘটেছিল ১১ মাসে মাত্র ২৫ দিন ক্লাসে উপস্থিত: পরীক্ষার অযোগ্য ঘোষণায় শিক্ষককে হাতুড়ি দিয়ে মারধর বিএনপি কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ, আহত চার নেতা-কর্মী পত্রিকা অফিসে হামলার আগাম গোয়েন্দা তথ্য ছিল, তবু গুরুত্ব দেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ হাদি হত্যাকাণ্ড: ঘাতকের অবস্থান এখনও অজানা চট্টগ্রামে চিকুনগুনিয়া সংক্রমণ বাড়ছে, সতর্কতা জারি ভালুকায় পোশাক শ্রমিক হত্যা: ১০ জন গ্রেপ্তার সাভারে ৫০৮ লিটার অবৈধ মদ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১ রাঙামাটির পুরাতন বাস টার্মিনালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, পুড়লো তিনটি বাস

সমন্বিত প্রবৃদ্ধির পথে মালয়েশিয়া, বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মাঝেও অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার বার্তা

বৈশ্বিক অর্থনীতির টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেও মালয়েশিয়া সমন্বিত প্রবৃদ্ধি ও সুস্পষ্ট অর্থনৈতিক দিকনির্দেশনাকেই সরকারের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে ধরে রেখেছে। আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার সর্বশেষ মূল্যায়নের প্রেক্ষাপটে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম জানিয়েছেন, অর্থনীতিকে দায়িত্বশীলভাবে পরিচালনার পাশাপাশি এর সুফল যেন সব নাগরিকের জীবনে বাস্তবভাবে পৌঁছায়, সেটিই এখন সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য টানাপোড়েন ও নীতিগত অনিশ্চয়তা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিগুলো যখন চাপে, তখন মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতার চিত্রই উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক মূল্যায়নে। এই প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় অর্থনৈতিক স্থিতি কেবল হিসাবের খাতায় সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, এর প্রতিফলন ঘটতে হবে মানুষের কর্মসংস্থান, ন্যায্য আয় ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আস্থার মধ্যেও। তিনি বলেন, নিরাপদ ও ন্যায্য চাকরির সুযোগ তৈরি এবং দীর্ঘমেয়াদি আস্থা গড়ে তোলাই এখন সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ।

সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনায় সতর্কতা ও সংস্কার

প্রধানমন্ত্রী জানান, ঐক্যবদ্ধ সরকার জন অর্থ ব্যবস্থাপনায় সংযম বজায় রাখবে এবং ত্রয়োদশ মালয়েশিয়া পরিকল্পনার আওতায় চলমান সংস্কার কার্যক্রম আরও জোরদার করবে। তাঁর ভাষায়, যে প্রবৃদ্ধি তৈরি করা হচ্ছে তা যেন শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়ায়, বৈশ্বিক ধাক্কা সামলাতে সক্ষম হয় এবং সর্বস্তরের মানুষের জন্য অর্থবহ সুফল নিয়ে আসে, সেটিই লক্ষ্য।

অর্থনৈতিক দিক নির্দেশনায় স্থির থাকার তাগিদ

বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী জোহারি আবদুল গনি একই সুরে বলেন, স্পষ্ট অর্থনৈতিক দিকনির্দেশনা ছাড়া বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মুখে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাঁর মতে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিবেদনে নানা দৃষ্টিভঙ্গি উঠে আসে, কিন্তু দেশের ভবিষ্যৎ গঠনের দায়িত্ব দেশের হাতেই। তাই যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক না কেন, মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত না হওয়াই সবচেয়ে জরুরি।

কুয়ালালামপুরে এক কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে তিনি বলেন, অর্থনীতির গতিপথে সরকারের মনোযোগ ও ধারাবাহিকতাই দেশের শক্তির ভিত্তি। সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে, সেগুলোর মোকাবিলায় এই ফোকাসই সহায়ক হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় উন্নয়নের পথে সব পক্ষের ঐক্য ও সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাই বড় শক্তি

জোহারি আরও বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এমন একটি বিষয় যা আন্তর্জাতিক সূচকে পুরোপুরি ধরা পড়ে না, বরং তা নির্ধারিত হয় দেশের ভেতরের বাস্তবতা দিয়ে। তাঁর মতে, রাজনৈতিক স্থিরতা থাকলে ভবিষ্যতের বহু সমস্যা ও সংকট সহজেই সামাল দেওয়া সম্ভব।

আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার মূল্যায়ন

আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার সাম্প্রতিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক বাণিজ্য টানাপোড়েন ও নীতিগত অনিশ্চয়তার মধ্যে মালয়েশিয়ার অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য স্থিতিস্থাপকতা দেখিয়েছে। চলতি বছরে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক গতিতে এগোচ্ছে, যার পেছনে রয়েছে শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ ভোগ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের উন্নতি এবং বৈশ্বিক প্রযুক্তি খাতে ইতিবাচক চক্র।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তি ব্যবসা ও ভোক্তাদের জন্য অনিশ্চয়তা কমাতে সহায়ক হয়েছে। সামনের সময়েও অভ্যন্তরীণ চাহিদার জোরে অর্থনৈতিক স্থিতি বজায় থাকবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় অগ্রগতি

আন্তর্জাতিক সংস্থাটি মালয়েশিয়ার রাজস্ব ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করে জানায়, জন অর্থ ও আর্থিক দায়িত্ব আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিক অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। সরকার দুই হাজার ছাব্বিশ সালে মোট দেশজ উৎপাদনের তুলনায় বাজেট ঘাটতি সাড়ে তিন শতাংশে এবং দুই হাজার আটাশ সালে তা তিন শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে আঘাত: মাইকেল মিলার

সমন্বিত প্রবৃদ্ধির পথে মালয়েশিয়া, বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মাঝেও অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার বার্তা

০৭:১৯:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

বৈশ্বিক অর্থনীতির টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেও মালয়েশিয়া সমন্বিত প্রবৃদ্ধি ও সুস্পষ্ট অর্থনৈতিক দিকনির্দেশনাকেই সরকারের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে ধরে রেখেছে। আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার সর্বশেষ মূল্যায়নের প্রেক্ষাপটে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম জানিয়েছেন, অর্থনীতিকে দায়িত্বশীলভাবে পরিচালনার পাশাপাশি এর সুফল যেন সব নাগরিকের জীবনে বাস্তবভাবে পৌঁছায়, সেটিই এখন সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য টানাপোড়েন ও নীতিগত অনিশ্চয়তা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিগুলো যখন চাপে, তখন মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতার চিত্রই উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক মূল্যায়নে। এই প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় অর্থনৈতিক স্থিতি কেবল হিসাবের খাতায় সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, এর প্রতিফলন ঘটতে হবে মানুষের কর্মসংস্থান, ন্যায্য আয় ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আস্থার মধ্যেও। তিনি বলেন, নিরাপদ ও ন্যায্য চাকরির সুযোগ তৈরি এবং দীর্ঘমেয়াদি আস্থা গড়ে তোলাই এখন সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ।

সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনায় সতর্কতা ও সংস্কার

প্রধানমন্ত্রী জানান, ঐক্যবদ্ধ সরকার জন অর্থ ব্যবস্থাপনায় সংযম বজায় রাখবে এবং ত্রয়োদশ মালয়েশিয়া পরিকল্পনার আওতায় চলমান সংস্কার কার্যক্রম আরও জোরদার করবে। তাঁর ভাষায়, যে প্রবৃদ্ধি তৈরি করা হচ্ছে তা যেন শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়ায়, বৈশ্বিক ধাক্কা সামলাতে সক্ষম হয় এবং সর্বস্তরের মানুষের জন্য অর্থবহ সুফল নিয়ে আসে, সেটিই লক্ষ্য।

অর্থনৈতিক দিক নির্দেশনায় স্থির থাকার তাগিদ

বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী জোহারি আবদুল গনি একই সুরে বলেন, স্পষ্ট অর্থনৈতিক দিকনির্দেশনা ছাড়া বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মুখে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাঁর মতে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিবেদনে নানা দৃষ্টিভঙ্গি উঠে আসে, কিন্তু দেশের ভবিষ্যৎ গঠনের দায়িত্ব দেশের হাতেই। তাই যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক না কেন, মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত না হওয়াই সবচেয়ে জরুরি।

কুয়ালালামপুরে এক কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে তিনি বলেন, অর্থনীতির গতিপথে সরকারের মনোযোগ ও ধারাবাহিকতাই দেশের শক্তির ভিত্তি। সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে, সেগুলোর মোকাবিলায় এই ফোকাসই সহায়ক হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় উন্নয়নের পথে সব পক্ষের ঐক্য ও সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাই বড় শক্তি

জোহারি আরও বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এমন একটি বিষয় যা আন্তর্জাতিক সূচকে পুরোপুরি ধরা পড়ে না, বরং তা নির্ধারিত হয় দেশের ভেতরের বাস্তবতা দিয়ে। তাঁর মতে, রাজনৈতিক স্থিরতা থাকলে ভবিষ্যতের বহু সমস্যা ও সংকট সহজেই সামাল দেওয়া সম্ভব।

আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার মূল্যায়ন

আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার সাম্প্রতিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক বাণিজ্য টানাপোড়েন ও নীতিগত অনিশ্চয়তার মধ্যে মালয়েশিয়ার অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য স্থিতিস্থাপকতা দেখিয়েছে। চলতি বছরে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক গতিতে এগোচ্ছে, যার পেছনে রয়েছে শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ ভোগ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের উন্নতি এবং বৈশ্বিক প্রযুক্তি খাতে ইতিবাচক চক্র।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তি ব্যবসা ও ভোক্তাদের জন্য অনিশ্চয়তা কমাতে সহায়ক হয়েছে। সামনের সময়েও অভ্যন্তরীণ চাহিদার জোরে অর্থনৈতিক স্থিতি বজায় থাকবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় অগ্রগতি

আন্তর্জাতিক সংস্থাটি মালয়েশিয়ার রাজস্ব ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করে জানায়, জন অর্থ ও আর্থিক দায়িত্ব আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিক অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। সরকার দুই হাজার ছাব্বিশ সালে মোট দেশজ উৎপাদনের তুলনায় বাজেট ঘাটতি সাড়ে তিন শতাংশে এবং দুই হাজার আটাশ সালে তা তিন শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়েছে।