০৫:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
রাজবংশের হাতে গড়া লিংইন মন্দির শুধু দর্শনের জন্য জন্য নয় সরাসরি ইতিহাস পাঠ বন্য প্রাণীর চলাচলে জীবনরেখা ক্যানোপি সেতু, সুনগাই পিনে নতুন আশার গল্প ঘূর্ণিঝড় দিত্বাহর ধ্বংসযজ্ঞের পর শ্রীলঙ্কার পাশে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ চীনা ঐতিহ্যেই ব্র্যান্ডের নতুন গল্প, বদলাচ্ছে বিপণনের ভাষা দুর্যোগের আগেই পাশে দাঁড়ায় যে মানবতার শক্তি, মালয়েশিয়ায় ইউনাইটেড শিখসের নীরব সেবা থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া সীমান্তে উত্তেজনা থামাতে কুয়ালালামপুর বৈঠকের দিকে তাকিয়ে জাপানের পারমাণবিক প্রত্যাবর্তন ফুকুশিমার পনেরো বছর পর আবার চালু হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম কেন্দ্র প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে আঘাত: মাইকেল মিলার দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে ‘হিন্দু চরমপন্থীদের’ বিক্ষোভ – কী ঘটেছিল ১১ মাসে মাত্র ২৫ দিন ক্লাসে উপস্থিত: পরীক্ষার অযোগ্য ঘোষণায় শিক্ষককে হাতুড়ি দিয়ে মারধর

বন্য প্রাণীর চলাচলে জীবনরেখা ক্যানোপি সেতু, সুনগাই পিনে নতুন আশার গল্প

মালয়েশিয়ার কিনাবাতাঙ্গান অঞ্চলের সুনগাই পিন সংরক্ষণ এলাকায় গড়ে ওঠা ক্যানোপি সেতুগুলো এখন আর শুধু পর্যটকদের কৌতূহলের বিষয় নয়। এই সেতুগুলো নীরবে কিন্তু কার্যকরভাবে ভাঙা বনভূমিকে আবার যুক্ত করছে, বন্যপ্রাণীর নিরাপদ চলাচলের পথ তৈরি করছে।

সংরক্ষিত এলাকার ভেতরে নিরাপদ সংযোগ
সাওইত কিনাবালু সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্য ইউনিটের উদ্যোগে নির্মিত এই সেতুগুলো দুইটি তেল বাগান ব্লকের মাঝখানে থাকা একমাত্র নিরাপদ সংযোগ হিসেবে কাজ করছে। প্রায় দুই হাজার ছয়শ ত্রিশ হেক্টর জুড়ে বিস্তৃত সংরক্ষণ এলাকা এর ফলে ওরাংওটাং সহ নানা প্রাণী নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছে। এতে আবাসভূমি খণ্ডিত হওয়ার ঝুঁকি যেমন কমছে, তেমনি মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সংঘাতও হ্রাস পাচ্ছে।

ওরাংওটাং সুরক্ষায় বাস্তব ফল
সাওইত কিনাবালুর সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্য বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রশিদাহ মাকবুল রহমান জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তিনটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ক্যামেরা ফাঁদের তথ্য অনুযায়ী সেতুগুলোর ব্যবহার আশাব্যঞ্জক। প্রায় পঞ্চাশটির মতো ওরাংওটাংয়ের উপস্থিতি ধরা পড়েছে, যদিও একই প্রাণী একাধিকবার ধরা পড়ায় প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণে আরও বিশ্লেষণ প্রয়োজন।

দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ উদ্যোগ
এই সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি সাওইত কিনাবালুর দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ কার্যক্রমের অংশ। সুনগাই পিন নদীর প্রায় সাতাশ কিলোমিটার তীর জুড়ে গাছ পুনরোপণের মাধ্যমে একটি প্রাকৃতিক বাফার অঞ্চল তৈরি করা হয়েছে। দুই হাজার সালের শুরুর দিকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি বিশ্ব প্রকৃতি তহবিল ও সাবাহ বন বিভাগের সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে।

Searching for Orangutans on a Kinabatangan River Cruise in Malaysia

অন্যান্য বন্যপ্রাণীরও উপকার
ওরাংওটাংয়ের পাশাপাশি লম্বা লেজি বানরসহ আরও অনেক বন্যপ্রাণী এই সেতু ব্যবহার করছে। এতে প্রমাণিত হচ্ছে, ছোট পরিসরের হলেও এই কাঠামো ভাঙা আবাসভূমিকে যুক্ত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

উন্নয়ন ও সংরক্ষণের ভারসাম্য
ক্যানোপি সেতুগুলো এখন উন্নয়ন ও প্রকৃতি সংরক্ষণের ভারসাম্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। পরিকল্পিত উদ্যোগ থাকলে তেলবাগান শিল্প ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা একসঙ্গে এগোতে পারে, সেটা দেখাচ্ছে এই প্রকল্প।

স্থানীয় অর্থনীতি ও পর্যটনের সুযোগ
সংরক্ষণ এলাকা শুধু গবেষণার ক্ষেত্র নয়, স্থানীয় মানুষের জীবিকার নতুন পথও খুলে দিচ্ছে। সুনগাই পিন ঘিরে প্রকৃতি ভিত্তিক পর্যটন উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বন ভ্রমণ, নদী পথে হাঁটা এবং কিনাবাতাঙ্গানের বোর্নিও হাতি অভয়ারণ্যে হাতি দেখার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। স্থানীয় পর্যটন সমবায়ের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে এই কার্যক্রম সরাসরি লাভবান হবেন এলাকার বাসিন্দারা।

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজবংশের হাতে গড়া লিংইন মন্দির শুধু দর্শনের জন্য জন্য নয় সরাসরি ইতিহাস পাঠ

বন্য প্রাণীর চলাচলে জীবনরেখা ক্যানোপি সেতু, সুনগাই পিনে নতুন আশার গল্প

০৪:০০:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

মালয়েশিয়ার কিনাবাতাঙ্গান অঞ্চলের সুনগাই পিন সংরক্ষণ এলাকায় গড়ে ওঠা ক্যানোপি সেতুগুলো এখন আর শুধু পর্যটকদের কৌতূহলের বিষয় নয়। এই সেতুগুলো নীরবে কিন্তু কার্যকরভাবে ভাঙা বনভূমিকে আবার যুক্ত করছে, বন্যপ্রাণীর নিরাপদ চলাচলের পথ তৈরি করছে।

সংরক্ষিত এলাকার ভেতরে নিরাপদ সংযোগ
সাওইত কিনাবালু সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্য ইউনিটের উদ্যোগে নির্মিত এই সেতুগুলো দুইটি তেল বাগান ব্লকের মাঝখানে থাকা একমাত্র নিরাপদ সংযোগ হিসেবে কাজ করছে। প্রায় দুই হাজার ছয়শ ত্রিশ হেক্টর জুড়ে বিস্তৃত সংরক্ষণ এলাকা এর ফলে ওরাংওটাং সহ নানা প্রাণী নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছে। এতে আবাসভূমি খণ্ডিত হওয়ার ঝুঁকি যেমন কমছে, তেমনি মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সংঘাতও হ্রাস পাচ্ছে।

ওরাংওটাং সুরক্ষায় বাস্তব ফল
সাওইত কিনাবালুর সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্য বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রশিদাহ মাকবুল রহমান জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তিনটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ক্যামেরা ফাঁদের তথ্য অনুযায়ী সেতুগুলোর ব্যবহার আশাব্যঞ্জক। প্রায় পঞ্চাশটির মতো ওরাংওটাংয়ের উপস্থিতি ধরা পড়েছে, যদিও একই প্রাণী একাধিকবার ধরা পড়ায় প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণে আরও বিশ্লেষণ প্রয়োজন।

দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ উদ্যোগ
এই সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি সাওইত কিনাবালুর দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ কার্যক্রমের অংশ। সুনগাই পিন নদীর প্রায় সাতাশ কিলোমিটার তীর জুড়ে গাছ পুনরোপণের মাধ্যমে একটি প্রাকৃতিক বাফার অঞ্চল তৈরি করা হয়েছে। দুই হাজার সালের শুরুর দিকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি বিশ্ব প্রকৃতি তহবিল ও সাবাহ বন বিভাগের সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে।

Searching for Orangutans on a Kinabatangan River Cruise in Malaysia

অন্যান্য বন্যপ্রাণীরও উপকার
ওরাংওটাংয়ের পাশাপাশি লম্বা লেজি বানরসহ আরও অনেক বন্যপ্রাণী এই সেতু ব্যবহার করছে। এতে প্রমাণিত হচ্ছে, ছোট পরিসরের হলেও এই কাঠামো ভাঙা আবাসভূমিকে যুক্ত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

উন্নয়ন ও সংরক্ষণের ভারসাম্য
ক্যানোপি সেতুগুলো এখন উন্নয়ন ও প্রকৃতি সংরক্ষণের ভারসাম্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। পরিকল্পিত উদ্যোগ থাকলে তেলবাগান শিল্প ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা একসঙ্গে এগোতে পারে, সেটা দেখাচ্ছে এই প্রকল্প।

স্থানীয় অর্থনীতি ও পর্যটনের সুযোগ
সংরক্ষণ এলাকা শুধু গবেষণার ক্ষেত্র নয়, স্থানীয় মানুষের জীবিকার নতুন পথও খুলে দিচ্ছে। সুনগাই পিন ঘিরে প্রকৃতি ভিত্তিক পর্যটন উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বন ভ্রমণ, নদী পথে হাঁটা এবং কিনাবাতাঙ্গানের বোর্নিও হাতি অভয়ারণ্যে হাতি দেখার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। স্থানীয় পর্যটন সমবায়ের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে এই কার্যক্রম সরাসরি লাভবান হবেন এলাকার বাসিন্দারা।