কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থার দ্রুত বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো বিশ্বজুড়ে নতুন ডেটা সেন্টার গড়ে তুলছে। এসব স্থাপনায় বিদ্যুৎ ব্যবহারের মাত্রা আগের যেকোনো ক্লাউড পরিষেবার তুলনায় অনেক বেশি, যা বিদ্যুৎ গ্রিড ও জ্বালানি নীতির ওপর নতুন চাপ তৈরি করছে।
শিল্প খাতের কর্মকর্তারা বলছেন, আধুনিক এআই মডেল চালাতে বিপুল কম্পিউটিং শক্তি প্রয়োজন। ফলে বিদ্যুৎ উৎসের কাছাকাছি বড় ডেটা সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। কিছু অঞ্চলে ইউটিলিটি সংস্থাগুলো জানিয়েছে, এআই ডেটা সেন্টারের সম্ভাব্য চাহিদা মাঝারি আকারের শহরের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সমান হয়ে উঠছে।

সরকারগুলোকেও এখন সক্রিয় হতে হচ্ছে। একদিকে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান, অন্যদিকে আবাসিক ও জরুরি পরিষেবার বিদ্যুৎ সরবরাহ—এই ভারসাম্য রক্ষা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের কিছু এলাকায় গ্রিড সম্প্রসারণ পরিকল্পনা নতুন করে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো বলছে, তারা দক্ষতা বাড়ানো ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করছে। দীর্ঘমেয়াদি সবুজ বিদ্যুৎ চুক্তি ও উন্নত কুলিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলেও বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই কাজের দ্রুত বৃদ্ধি এই সাশ্রয়ী উদ্যোগকে ছাপিয়ে যাচ্ছে।
এআই ডেটা সেন্টার জ্বালানি বাজারের প্রতিযোগিতাও বদলে দিচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহকারীদের বড় গ্রাহকে পরিণত হওয়ায় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো অবকাঠামো পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলছে। এতে প্রশ্ন উঠছে—জ্বালানি ব্যবস্থা কি করপোরেট চাহিদা না জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে।

পরিবেশবাদীরা সতর্ক করছেন, যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ছাড়া এআই বিস্তার জলবায়ু লক্ষ্যে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থাকলেও, সীমিত সরবরাহের অঞ্চলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তবুও এআইকে ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে দেখছে প্রযুক্তি খাত। ফলে নীতিনির্ধারকদের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো—উদ্ভাবন, জ্বালানি নিরাপত্তা ও পরিবেশগত দায়িত্বের মধ্যে ভারসাম্য আনা।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















