বিশ্বব্যাপী শিপিং শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মুখোমুখি, কারণ নতুন জলবায়ু নিয়ম কার্যকর হতে শুরু করেছে। এসব নীতির লক্ষ্য হলো সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনের সময় কার্বন নিঃসরণ কমানো, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যের অন্যতম বড় দূষণকারী খাত হিসেবে পরিচিত। তবে এই পরিবর্তন জ্বালানি ব্যয় ও পণ্যের দামের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে উদ্বেগও বাড়ছে।
শিপিং খাতে দীর্ঘদিন ধরে ভারী জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরতা রয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, জাহাজের নিঃসরণ দক্ষতা ক্রমশ কঠোরভাবে মূল্যায়ন করা হবে এবং কার্বন খরচ বাড়বে। ফলে কম দক্ষ জাহাজ পরিচালনা করা ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে।

বড় শিপিং কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যে বিকল্প জ্বালানির দিকে ঝুঁকছে। সবুজ মিথানল, অ্যামোনিয়া ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে নিঃসরণ কমানো সম্ভব হলেও, এর জন্য জাহাজে বড় ধরনের পরিবর্তন বা নতুন জাহাজ নির্মাণ প্রয়োজন। ছোট অপারেটরদের জন্য এই বিনিয়োগ বিশেষভাবে চ্যালেঞ্জিং।
বন্দর ও জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থাও বদলাতে হচ্ছে। নতুন জ্বালানির জন্য আলাদা অবকাঠামো ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন, যা অনেক জায়গায় এখনও প্রস্তুত নয়। ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু বন্দর দ্রুত এগোলেও অন্যরা পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
উন্নয়নশীল দেশগুলো উদ্বিগ্ন যে, বাড়তি পরিবহন খরচ তাদের আমদানি-নির্ভর অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তারা সহায়তা ও নমনীয় সময়সূচির দাবি জানিয়েছে, যাতে বাণিজ্যে বৈষম্য না বাড়ে।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, বর্তমান নিয়ম আরও কঠোর হওয়া উচিত। তাদের মতে, ধাপে ধাপে পরিবর্তনের ফলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার দীর্ঘায়িত হতে পারে।
সব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, পরিষ্কার শিপিংয়ের দিকে অগ্রগতি থামার সম্ভাবনা কম। বিনিয়োগকারী ও বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন জলবায়ু ঝুঁকিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। ফলে শিপিং শিল্পে কম কার্বন নিঃসরণ ভবিষ্যতে প্রতিযোগিতার মূল মানদণ্ড হয়ে উঠছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















