বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো বন্যপ্রাণীর রোগ নজরদারি বাড়াচ্ছে, কারণ পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে। গবেষকদের মতে, বন উজাড়, জলবায়ু চাপ ও মানুষের সঙ্গে প্রাণীর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ নতুন রোগের জন্ম দিতে পারে।
উচ্চ জীববৈচিত্র্যপূর্ণ ও দ্রুত ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন হওয়া এলাকাগুলোতে নজরদারি কর্মসূচি সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে বন্যপ্রাণীর শরীরে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করা হয়, যাতে মানবদেহে সংক্রমণের আগেই সতর্ক হওয়া যায়।

গবেষণায় দেখা গেছে, বন ধ্বংস ও নগর সম্প্রসারণের ফলে বন্যপ্রাণী কৃষিজমি ও বসতির কাছাকাছি চলে আসছে। এতে রোগ ছড়ানোর সুযোগ বাড়ছে। অতীতের অনেক বড় রোগের উৎস ছিল এই ধরনের সংযোগস্থল।
জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও বৃষ্টিপাতের ধরণ বদলে যাওয়ায় প্রাণীর চলাচল ও প্রজনন চক্র পরিবর্তিত হচ্ছে। ফলে কিছু রোগ নতুন এলাকায় দেখা দিচ্ছে, যা নজরদারিকে কঠিন করে তুলছে।
অর্থায়ন বড় চ্যালেঞ্জ। দীর্ঘমেয়াদি নজরদারির জন্য স্থায়ী বিনিয়োগ ও প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন, যা অনেক দেশে সীমিত। বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে তথ্য বিনিময়ের ঘাটতিও সমস্যা সৃষ্টি করছে।

স্থানীয় জনগোষ্ঠীকেও এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা হচ্ছে। বন্যপ্রাণীর অস্বাভাবিক মৃত্যু বা আচরণ সম্পর্কে স্থানীয় তথ্য অনেক সময় প্রাথমিক সতর্কতা হিসেবে কাজ করে। সচেতনতা কার্যক্রমে বোঝানো হচ্ছে, প্রকৃতি সংরক্ষণ ও জনস্বাস্থ্য একে অপরের সঙ্গে জড়িত।
বিজ্ঞানীরা জোর দিয়ে বলছেন, এটি কোনো প্রাণীবিরোধী উদ্যোগ নয়। বরং পরিবেশের ভারসাম্য বোঝার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ মহামারি প্রতিরোধই এর লক্ষ্য। আগাম ঝুঁকি শনাক্ত করা গেলে মানুষ ও প্রকৃতি—দু’পক্ষই উপকৃত হবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















