বিশ্ববাজারের টানা ঊর্ধ্বগতির ধাক্কায় দুবাইয়ের সোনার বাজারে তৈরি হলো নতুন ইতিহাস। একদিনেই রেকর্ড গড়ে ২২ ক্যারেট সোনার দাম গ্রামপ্রতি ৫০০ দিরহাম ছাড়িয়ে গেছে, যা ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীদের নজর কেড়েছে।
মঙ্গলবার দুবাইয়ের সোনার বাজারে নজিরবিহীন উল্লম্ফন দেখা যায়। প্রথমবারের মতো ২২ ক্যারেট সোনার দাম গ্রামপ্রতি ৫০০ দিরহাম অতিক্রম করে। একই দিনে ২৪ ক্যারেট সোনাও পৌঁছে যায় নতুন সর্বোচ্চ দামে। বিশ্ববাজারে টানা র্যালি এবং বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ এই দামের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
দুবাইয়ে রেকর্ড দামে সোনা
মঙ্গলবার ২৪ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়ায় গ্রামপ্রতি ৫৪০ দশমিক ২৫ দিরহাম, যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় এক দশমিক তিন সাত শতাংশ বেশি। একই দিনে ২২ ক্যারেট সোনার দাম বেড়ে হয় গ্রামপ্রতি ৫০০ দশমিক ২৫ দিরহাম। এর আগের দিন ২২ ক্যারেট সোনার দাম ছিল ৪৯৩ দশমিক ৭৫ দিরহাম। মাত্র এক মাস আগে, ২৪ নভেম্বর, ২৪ ক্যারেট সোনা বিক্রি হচ্ছিল ৪৯৫ দিরহামে এবং ২২ ক্যারেট ছিল ৪৫৮ দশমিক ৫০ দিরহামে।
এক মাসে দামের উত্থান
গত এক মাসের দামের চিত্র দেখলেই স্পষ্ট হয়, সোনার বাজার ছিল ধারাবাহিক ঊর্ধ্বমুখী। নভেম্বরের শেষদিকে ২৪ ক্যারেট সোনা ৫০০ দিরহামের কাছাকাছি থাকলেও ডিসেম্বরের শুরুতে দাম ধীরে ধীরে ৫১০ দিরহামের ওপরে উঠে যায়। মাঝামাঝি সময়ে কিছুটা স্থিতিশীলতা থাকলেও পরে আবার দ্রুত বাড়তে শুরু করে। ১৭ ডিসেম্বরের পর ২৪ ক্যারেট সোনা ৫২০ দিরহাম ছাড়ায় এবং ২২ ক্যারেট পৌঁছায় ৪৮০ দিরহামে। ২২ ডিসেম্বর নাগাদ এই দাম বেড়ে যথাক্রমে ৫৩০ ও ৪৯০ দিরহাম অতিক্রম করে। পুরো ডিসেম্বর মাসে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম বেড়েছে মোটামুটি নয় শতাংশেরও বেশি।

সুদের হার ও বৈশ্বিক প্রভাব
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে আগামী বছর সুদের হার আরও কমতে পারে—এই প্রত্যাশায় বিনিয়োগকারীরা সুদবিহীন ধাতু সোনার দিকে ঝুঁকছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সক্রিয় ভূমিকা চলতি বছরে সোনার দামের ঊর্ধ্বগতিকে আরও জোরালো করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর বিপুল সোনা কেনা এবং বিনিয়োগ তহবিলে টানা অর্থপ্রবাহ বাজারকে চাঙ্গা রেখেছে।
নিরাপদ বিনিয়োগের আকর্ষণ
আন্তর্জাতিক রাজনীতির উত্তেজনাও সোনার নিরাপদ বিনিয়োগ ভাবমূর্তিকে শক্ত করেছে। ভেনেজুয়েলার তেল অবরোধসহ বিভিন্ন ভূরাজনৈতিক চাপ বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনার দিকেই ঝুঁকছেন। ফলে চলতি বছরে সোনা উনিশশো ঊনআশির পর সবচেয়ে শক্তিশালী বার্ষিক অবস্থানে পৌঁছেছে।
ভবিষ্যৎ বাজারের ইঙ্গিত
দামের এই উল্লম্ফন সাধারণ ক্রেতাদের বাজেটে চাপ ফেললেও সোনার দীর্ঘদিনের জনপ্রিয়তা ও বিনিয়োগমূল্য আবারও স্পষ্ট করেছে। খুচরা বাজারে সাময়িক দ্বিধা থাকলেও সামগ্রিক চাহিদা এখনো শক্ত অবস্থানে রয়েছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সব মিলিয়ে আগামী বছরেও সোনার দাম উচ্চ পর্যায়েই থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
#DubaiGold #GoldPrice #GoldMarket #SafeHaven #Investment #GlobalEconomy #Bullion #GoldRally
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















