দলের মনোনয়ন না পেলেও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
বিএনপির আসন ছাড় ও জোট সমঝোতা
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতার অংশ হিসেবে বিএনপি চারটি সংসদীয় আসনে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি রয়েছে। মঙ্গলবার গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সমঝোতাকৃত আসনগুলোতে বিএনপি প্রার্থী দেবে না এবং জোটের শরিক দলকে ভোট দিয়ে ধানের শীষকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে তিনি দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে প্রার্থিতা নিয়ে আলোচনা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে রুমিন ফারহানার সম্ভাব্য মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা চলছিল। তবে তিন নভেম্বর বিএনপি ২৩৭ আসনের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করলেও এই আসনে কারও নাম ঘোষণা করেনি। এরপর স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়, এই আসনে জোটের শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব প্রার্থী হবেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা
দলীয় মনোনয়ন না পেলেও রুমিন ফারহানা নির্বাচনী মাঠ ছাড়েননি। বিভিন্ন সভা ও সমাবেশে তিনি ইঙ্গিত দিয়ে আসছিলেন, মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন। শুক্রবার বিকেলে সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বিটঘর বাজারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় আয়োজিত দোয়া ও মতবিনিময় সভায় তিনি সরাসরি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন।

তিনি বলেন, তিনি যা বলেন তাই করেন। মার্কা যাই হোক, জনগণ পাশে থাকলে তিনি সরাইল ও আশুগঞ্জ থেকেই নির্বাচন করবেন।
দায়বদ্ধতা ও ভোটারদের প্রত্যাশা
আসন সমঝোতার পরও কেন নির্বাচনে থাকতে চান, এমন প্রশ্নে রুমিন ফারহানা বলেন, তিনি দুই হাজার পনেরো সাল থেকে এই আসনে বিএনপির হয়ে কাজ করছেন। তাঁর বাবা এই আসন থেকে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন। এই এলাকার মানুষের প্রতি তাঁর ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা রয়েছে এবং সাধারণ ভোটাররাও তাঁকে চান। সে কারণেই তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন।
দলের স্থানীয় অবস্থান
অন্যদিকে সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর তপু বলেন, তাঁরা বিএনপির পরিবার হিসেবে দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করবেন। দীর্ঘদিন ভোট দিতে না পারার অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই তাঁদের নৈতিক দায়িত্ব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের ভোটার চিত্র
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা এবং বিজয়নগর উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ নিরানব্বই হাজার চারশ আটচল্লিশ। এর মধ্যে সরাইল উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে ভোটার দুই লাখ আটাশি হাজার ছয়শ নয়, আশুগঞ্জ উপজেলার আটটি ইউনিয়নে এক লাখ তেপ্পান্ন হাজার নিরানব্বই এবং বিজয়নগর উপজেলার দুটি ইউনিয়নে সাতান্ন হাজার সাতশ চল্লিশ জন ভোটার রয়েছেন।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















