রমজানকে সামনে রেখে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার ও বাজারে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে ভারত ও পাকিস্তান থেকে এক লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে ভোজ্যতেল ও ডাল সংগ্রহের একাধিক প্রস্তাবেও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
চাল আমদানির সিদ্ধান্ত
বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাব অনুমোদন পায়। এর আওতায় মোট এক লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানি করা হবে, যার সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে সরকারে-সরকারে চুক্তির ভিত্তিতে পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন সাদা চাল আমদানি করা হবে, এতে ব্যয় হবে আনুমানিক ২৪১ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রমজান মাসে চালসহ নিত্যপণ্যের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যায়। এই আমদানি সরকারি খাদ্য মজুত শক্তিশালী করবে এবং বাজারে অস্থিরতা কমাতে সহায়তা করবে।
খাদ্য মজুত ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনা
চাল সংগ্রহ ও দ্রুত দেশে আনার পুরো প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করবে খাদ্য অধিদপ্তর। সময়মতো চাল পৌঁছানো নিশ্চিত করে সরকারি বাফার মজুত আরও দৃঢ় করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
ভোজ্যতেল সংগ্রহে অনুমোদন
বাজারে ভোজ্যতেলের দাম স্থিতিশীল রাখতে বৈঠকে মোট চার কোটি পঁচাত্তর লাখ লিটার ভোজ্যতেল সংগ্রহের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এক কোটি লিটার পরিশোধিত রাইস ব্র্যান তেল এবং আন্তর্জাতিক উৎস থেকে সরাসরি ক্রয়ের মাধ্যমে তিন কোটি পঁচাত্তর লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে।
এই তেল ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে সারাদেশে বিক্রি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ডাল সংগ্রহের উদ্যোগ
এছাড়া বাজারে ডালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে জাতীয় উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১০ হাজার মেট্রিক টন ডাল সংগ্রহের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭২ কোটি ২০ লাখ টাকা। ৫০ কেজির বস্তায় এই ডাল সংগ্রহ করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাজারে সরবরাহ করা হবে, যাতে স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষেরা উপকৃত হন।
সরকার মনে করছে, এসব উদ্যোগ রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















