শৈশবের স্মৃতি, জীবনের গান আর বড় পর্দার আবেগ—সব মিলিয়ে নিল ডায়মন্ডকে ঘিরে এক গভীর ভালোবাসার গল্প বলছে নতুন সিনেমা ‘সং সাং ব্লু’। এই ছবির মাধ্যমে প্রথমবার নিল ডায়মন্ডের সংগীত জগতে পুরোপুরি প্রবেশ করলেন হলিউড তারকা হিউ জ্যাকম্যান। তার ভাষায়, এই ছবি শুধু একটি সিনেমা নয়, এটি একদিকে মাইক সারডিনার প্রতি শ্রদ্ধা, অন্যদিকে নিল ডায়মন্ডের প্রতি ভালোবাসার চিঠি।
শৈশব থেকে ডায়মন্ডের গান
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বড় হওয়া হিউ জ্যাকম্যান জানান, সত্তরের দশকে নিল ডায়মন্ডের গান ছাড়া জীবন কল্পনাই করা যেত না। রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালালেই কোথাও না কোথাও বাজত ‘হট অগাস্ট নাইট’। অস্ট্রেলিয়া ছিল নিল ডায়মন্ডের অন্যতম বড় ভক্তঘাঁটি। সেই শোনার অভ্যাসই পরে গভীর ভালোবাসায় রূপ নেয়, যখন ছবির প্রস্তুতির সময় টানা তেরোটি গানের জন্য ডায়মন্ডের গানেই নিজেকে ডুবিয়ে রাখেন তিনি।
সংগ্রামী শিল্পীর গল্প
‘সং সাং ব্লু’ সিনেমায় জ্যাকম্যান অভিনয় করেছেন মাইক সারডিনার চরিত্রে। নব্বইয়ের দশকে যুক্তরাষ্ট্রের মিলওয়াকি এলাকায় স্ত্রী ক্লেয়ারের সঙ্গে ‘লাইটনিং অ্যান্ড থান্ডার’ নামে নিল ডায়মন্ডের গান গেয়ে জনপ্রিয় হয়েছিলেন সারডিনা। তিনি কখনো নিল ডায়মন্ডকে নকল করতে চাননি, বরং তার গানের আবেগ আর আত্মাকে নিজের কণ্ঠে ধরতে চেয়েছিলেন। এই সংগ্রামী শিল্পীর গল্পই জ্যাকম্যানকে সবচেয়ে বেশি ছুঁয়েছে।
ভালোবাসা আর স্বপ্নের সিনেমা
এই ছবির পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার ক্রেইগ ব্রুয়ার বহু বছর আগে ‘সং সাং ব্লু’ নামের তথ্যচিত্র দেখে সারডিনাদের গল্পে মুগ্ধ হন। চার বছরের চেষ্টায় অবশেষে সিনেমাটি বাস্তব রূপ পায়। জ্যাকম্যানের মতে, এটি দুই শিল্পীর ভালোবাসার গল্প, যারা জীবনের সব প্রতিকূলতার মাঝেও স্বপ্ন ছাড়েনি, একে অপরকে আঁকড়ে ধরে এগিয়ে গেছে।
পোশাক, রূপ আর স্বাচ্ছন্দ্য
চরিত্রের জন্য নিল ডায়মন্ড ঘরানার চুলের স্টাইল, ঝলমলে কিন্তু ঘরোয়া পোশাক—সবকিছুতেই ছিল বাস্তবতার ছোঁয়া। এমনকি তথ্যচিত্রে থাকা একটি দৃশ্যের অনুকরণে ছবিতে অন্তর্বাস পরেও অভিনয় করেছেন জ্যাকম্যান। তার মতে, মাইক সারডিনার মধ্যে লজ্জা ছিল না বললেই চলে, আর সেই স্বচ্ছন্দ্যটাই চরিত্রকে জীবন্ত করেছে।
ডায়মন্ডের বাড়িতে ক্যারাওকে রাত
ছবির শুটিং শেষে নিল ডায়মন্ডের আমন্ত্রণে তার কলোরাডোর বাড়িতে যান হিউ জ্যাকম্যান। পারকিনসন রোগের কারণে যিনি মঞ্চ ছাড়লেও গানের প্রতি ভালোবাসা ছাড়েননি, সেই কিংবদন্তির সঙ্গে ক্যারাওকে গাওয়া ছিল জ্যাকম্যানের জীবনের স্মরণীয় মুহূর্ত। নিল ডায়মন্ড নিজেই বেছে দেন গান, গাওয়া হয় ‘সুইট ক্যারোলাইন’সহ আরও কিছু ক্লাসিক। জ্যাকম্যান একে বলেছেন নিজের জীবনকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় এমন এক মুহূর্ত।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















