এক সময় বক্সিং মানেই ছিল কেবল টেলিভিশন আর পে-পর-ভিউয়ের রাজত্ব। মাইক টাইসন, ইভান্ডার হোলিফিল্ড বা ফ্লয়েড মেওয়েদারের লড়াই মানেই ছিল ঘরে বসে শ্বাসরুদ্ধকর রাত। কিন্তু সময় বদলেছে। বদলেছে দর্শকের অভ্যাসও। কেবল নেটওয়ার্কগুলো একে একে সরে যাওয়ায় বক্সিং এখন আশ্রয় নিচ্ছে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে।
কেবল নেটওয়ার্ক থেকে সরে আসার কারণ
গত কয়েক বছরে বড় কেবল নেটওয়ার্কগুলো বক্সিং থেকে দূরে সরে গেছে। বাজেট সংকোচন, ব্যবসায়িক অগ্রাধিকারের পরিবর্তন আর অনিশ্চিত বাজারের কারণে তারা আর ঝুঁকি নিতে চায়নি। সাবেক শোটাইম স্পোর্টস প্রধান স্টিফেন এসপিনোজার ভাষায়, বর্তমান পরিবেশে অনেক নেটওয়ার্কই বক্সিংয়ে ঝাঁপাতে আগ্রহী নয়। এই শূন্যস্থানেই ঢুকেছে স্ট্রিমিং সেবাগুলো।
স্ট্রিমিংয়ে বক্সিংয়ের নতুন যাত্রা
দুই হাজার পঁচিশ সালে একজন নিয়মিত বক্সিং ভক্ত হতে হলে একাধিক স্ট্রিমিং সেবায় সাবস্ক্রিপশন দরকার। নেটওয়ার্কভিত্তিক যুগের বদলে এখন লড়াই ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। কিছু লড়াই এখনো পে-পর-ভিউ মডেলে দেখা যাচ্ছে, আবার কিছু লড়াই সরাসরি সাবস্ক্রিপশনের মধ্যেই দেখানো হচ্ছে। এই বৈচিত্র্যই নতুন বাস্তবতা।
নেটওয়ার্ক ছাড়লেও দর্শক টানছে বড় লড়াই
লাইভ খেলার আবেদন এখনো অটুট। এর প্রমাণ মিলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তারকা জেক পল ও সাবেক হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন অ্যান্থনি জোশুয়ার সাম্প্রতিক লড়াইয়ে। দক্ষতার পার্থক্য নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও বিপুল দর্শক সেই লড়াই দেখেছেন। এর আগেও জেক পল ও বয়স্ক মাইক টাইসনের লড়াই ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। এই সাফল্য স্ট্রিমিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও বক্সিং আয়োজনের সাহস দিচ্ছে।

বক্সিং কেন অন্য খেলাধুলার চেয়ে পিছিয়ে
বাস্কেটবল বা আমেরিকান ফুটবলের মতো কেন্দ্রীভূত কাঠামো বক্সিংয়ের নেই। বিভিন্ন প্রমোটার আলাদা আলাদা চুক্তিতে বাঁধা থাকায় সম্প্রচার ও আয়োজন জটিল হয়ে পড়ে। তবু এই ভাঙা কাঠামোর মাঝেই নতুন সুযোগ দেখছে ডিজিটাল দুনিয়া।
ডিএএজেডএন ও অন্যদের ভূমিকা
বক্সিংয়ের সবচেয়ে বড় গন্তব্য হিসেবে উঠে এসেছে ডিএএজেডএন। প্রতিবছর শতাধিক লড়াই সম্প্রচার করে তারা ধীরে ধীরে শূন্যস্থান পূরণ করছে। তাদের মতে, সব প্রমোটার ও ফাইটারকে এক ছাদের নিচে আনার সুযোগ তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে স্ট্রিমিং জায়ান্টরাও ধীরে ধীরে বেছে বেছে বড় লড়াই আয়োজনের পথে হাঁটছে।
বক্সারদের জন্য নতুন সুযোগ
এই পরিবর্তনের ফলে বক্সারদের ভূমিকাও বদলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নিজেদের ব্র্যান্ড তৈরি করার গুরুত্ব এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। নারী হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন ক্লারেসা শিল্ডসের মতে, যাদের নিজস্ব পরিচিতি আর সমর্থক আছে, এই সময়টা তাদের জন্যই সবচেয়ে বড় সুযোগ।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















