যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও জ্বালানি নীতির ভেতরের দৃশ্যপট আবারও আলোচনায়। তেল শিল্পের প্রভাবশালী উদ্যোক্তা হ্যারল্ড জি হ্যাম এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের তেল ও গ্যাস রীতিকে পাল্টে দিচ্ছে। জলবায়ু সংকটের চাপ, নবায়নযোগ্য শক্তির অগ্রযাত্রা আর বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রসারের মধ্যেও ফসিল জ্বালানিকে ফের কেন্দ্রে আনতে এই জোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে
শুরুটা যেভাবে
হারল্ড হ্যামের সঙ্গে ট্রাম্পের পরিচয় বহু আগের। দুজনের পথচলা ভিন্ন হলেও দৃষ্টিভঙ্গিতে মিল ছিল। তেল শিল্পে দীর্ঘদিন কাজ করা হ্যাম শুরু থেকেই ট্রাম্পকে সমর্থন দেন। সেই সমর্থন সময়ের সঙ্গে আর্থিক অনুদান ও নীতিগত পরামর্শে রূপ নেয়। ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর সেই সম্পর্কের প্রভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ক্ষমতায় প্রভাব ও নিয়োগ
ট্রাম্প প্রশাসনে হ্যামের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসেন। জ্বালানি ও স্বরাষ্ট্র সংক্রান্ত দপ্তরে এমন ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হয়, যাঁরা তেল ও গ্যাস শিল্পের পক্ষে পরিচিত। এর ফলে ফেডারেল নীতিতে দ্রুত পরিবর্তন আসে এবং তেল কোম্পানিগুলোর জন্য নিয়ন্ত্রক বাধা শিথিল হয়।
নীতিতে বড় মোড়
এই সময়ে জ্বালানি দক্ষতা সংক্রান্ত নিয়ম, মিথেন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির করছাড় দুর্বল বা স্থগিত করা হয়। তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের অনুমতি দ্রুত দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু হয়। এতে বিশেষ করে হ্যামের প্রতিষ্ঠান কন্টিনেন্টাল রিসোর্সেস নতুন এলাকায় খননের সুযোগ পায়।

ওয়াইয়োমিং থেকে বাকেন পর্যন্ত
উত্তর ডাকোটা ও ওয়াইয়োমিংয়ে নতুন খনন প্রকল্প হ্যামের জন্য বড় সম্ভাবনা তৈরি করে। আগে পরিবেশগত কারণে যেসব প্রকল্প আটকে ছিল, সেগুলোর অনুমতি আবার মিলতে শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশবাদীরা উদ্বেগ জানালেও প্রশাসনের অবস্থান শিল্পের পক্ষে থাকে।
সমালোচনা ও বাস্তবতা
পরিবেশবাদীদের মতে, এই নীতিগত পরিবর্তন নবায়নযোগ্য শক্তিতে রূপান্তরকে পিছিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে তেল শিল্প বলছে, এতে জ্বালানি নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান বাড়ছে। হ্যাম নিজে প্রকাশ্যে মন্তব্য না করলেও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বক্তব্যে স্পষ্ট, ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে তাঁরা লাভবান।
ভবিষ্যতের ইঙ্গিত
বর্তমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফসিল জ্বালানির যুগ আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। জলবায়ু নীতি ও শিল্প স্বার্থের টানাপোড়েনে হ্যাম-ট্রাম্প জোট আগামী দিনে আরও বিতর্ক তৈরি করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















