বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জাতীয়তাবাদী দলের একজন সদস্য হিসেবে তিনি দেশের মানুষের জন্য একটি স্পষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে চান। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ন্যায়পরায়ণতা ও নৈতিকতার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হবে। এ লক্ষ্য অর্জনে গণতন্ত্রকামী সব মানুষের ঐক্য ও সহযোগিতা প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় বিএনপির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্র পরিচালনায় ন্যায় ও শৃঙ্খলার অঙ্গীকার
তারেক রহমান বলেন, যে ধর্মের মানুষ বা যে রাজনৈতিক দলের অনুসারীই হোক না কেন, দেশের শৃঙ্খলা রক্ষা সবার দায়িত্ব। দেশের প্রতিটি নাগরিক যেন নিরাপদে বসবাস করতে পারে, সেটিই হবে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র পরিচালনার মূল অঙ্গীকার। এ প্রতিজ্ঞাই জাতির সামনে তুলে ধরেন তিনি।
দলীয় ঐক্য ও প্রত্যাশিত বাংলাদেশের কথা
অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একটি প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চান তিনি। শান্তি প্রতিষ্ঠাই হবে তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। এজন্য মহান আল্লাহর রহমত প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আল্লাহর সহায়তা পেলে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
বক্তব্যে তিনি বলেন, বিভিন্ন আধিপত্যবাদী শক্তি এখনও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ওসমান হাদি হত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে। তারেক রহমান বলেন, হাদি ছিলেন গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার একজন সৈনিক। এ অবস্থায় সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে এবং বিশেষ করে তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে।

নারী ও শিশুর নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পাহাড় ও সমতল—সব অঞ্চলের মানুষকে নিয়ে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। এমন বাংলাদেশ, যেখানে নারী ও শিশুরা নিশ্চিন্তে ঘর থেকে বের হয়ে আবার নিরাপদে ফিরে আসতে পারবে।
বিগত সরকারের সমালোচনা
বিগত সরকারের শাসনামলের সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, গত দেড় যুগে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার মদিনার সনদের কথা বললেও বাস্তবে রাষ্ট্র পরিচালনায় তার প্রতিফলন দেখা যায়নি।
খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা
বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি তাঁর মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন।
মানুষের ঢল ৩০০ ফিট এলাকায়
তারেক রহমানকে এক নজর দেখতে ৩০০ ফিট এলাকা ও আশপাশের কয়েক কিলোমিটারজুড়ে মানুষের ঢল নামে। পূর্বাচল, নীলা মার্কেট, নামাপাড়া, কুড়িল বিশ্বরোড ও খিলক্ষেত মোড়সহ প্রতিটি অলিগলি জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ভবন, যানবাহনের ছাদ ও ওভারব্রিজের ওপরও অবস্থান নেন অসংখ্য মানুষ।
বিমানবন্দর থেকে মঞ্চে পৌঁছাতে সময়
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে তিনি ৩০০ ফিটের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওনা দেন। পথে বিপুল জনসমাগমের কারণে বিমানবন্দর থেকে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছাতে তাঁর প্রায় তিন ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। বিকেল সাড়ে ৩টার পর তিনি মঞ্চে ওঠেন।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তারেক রহমান। পরদিন সকালে সিলেট বিমানবন্দরে অবতরণের পর স্বল্প সময়ের বিরতি শেষে তিনি ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















