ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদি যে ব্যাটারিচালিত রিকশায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন, সেই রিকশার চালক কামাল হোসেন আদালতে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর ফয়সাল আহমেদ আদালতে আবেদন করে জানান, এটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড। ঘটনার সময় হাদি কামাল হোসেনের চালিত অটোরিকশায় করে মতিঝিলের খলিল হোটেল এলাকা থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। ওই রিকশাচালক পুরো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্বেচ্ছায় আদালতে নিজের বক্তব্য দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামসেদ আলম রিকশাচালক কামাল হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন বলে তদন্ত কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার পটভূমি
জুলাই অভ্যুত্থান এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে চলা আন্দোলনের মাধ্যমে পরিচিতি পাওয়া শরীফ ওসমান বিন হাদি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত ১২ ডিসেম্বর গণসংযোগের অংশ হিসেবে তিনি বিজয়নগর এলাকায় গেলে হামলার শিকার হন।
চলন্ত রিকশায় থাকা অবস্থায় একটি মোটরসাইকেলের পেছনে বসা আততায়ী তাকে গুলি করে। গুলিটি হাদির মাথায় লাগে এবং তিনি গুরুতর আহত হন।
চিকিৎসা ও মৃত্যু
গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হাদিকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দুই দিন পর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তার মৃত্যুর খবর আসে।
মামলার অগ্রগতি ও গ্রেপ্তার
হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় গত ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। পরে হাদির মৃত্যুর পর মামলাটিতে হত্যা ধারা যুক্ত করা হয়।
এ পর্যন্ত মামলায় মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা হুমায়ুন কবির ও মা হাসি বেগম, স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, রেন্ট-এ-কার ব্যবসায়ী মুফতি মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, সহযোগী মো. কবির এবং ভারতে পালাতে সহায়তাকারী হিসেবে চিহ্নিত সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















