০৭:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
মিয়ানমারের অসম্পূর্ণ সাধারণ নির্বাচন: জানা দরকার পাঁচটি বিষয় জেলগেট থেকে ফের গ্রেপ্তার লক্ষ্মীপুর আওয়ামী লীগ নেতা বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় রাষ্ট্রপতির দেশে ও বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে বড় উল্লম্ফন: বাংলাদেশ ব্যাংক আগামীতে ক্ষমতায় এলে মহানবী (সা.)-এর ন্যায়পরায়ণতার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করবো: তারেক রহমান বিশ্বজুড়ে স্ট্রিমিং চাহিদায় কোরিয়ান নাটকের রপ্তানি ঊর্ধ্বমুখী শহরে বাড়ছে শিয়ালের উপস্থিতি, নগর পরিবেশে বন্যপ্রাণীর অভিযোজন সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ায় উপকূলীয় শহরের নগর পরিকল্পনায় বড় পরিবর্তন এশিয়ায় উন্নত চিপ উৎপাদন বাড়ায় বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহে পরিবর্তন গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অচলাবস্থা, কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই সৈকতে হামলা, নিরাপত্তাহীনতায় অস্ট্রেলিয়ান ইহুদিরা

সিডনির বন্ডাই সৈকতে হনুক্কা উৎসবে বন্দুকধারীদের হামলার পর অস্ট্রেলিয়ার ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘদিনের জমে থাকা ভয় বাস্তবে রূপ নিয়েছে। আনন্দের উৎসব মুহূর্তে পরিণত হয় রক্তাক্ত আতঙ্কে, যেখানে প্রাণ হারান অন্তত ১৫ জন। এই হামলা শুধু একটি উৎসবকে নয়, গোটা সম্প্রদায়ের নিরাপত্তাবোধকে নাড়িয়ে দিয়েছে ।

দীর্ঘদিনের ভয়, নিত্যদিনের বাস্তবতা
অস্ট্রেলিয়ায় বেড়ে ওঠা বহু ইহুদির কাছে সশস্ত্র প্রহরা, উঁচু দেয়াল আর কড়া নিরাপত্তা নতুন কিছু নয়। সিনাগগ, স্কুল, শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র এমনকি বৃদ্ধাশ্রমেও নিয়মিত অস্ত্রধারী পাহারা তাদের জীবনের অংশ। বহু পরিবার ইউরোপের নিপীড়ন থেকে পালিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছিল, কিন্তু প্রজন্ম পেরিয়েও নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি তাদের পিছু ছাড়েনি।

হামলার রাতের বিভীষিকা
ডিসেম্বরের ওই সন্ধ্যায় বন্ডাই সৈকতে শিশুদের নিয়ে উৎসব করছিল পরিবারগুলো। হঠাৎ গুলির শব্দে মাটিতে শুয়ে পড়ে সন্তানদের ঢেকে রাখেন অভিভাবকরা। একজন রাব্বি গুরুতর আহত হন। অনেক শিশুই বুঝে উঠতে পারেনি কেন উৎসবের মাঝে এমন ভয়ংকর দৃশ্য নেমে এল।

গাজা যুদ্ধের প্রভাব ও বাড়তে থাকা বিদ্বেষ
দুই বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদি বিরোধী হামলা, সিনাগগে অগ্নিসংযোগ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর বেড়েছে। হামাসের ইসরায়েল আক্রমণ ও গাজা যুদ্ধের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। অনেক ইহুদি মনে করেন, রাজনৈতিক উত্তেজনার ছায়ায় তাদের পরিচয় তাদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে দিচ্ছে।

সরকারের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ
হামলার পর সরকার পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো ও ঘৃণা জনিত অপরাধ আইন কঠোর করার ঘোষণা দিলেও অনেকের অভিযোগ, প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল। সম্প্রদায়ের একাংশ মনে করে, সতর্কবার্তা উপেক্ষা করায় এমন প্রাণঘাতী ঘটনা ঘটেছে।

শিশুদের প্রশ্ন, অভিভাবকদের অসহায়তা
হামলার পর ইহুদি পরিবার গুলোর সামনে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে সন্তানদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া। কেন তাদের স্কুলে কটূক্তি লেখা হয়, কেন উৎসবে গুলি চলে—এসবের সহজ ব্যাখ্যা নেই। অনেক মা-বাবা শুধু এটুকু বলতে পারছেন, পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে যারা ঘৃণাকে বেছে নেয়।

ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ
এই হামলা অস্ট্রেলিয়ান ইহুদিদের মনে নিজের দেশেই স্থান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। প্রকাশ্যে পরিচয় দেখানো আর নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য খুঁজতে গিয়ে তারা যেন দড়ির সেতুতে হাঁটছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

মিয়ানমারের অসম্পূর্ণ সাধারণ নির্বাচন: জানা দরকার পাঁচটি বিষয়

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই সৈকতে হামলা, নিরাপত্তাহীনতায় অস্ট্রেলিয়ান ইহুদিরা

০১:০১:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

সিডনির বন্ডাই সৈকতে হনুক্কা উৎসবে বন্দুকধারীদের হামলার পর অস্ট্রেলিয়ার ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘদিনের জমে থাকা ভয় বাস্তবে রূপ নিয়েছে। আনন্দের উৎসব মুহূর্তে পরিণত হয় রক্তাক্ত আতঙ্কে, যেখানে প্রাণ হারান অন্তত ১৫ জন। এই হামলা শুধু একটি উৎসবকে নয়, গোটা সম্প্রদায়ের নিরাপত্তাবোধকে নাড়িয়ে দিয়েছে ।

দীর্ঘদিনের ভয়, নিত্যদিনের বাস্তবতা
অস্ট্রেলিয়ায় বেড়ে ওঠা বহু ইহুদির কাছে সশস্ত্র প্রহরা, উঁচু দেয়াল আর কড়া নিরাপত্তা নতুন কিছু নয়। সিনাগগ, স্কুল, শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র এমনকি বৃদ্ধাশ্রমেও নিয়মিত অস্ত্রধারী পাহারা তাদের জীবনের অংশ। বহু পরিবার ইউরোপের নিপীড়ন থেকে পালিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছিল, কিন্তু প্রজন্ম পেরিয়েও নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি তাদের পিছু ছাড়েনি।

হামলার রাতের বিভীষিকা
ডিসেম্বরের ওই সন্ধ্যায় বন্ডাই সৈকতে শিশুদের নিয়ে উৎসব করছিল পরিবারগুলো। হঠাৎ গুলির শব্দে মাটিতে শুয়ে পড়ে সন্তানদের ঢেকে রাখেন অভিভাবকরা। একজন রাব্বি গুরুতর আহত হন। অনেক শিশুই বুঝে উঠতে পারেনি কেন উৎসবের মাঝে এমন ভয়ংকর দৃশ্য নেমে এল।

গাজা যুদ্ধের প্রভাব ও বাড়তে থাকা বিদ্বেষ
দুই বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদি বিরোধী হামলা, সিনাগগে অগ্নিসংযোগ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর বেড়েছে। হামাসের ইসরায়েল আক্রমণ ও গাজা যুদ্ধের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। অনেক ইহুদি মনে করেন, রাজনৈতিক উত্তেজনার ছায়ায় তাদের পরিচয় তাদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে দিচ্ছে।

সরকারের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ
হামলার পর সরকার পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো ও ঘৃণা জনিত অপরাধ আইন কঠোর করার ঘোষণা দিলেও অনেকের অভিযোগ, প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল। সম্প্রদায়ের একাংশ মনে করে, সতর্কবার্তা উপেক্ষা করায় এমন প্রাণঘাতী ঘটনা ঘটেছে।

শিশুদের প্রশ্ন, অভিভাবকদের অসহায়তা
হামলার পর ইহুদি পরিবার গুলোর সামনে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে সন্তানদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া। কেন তাদের স্কুলে কটূক্তি লেখা হয়, কেন উৎসবে গুলি চলে—এসবের সহজ ব্যাখ্যা নেই। অনেক মা-বাবা শুধু এটুকু বলতে পারছেন, পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে যারা ঘৃণাকে বেছে নেয়।

ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ
এই হামলা অস্ট্রেলিয়ান ইহুদিদের মনে নিজের দেশেই স্থান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। প্রকাশ্যে পরিচয় দেখানো আর নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য খুঁজতে গিয়ে তারা যেন দড়ির সেতুতে হাঁটছেন।