ভোরের আলোয় রামাল্লাহর আশপাশের পাহাড় গুলো যখন ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হয়ে উঠছিল, তখনই পথ বদলাতে বাধ্য হন কয়েকজন ফিলিস্তিনি পথচারী। শতাব্দী পুরোনো ঝরনার দিকে নামা মাটির পথে সামনে পড়ে যায় নতুন বসতি স্থাপনকারীদের তাবু। সংঘাত এড়াতে হাঁটা ছোট করে ঘুরে যেতে হয়। পশ্চিম তীরে এখন এই অভিজ্ঞতা আর ব্যতিক্রম নয়, বরং নিয়মিত বাস্তবতা।
সংকুচিত ভূমি, বদলে যাওয়া হাঁটার অভ্যাস
একসময় ফিলিস্তিনিরা গ্রাম থেকে গ্রামে দীর্ঘ পথ হেঁটে যেতেন। এখন নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে সেই সরল পথ গুলো ভেঙে বৃত্তাকারে সীমিত হয়ে গেছে। অভিজ্ঞ পথচারী জামাল আরুরি বলেন, আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খোলা ভূমিতে হাঁটা যেত, এখন এক জায়গায় ঘুরপাক খেতে হয়। বসতি স্থাপনকারীদের হামলা ও ভয়ই এই পরিবর্তনের মূল কারণ।
নতুন বসতি, পুরোনো পথের মৃত্যু
পশ্চিম তীরের উপত্যকা জুড়ে নতুন নতুন বসতি গড়ে উঠছে। এসব বসতি প্রায়ই সরকারি অনুমোদন ছাড়াই তৈরি হলেও অবকাঠামো ও নিরাপত্তা সহায়তা পায়। এর ফলে আশপাশের ভূমি কার্যত ফিলিস্তিনিদের জন্য নিষিদ্ধ এলাকায় পরিণত হচ্ছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুই হাজার তেইশ সাল থেকে এসব প্রকল্পের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ জমির নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বসতি স্থাপনকারীদের হাতে।

হেঁটে চলার আগে নতুন ধরনের প্রস্তুতি
এখন পশ্চিম তীরে হাঁটতে বেরোনোর আগে শুধু জুতা বা খাবার নয়, পথের নিরাপত্তাও যাচাই করতে হয়। নতুন রাস্তা, সামরিক টহল বা ড্রোনের উপস্থিতি আগেই দেখে নিতে হয়। অনেক সময় মাঝপথে নতুন কাঁচা রাস্তা বা বসতি পড়লে নীরবে ফিরে আসাই একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়ায়।
কমিউনিটির ক্ষয় ও টিকে থাকার লড়াই
এই বিস্তারের সবচেয়ে বড় আঘাত পড়েছে পশুপালক ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ওপর। ভয় ও চাপের মুখে বহু পরিবার তাদের বসতি ছেড়ে চলে গেছে। পথচারীরাও দূরের পাহাড় বা উপত্যকা এড়িয়ে শহরের প্রান্তে সীমাবদ্ধ থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। তবু আরুরি ও তাঁর সঙ্গীরা হাঁটা চালিয়ে যেতে চান। তাঁদের কাছে প্রতিটি হাঁটা মানে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়া, ভূমির সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















