আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারবিরোধী আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। এই সমঝোতার অংশ হিসেবে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ইসলামী ঐক্য জোটের নেতা মুফতি রশিদ বিন ওয়াকাস এবং জাতীয় পার্টির নেতা মোস্তাফা জামাল হায়দারসহ সাতজন নেতার জন্য মোট আটটি সংসদীয় আসন ছেড়ে দিয়েছে দলটি।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দীর্ঘ আলোচনা ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতেই একযোগে আন্দোলনে থাকা শরিক দলগুলোর সঙ্গে এই নির্বাচনী সমঝোতা হয়েছে।
কারা কোন আসনে লড়বেন
সমঝোতা অনুযায়ী নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়া-২ আসন থেকে নির্বাচন করবেন। কাজী জাফর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির নেতা মোস্তাফা জামাল হায়দার পিরোজপুর-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ নড়াইল-২ এবং ইসলামী ঐক্য জোটের নেতা মুফতি রশিদ বিন ওয়াকাস যশোর-৫ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন।
এ ছাড়া গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর পটুয়াখালী-৩ এবং দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান ঝিনাইদহ-৪ আসনে নির্বাচন করবেন। বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ঢাকা-১২ এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

নতুন যোগদানকারীদের আসন নির্ধারণ
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল জানান, সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া ডা. রেদোয়ান আহমেদের জন্য কুমিল্লা-৭ আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ শিগগিরই বিএনপিতে যোগ দেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, তার জন্য ঢাকা-১৩ আসন নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রতীক ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা
বিএনপি মহাসচিব জানান, শরিক দলগুলোর প্রার্থীরা নিজ নিজ দলের প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নেবেন। আর যারা বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন, তারা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, যেসব আসন শরিকদের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, সেখানে বিএনপি কোনো প্রার্থী দেবে না। কেউ ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আগের সমঝোতা ও আসন বণ্টনের চিত্র
এর আগে মঙ্গলবার জামায়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের জন্য চারটি আসন ছাড়ার ঘোষণা দেয় বিএনপি। এসব আসনের মধ্যে রয়েছে নীলফামারী-১, নারায়ণগঞ্জ-৪, সিলেট-৫ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২। বিএনপি ইতোমধ্যে তিনশ আসনের মধ্যে ২৭২টিতে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। অবশিষ্ট আসনগুলোর একটি অংশ শরিকদের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং বাকি আসন নিয়ে আলোচনা এখনো চলমান রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
#বিএনপি #নির্বাচনীসমঝোতা #মান্না #নুরুলহকনুর #সাইফুলহক #জোনায়েদসাকি #ফরিদুজ্জামানফরহাদ #মুফতিরশিদবিনওয়াকাস #মোস্তাফাজামালহায়দার #জাতীয়নির্বাচন
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















