ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
বুধবার বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি মো. মনজুর আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে শুনানি
শুনানিকালে মাহমুদুর রহমান মান্নার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান।
শুনানি শেষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার দাবিতে করা রিট আবেদন আদালত খারিজ করেছেন। এই আদেশের ফলে মান্না নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা হারালেন।
আপিলের ঘোষণা
রিট খারিজের আদেশের প্রতিক্রিয়ায় মান্নার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
ঋণখেলাপির পটভূমি
গত ১০ ডিসেম্বর মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের কাছে বকেয়া ঋণ আদায়ে কলব্যাক নোটিশ জারি করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখা। নোটিশে মোট ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ পরিশোধ না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শাখা প্রধান তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরিত এই নোটিশটি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মান্না এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর ঠিকানায় পাঠানো হয়।
প্রতিষ্ঠানের মালিকানা ও ঋণের তথ্য
আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডে মাহমুদুর রহমান মান্নার মালিকানা ৫০ শতাংশ। ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর মালিকানা ২৫ শতাংশ এবং তার স্ত্রী ও পরিচালক ইসমত আরা লাইজুর মালিকানা ২৫ শতাংশ।
ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ২২ কোটি টাকা বিনিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তবে নিয়মিত মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বকেয়া বাড়তে বাড়তে বর্তমান অঙ্কে পৌঁছেছে। লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধে কোনো অগ্রগতি না থাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা হিসেবে এই নোটিশ জারি করা হয়।
নোটিশে আরও বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ বকেয়া পরিশোধ না হলে ব্যাংক বাধ্য হয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















