সরকারের অবস্থান ও নিরাপত্তা প্রস্তুতি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে স্বাগত জানিয়েছে সরকার। বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনকে সরকার ইতিবাচকভাবে দেখছে এবং তার দলের পক্ষ থেকে যেসব সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে, সবই দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি বিএনপির সঙ্গে পরামর্শ করেই দেখা হচ্ছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এই ব্রিফিংয়ে সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহমদও উপস্থিত ছিলেন। শফিকুল আলম আরও জানান, যুবনেতা শরিফ ওসমান হাদী হত্যাকাণ্ডের তদন্ত সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে নিচ্ছে। এ ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু সূত্র পাওয়া গেছে এবং ইতোমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১৭ বছর পর দেশে ফেরা
দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাসে থাকার পর আগামী বৃহস্পতিবার সকালে দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। বিএনপির ভাষ্য অনুযায়ী, এই প্রত্যাবর্তন দলটির জন্য রাজনৈতিকভাবে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি আবেগঘন একটি মুহূর্ত। বুধবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ তারেক রহমানের ফেরার বিস্তারিত সময়সূচি তুলে ধরেন।
ভ্রমণ ও আগমনের সূচি
পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারেক রহমান লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে রওনা হবেন। তার সঙ্গে থাকবেন স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান। এছাড়া একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও তিনজন ব্যক্তিগত সহকারীও তার সফরসঙ্গী হবেন। বিমানটি বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
জনসমাবেশ ও কর্মসূচি
ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তিনি যাবেন ৩০০ ফিট সড়কের সার্ভিস লেনে আয়োজিত এক জনসংবর্ধনায়। সেখানে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেবেন। নগরবাসীর ভোগান্তি ও যানজট এড়াতে শুধু তারেক রহমানই বক্তব্য রাখবেন বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমদ।
এরপর তিনি বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার খোঁজখবর নেবেন। খালেদা জিয়া বর্তমানে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন। সেখান থেকে তিনি গুলশানে নির্ধারিত বাসভবনে ফিরবেন।
পরবর্তী দিনের কর্মসূচি
শুক্রবার জুমার নামাজের পর তারেক রহমান বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করবেন। একই দিনে তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
শনিবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হবেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের কাছে ওসমান হাদীর কবর জিয়ারত করার কথা রয়েছে তার। পরে তিনি জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান, যা পঙ্গু হাসপাতাল নামে পরিচিত, সেখানে গিয়ে জুলাই ২০২৪ সালের আন্দোলনে আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
পেছনের প্রেক্ষাপট
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তারেক রহমান গ্রেপ্তার হন এবং প্রায় ১৮ মাস কারাভোগ করেন। ২০০৮ সালে মুক্তি পাওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি যুক্তরাজ্যে যান। সেখান থেকেই দীর্ঘদিন বিএনপির নেতৃত্ব দিয়ে এলেও, প্রায় ১৭ বছর পর দেশে ফিরে এখন তিনি সরাসরি দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















