নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত না হলে তা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না—এমন অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জানিয়েছে, কাউকে বিশেষ ভিআইপি সুবিধা দিয়ে অন্যদের তা থেকে বঞ্চিত করা নির্বাচন আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন। বুধবার নির্বাচন কমিশনের কাছে এ অভিযোগ তোলে দলটি।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক
বুধবার বিকেলে রাজধানীর নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন জামায়াতের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, নির্বাচনে সবার জন্য সমান মাঠ থাকা জরুরি। কিন্তু কাউকে যদি ভিআইপি পর্যায়ের নানা সুবিধা দেওয়া হয় এবং অন্যদের তা না দেওয়া হয়, তাহলে সেটিকে কখনোই সমান সুযোগ বলা যায় না।
নির্বাচনী প্রচার ও নিরাপত্তা উদ্বেগ
আহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানান, নির্বাচনে জামায়াতের আমির, সেক্রেটারি জেনারেলসহ কেন্দ্রীয় ও শীর্ষ নেতারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম চালাবেন। এ জন্য তাদের বড় পরিসরে যাতায়াত করতে হবে। তিনি বলেন, এসব নেতার নিরাপত্তার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের অবস্থান
জামায়াতের নেতা জানান, নির্বাচন কমিশন তাদের জানিয়েছে যে নিরাপত্তার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত। তবে কমিশন নিজ উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
বৈঠকে একটি বড় রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগও তোলে জামায়াত। আহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, একটি বড় দল বিভিন্ন ধরনের কার্ড বিতরণ করছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। এসব কার্ডের মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, যা সরাসরি নির্বাচন বিধি ও আচরণবিধির লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমেই তারা এসব কার্ডের তথ্য পেয়েছেন। কথিতভাবে কোটি কোটি কার্ড বিতরণের কথা বলা হচ্ছে এবং প্রতিটি কার্ডের বিপরীতে হাজার বা লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
সিসিটিভি বসানোর দাবি
নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর দাবিও জানায় জামায়াত। আহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, সিসিটিভি না থাকলে সন্ত্রাসী ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যক্তিরা নির্বাচন বানচালের সুযোগ পেতে পারে। ক্যামেরা বসানো হলে এ ধরনের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে বলে তারা মনে করেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
বৈঠকে সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। জামায়াত প্রতিনিধি দল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি তালিকাভুক্ত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের সুপারিশ করেছে, যাতে নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ থাকে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















