মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন।
মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে।
তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু।
তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক
মাহমুদুল হক
‘মাঝে না সিগ্রেট কমিয়ে দিয়েছিলি?
‘কেন?’
‘এতো সিগ্রেট টানছিস কেন আজ?’
‘কি জানি–‘
‘তুই না বলিস, বেশি সিগ্রেট খেলে ঘুম হয় না?’
‘মনে করিয়ে দিবি তো!’
‘আমি জানি–‘
‘কি জানিস?’
‘তোর মন খারাপ।’
‘কই?’
‘নিজের মুখ তো আর দেখতে পাচ্ছিস না।’
‘তোরও তো মন খারাপ!’
‘বললেই হ’লো–‘
‘অতো চোটপাট করলে কে তখন?’
‘সে তো তুই–‘
‘পান্ডুয়াটি! কাটমোল্লা ব’লে গাল দিসনি?’
খোকার একটা হাত ধ’রে আবার ছেড়ে দিয়ে বললে, ‘কই দেখা তো কোথায় ফোস্কা পড়েছে!’
খোকা বললে, ‘তুই যদি আর কোনোদিন আমার সঙ্গে মুখ কালো ক’রে কথা বলিস, তাহলে তার ফল খুব ভালো হবে না, আগে থেকেই ব’লে দিচ্ছি, আমি কিন্তু ভাগোয়াট হ’য়ে যাবো–‘
‘দিন দিন তোর আবদার বেড়ে যাচ্ছে।’
‘আর তুই বুড়ি হ’য়ে যাচ্ছিস–‘
‘বুড়ি তো হবোই, তোর মতো?’
‘তুই বুড়ি হ’তে পারবি না।’
খোকা সিগ্রেটের প্যাকেটে হাত দিতেই রঞ্জ কেড়ে নিলো, বললে,
‘ খবরদার আর একটাও ধরাতে পারবি না–‘
খোকা বললে, ‘তোর এতো মাথাব্যথা কিসের? আমার দিকে তোর খেয়াল আছে কোনো?’
Sarakhon Report 



















