জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি শেষ পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন সমমনা দলগুলোর জোটে যোগ দিয়েছে। রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
জোটে নতুন সংযোজন
ডা. শফিকুর রহমান জানান, এনসিপির পাশাপাশি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বা এলডিপিও নতুন করে এই জোটে যুক্ত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আটদলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকলেও এনসিপির কোনো প্রতিনিধি সেখানে ছিলেন না। তবে এলডিপি সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমেদসহ জোটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এনসিপির সম্মতি ও আলোচনা
জামায়াত আমির জানান, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জোট নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে জোটে যোগ দিতে সম্মতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, কিছুক্ষণ আগেই এনসিপির সঙ্গে বৈঠক শেষ হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে না পারলেও দলীয় অভ্যন্তরীণ আলোচনা শেষে তারা রাতের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে বলে জানিয়েছে।
নির্বাচনী প্রস্তুতি ও আসন ভাগাভাগি
আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জোটের শরিকদের মধ্যে আসন ভাগাভাগির আলোচনা প্রায় শেষ পর্যায়ে। খুব শিগগিরই আলোচনায় বসে শান্তিপূর্ণভাবে সমঝোতায় পৌঁছানো হবে এবং এ বিষয়ে কোনো জটিলতা হবে না বলে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন।
অন্যান্য দলের আগ্রহ

তিনি আরও জানান, আরও কয়েকটি দল জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে সময়ের সীমাবদ্ধতার কারণে এই মুহূর্তে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। নির্বাচনের পর এসব দলের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ রয়েছে জোটের।
নির্বাচন ও মাঠ সমতা নিয়ে বক্তব্য
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, জোট নির্ধারিত সময়েই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১২ ফেব্রুয়ারির তারিখ কোনো অবস্থাতেই পরিবর্তন করা উচিত নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, এখনো নির্বাচনের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হয়নি। সরকারের ও নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি সতর্ক করেন, এ বিষয়ে ব্যর্থতা জনগণ মেনে নেবে না।

জোটের পটভূমি
জুলাইয়ের গণআন্দোলনের পর জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নিজামে ইসলাম পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি একসঙ্গে আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে সব আসনে একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু করে। পরে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি যুক্ত হয়ে আটদলীয় একটি জোট গড়ে ওঠে এবং তারা বিভিন্ন দাবিতে যৌথ আন্দোলন চালায়।
জোটের পরিধি বৃদ্ধি
সর্বশেষ এনসিপি ও এলডিপির যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে জামায়াত নেতৃত্বাধীন এই রাজনৈতিক জোটে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দশটিতে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















