০১:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন

  • Sarakhon Report
  • ০৯:৩১:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪
  • 21

 নিজস্ব প্রতিবেদক

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন (রিভিউ) করা হয়েছে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দাখিল করা হয়।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দাখিল করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঁচ ব্যক্তির পক্ষে ৮০৮ পৃষ্ঠার রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া।
আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া জানান, রিভিউ আবেদনটিতে নতুন করে পাঁচ জন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে আমরা আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত থেকে অনুমতি নিয়েছি। রিভিউ আবেদনে প্রাথমিকভাবে মোট ১৪টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। শুনানিকালে আমরা আরও কিছু যুক্তি সংযুক্ত করে আদালতে শুনানি করবো। আশা করছি, শুনানি হবে এবং শুনানি শেষে আদালত ওই রায়টি পুনর্বিবেচনা করে ত্রয়োদশ সংশোধনীকে সাংবিধানিকভাবে ঘোষণা করবেন।
সংবিধানের একটি মূল কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচন। আমাদের দেশের বিভিন্ন কোর্টের রায়ে বলা আছে— গণতন্ত্র সংবিধানের মূল কাঠামো, সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচনও গণতন্ত্রের মূল কাঠামো। সেসব কারণে, আমাদের (রিভিউকারীদের) যুক্তি হচ্ছে ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধানের মূল কাঠামোর সঙ্গে সম্পৃক্ত। কারণ মূল কাঠামো হলো গণতন্ত্র। সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে— জনগণ রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতার মালিক। ফলে জনগণ যদি ভোট দিতে না পারে, তার প্রতিনিধি নির্বাচন না করতে পারে, তাহলে তো তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে না। কাজেই এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করে এবং তারা তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। তাই এই অধিকার সুপ্রিম কোর্ট বাদ দিতে পারে না বলেও রিভিউ আবেদনে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে বলে আইনজীবী জানান।
এর আগে ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে পরে দশম ও এগারোতম জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দেন আদালত। আর এক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেকোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন আদালত।
তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালত তার রায়ে বলেন, আপিল বিভাগের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই আবেদনটি গৃহীত হয়েছে। এর মাধ্যমে ‘সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধনী) আইন ১৯৯৬’ এই নির্দেশের পর থেকে অবৈধ ও সংবিধান-বহির্ভূত ঘোষণা করা হলো। তবে আইনসম্মত না হলেও (প্রয়োজনের কারণে আইনসম্মত এবং জনগণের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন সুপ্রাচীনকাল ধরে চলে আসা নীতিমালার ভিত্তিতে) আগামী দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করা ত্রয়োদশ সংশোধনীর আওতায়ই হতে পারে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন

০৯:৩১:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪

 নিজস্ব প্রতিবেদক

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন (রিভিউ) করা হয়েছে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দাখিল করা হয়।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দাখিল করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঁচ ব্যক্তির পক্ষে ৮০৮ পৃষ্ঠার রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া।
আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া জানান, রিভিউ আবেদনটিতে নতুন করে পাঁচ জন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে আমরা আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত থেকে অনুমতি নিয়েছি। রিভিউ আবেদনে প্রাথমিকভাবে মোট ১৪টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। শুনানিকালে আমরা আরও কিছু যুক্তি সংযুক্ত করে আদালতে শুনানি করবো। আশা করছি, শুনানি হবে এবং শুনানি শেষে আদালত ওই রায়টি পুনর্বিবেচনা করে ত্রয়োদশ সংশোধনীকে সাংবিধানিকভাবে ঘোষণা করবেন।
সংবিধানের একটি মূল কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচন। আমাদের দেশের বিভিন্ন কোর্টের রায়ে বলা আছে— গণতন্ত্র সংবিধানের মূল কাঠামো, সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচনও গণতন্ত্রের মূল কাঠামো। সেসব কারণে, আমাদের (রিভিউকারীদের) যুক্তি হচ্ছে ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধানের মূল কাঠামোর সঙ্গে সম্পৃক্ত। কারণ মূল কাঠামো হলো গণতন্ত্র। সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে— জনগণ রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতার মালিক। ফলে জনগণ যদি ভোট দিতে না পারে, তার প্রতিনিধি নির্বাচন না করতে পারে, তাহলে তো তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে না। কাজেই এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করে এবং তারা তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। তাই এই অধিকার সুপ্রিম কোর্ট বাদ দিতে পারে না বলেও রিভিউ আবেদনে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে বলে আইনজীবী জানান।
এর আগে ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে পরে দশম ও এগারোতম জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দেন আদালত। আর এক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেকোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন আদালত।
তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালত তার রায়ে বলেন, আপিল বিভাগের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই আবেদনটি গৃহীত হয়েছে। এর মাধ্যমে ‘সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধনী) আইন ১৯৯৬’ এই নির্দেশের পর থেকে অবৈধ ও সংবিধান-বহির্ভূত ঘোষণা করা হলো। তবে আইনসম্মত না হলেও (প্রয়োজনের কারণে আইনসম্মত এবং জনগণের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন সুপ্রাচীনকাল ধরে চলে আসা নীতিমালার ভিত্তিতে) আগামী দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করা ত্রয়োদশ সংশোধনীর আওতায়ই হতে পারে।