০৯:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫
মংলায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ প্রবাসী নারী পর্যটক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৮৩৪ জন পাকিস্তানের দুর্ভিক্ষের বছর? প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রত্যাশীদের আমরণ অনশন ৬৫ ঘণ্টা অতিক্রম, সরকারের নীরবতা অব্যাহত গণভোটের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই: বিএনপি নেতা আমীর খসরু শাহবাগে শিক্ষকদের সমাবেশ ছত্রভঙ্গে পুলিশের পদক্ষেপের পক্ষে ডিএমপি গণভোটের জন্যে সাত দিনের আলটিমেটাম অগ্রহণযোগ্য: সরকারের সমালোচনায় সালাহউদ্দিন শাহবাগে শিক্ষক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ১২০ জন প্রবল বৃষ্টিতে গাবা ম্যাচ বাতিল, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি২০ সিরিজ জিতল ভারত চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করেছে পাকিস্তানি নৌযান ‘পিএনএস সাইফ’

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-১৬৯)

  • Sarakhon Report
  • ১০:৫৬:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 22

শ্রী নিখিলনাথ রায়

রেনেলের কাশীমবাজার দ্বীপের মান- চিত্রে বড়নগরের প্রাধান্য প্রতিপাদনের জন্য তাহার নাম বৃহদক্ষরে লিখিত হইয়াছে। বড়নগর তৎকালীন মুর্শিদাবাদের একরূপ প্রান্ত- দেশে অবস্থিত ছিল; অষ্টাদশ শতাব্দীর মুর্শিদাবাদ প্রায় বড়নগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। রাজা উদয়নারায়ণের ধ্বংসের পর রাজশাহী জমীদারী নাটোর-রাজবংশের করায়ত্ত হইলে, বড়নগর তাঁহাদের মুর্শিদাবাদের বাসস্থানরূপে নির্দিষ্ট হয়। রাজধানী মুর্শিদাবাদে তৎকালে’ বঙ্গের প্রায় সমস্ত জমীদারদিগেরই এক একটি বাসস্থান ছিল।

বিশেষতঃ নাটোর- রাজবংশের আদিপুরুষ রঘুনন্দন মুর্শিদাবাদে নায়েব-কাননগোর কার্য্য করিতেন বলিয়া, তাঁহাকে মুর্শিদাবাদেই থাকিতে হইত। রঘুনন্দন প্রথমতঃ পুঁটিয়া রাজসংসারে সামাঞ্জকর্ম্মে নিযুক্ত হন; পরে পুটিয়ার ‘রাজা দর্পনারায়ণ তাঁহাকে পুঁটিয়ার উকীল নিযুক্ত করিয়া, প্রথমে ঢাকায় নবাবদরবারে পাঠাইয়া দেন। তথা হইতে তিনি মুর্শিদকুলী খাঁর সহিত মুর্শিদাবাদে আগমন করেন। রঘুনন্দন স্বীয় বুদ্ধিমত্তায় ‘ ক্রমে নায়েব কাননগোর পদ প্রাপ্ত হন এবং মুর্শিদকুলী খাঁর প্রিয়পাত্র হুইয়া, তাঁহার অনুগ্রহে অনেক জমীদারী লাভ করেন।

এই সমস্ত জমী- দারী তাঁহার ভ্রাতা রামজীবনের নামে গৃহীত হইয়াছিল। রামজীবনের পুত্র কুমার কালিকাপ্রসাদ, রামকান্তকে দত্তক পুত্র গ্রহণ করেন এবং তাঁহার জনককে চৌগ্রাম ও ইলামাবাদ নামে দুই পরগণার জমীদারী প্রদান করেন। রামজীবনের মৃত্যুর পর কালু কোঙার অল্পবয়সে পরলোকগত হইলে, রামকান্ত নাটোরের সমস্ত জমীদারী ও ঐশ্বর্য্যের অধীশ্বর হন। এই রামকান্তের পত্নীই ভারতবিখ্যাতা প্রাতঃস্মরণীয়া -মহারাণী ভবানী। রাণী ভবানী রাজসাহী জেলার অন্তঃপাতী ছাতিম গ্রামের আত্মা- রাম চৌধুরীর কন্যা; তাঁহার মাতার নাম জয়দুর্গা।

নাটোর রাজ- সংসারে দয়ারাম নামে একজন তিলিজাতীয় কর্মচারী ছিলেন; তাঁহারই চেষ্টায় নাটোর রাজবংশের অসীম সম্পত্তির সুবন্দোবস্ত হইয়া ছিল। দয়ারাম বহুদিন পর্য্যন্ত নাটোর রাজসংসারে কার্য্য করিয়া- ছিলেন। এই। দয়ারামই বর্তমান দীঘাপতিয়া রাজবংশের আদি- গুরুষ। রামকান্ত বাঙ্গলা ১১৫৩ সালে পরলোকগত হইলে, রাণী ভবানী তাঁহার সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারিণী হইয়া, বাঙ্গলার জমী- দারদিগের শ্রেষ্ঠস্থান অধিকার করিয়া বসেন। তাঁহার সমস্ত জমীদারী হইতে প্রায় দেড় কোটা টাকা কর আদার হইত; তন্মধ্যে ৭০ লক্ষ সরকারের রাজস্ব দেওয়া হইত।

জনপ্রিয় সংবাদ

মংলায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ প্রবাসী নারী পর্যটক

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-১৬৯)

১০:৫৬:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শ্রী নিখিলনাথ রায়

রেনেলের কাশীমবাজার দ্বীপের মান- চিত্রে বড়নগরের প্রাধান্য প্রতিপাদনের জন্য তাহার নাম বৃহদক্ষরে লিখিত হইয়াছে। বড়নগর তৎকালীন মুর্শিদাবাদের একরূপ প্রান্ত- দেশে অবস্থিত ছিল; অষ্টাদশ শতাব্দীর মুর্শিদাবাদ প্রায় বড়নগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। রাজা উদয়নারায়ণের ধ্বংসের পর রাজশাহী জমীদারী নাটোর-রাজবংশের করায়ত্ত হইলে, বড়নগর তাঁহাদের মুর্শিদাবাদের বাসস্থানরূপে নির্দিষ্ট হয়। রাজধানী মুর্শিদাবাদে তৎকালে’ বঙ্গের প্রায় সমস্ত জমীদারদিগেরই এক একটি বাসস্থান ছিল।

বিশেষতঃ নাটোর- রাজবংশের আদিপুরুষ রঘুনন্দন মুর্শিদাবাদে নায়েব-কাননগোর কার্য্য করিতেন বলিয়া, তাঁহাকে মুর্শিদাবাদেই থাকিতে হইত। রঘুনন্দন প্রথমতঃ পুঁটিয়া রাজসংসারে সামাঞ্জকর্ম্মে নিযুক্ত হন; পরে পুটিয়ার ‘রাজা দর্পনারায়ণ তাঁহাকে পুঁটিয়ার উকীল নিযুক্ত করিয়া, প্রথমে ঢাকায় নবাবদরবারে পাঠাইয়া দেন। তথা হইতে তিনি মুর্শিদকুলী খাঁর সহিত মুর্শিদাবাদে আগমন করেন। রঘুনন্দন স্বীয় বুদ্ধিমত্তায় ‘ ক্রমে নায়েব কাননগোর পদ প্রাপ্ত হন এবং মুর্শিদকুলী খাঁর প্রিয়পাত্র হুইয়া, তাঁহার অনুগ্রহে অনেক জমীদারী লাভ করেন।

এই সমস্ত জমী- দারী তাঁহার ভ্রাতা রামজীবনের নামে গৃহীত হইয়াছিল। রামজীবনের পুত্র কুমার কালিকাপ্রসাদ, রামকান্তকে দত্তক পুত্র গ্রহণ করেন এবং তাঁহার জনককে চৌগ্রাম ও ইলামাবাদ নামে দুই পরগণার জমীদারী প্রদান করেন। রামজীবনের মৃত্যুর পর কালু কোঙার অল্পবয়সে পরলোকগত হইলে, রামকান্ত নাটোরের সমস্ত জমীদারী ও ঐশ্বর্য্যের অধীশ্বর হন। এই রামকান্তের পত্নীই ভারতবিখ্যাতা প্রাতঃস্মরণীয়া -মহারাণী ভবানী। রাণী ভবানী রাজসাহী জেলার অন্তঃপাতী ছাতিম গ্রামের আত্মা- রাম চৌধুরীর কন্যা; তাঁহার মাতার নাম জয়দুর্গা।

নাটোর রাজ- সংসারে দয়ারাম নামে একজন তিলিজাতীয় কর্মচারী ছিলেন; তাঁহারই চেষ্টায় নাটোর রাজবংশের অসীম সম্পত্তির সুবন্দোবস্ত হইয়া ছিল। দয়ারাম বহুদিন পর্য্যন্ত নাটোর রাজসংসারে কার্য্য করিয়া- ছিলেন। এই। দয়ারামই বর্তমান দীঘাপতিয়া রাজবংশের আদি- গুরুষ। রামকান্ত বাঙ্গলা ১১৫৩ সালে পরলোকগত হইলে, রাণী ভবানী তাঁহার সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারিণী হইয়া, বাঙ্গলার জমী- দারদিগের শ্রেষ্ঠস্থান অধিকার করিয়া বসেন। তাঁহার সমস্ত জমীদারী হইতে প্রায় দেড় কোটা টাকা কর আদার হইত; তন্মধ্যে ৭০ লক্ষ সরকারের রাজস্ব দেওয়া হইত।