শ্রী নিখিলনাথ রায়
প্রথমতঃ তিনি মাসিক ৮০০০ টাকা বৃত্তি পাইতেন; পরে উহা কমিতে কমিতে ১০০০ টাকায় পরিণত হয়। যিনি নিজে লক্ষাধিক মুদ্রার সম্পত্তি দেবসেবায় নিদ্দেশ করিয়াছিলেন, তিনি যে কিজন্য গবর্ণমেন্টের নিকট বৃত্তিপ্রার্থিনী হইলেন, ইহা নিতান্ত রহস্তময় সন্দেহ নাই। দেবতার জন্ম যে সম্পত্তি অর্পিত হইয়াছে, তাহার দ্বারা তিনি আত্মোদর পূরণের পক্ষপাতিনী ছিলেন না, ইহা ব্যতীত আর কি বলা যাইতে পারে? এইরূপে কঠোর ব্রহ্মচর্য্য অবলম্বন পূর্ব্বক দেবসেবায়, ব্রাহ্মণসেবায়, ও দীনপ্রতিপালনে আপনার জীবনকে উৎসর্গীকৃত করিয়া রাণী ভবানী ৭৯ বৎসর বয়সে বড়নগরে ভাগীরথীতীরে বিশ্বজননী ভবানীসহ চিরসম্মিলিত হন।
যিনি হিন্দুবিধবার অত্যুচ্চ আদর্শ দেখাইয়া, স্বীয় পবিত্র নামকে প্রাতঃস্মরণীয় করিয়া গিয়াছেন, তাঁহার সেই আদর্শ দিন’ ‘দিন বঙ্গভূমি হইতে লয় পাইতে বসিয়াছে। বঙ্গদেশে কত রাণী কত মহারাণী জন্মগ্রহণ করিয়াছেন, কিন্তু রাণী ভবানীর ন্যায় এমন সনাতন আদর্শ আর কখনও শুনিতে বা দেখিতে পাওয়া গেল না। বর্তমান সময়ে একজনমাত্র তাঁহার আদর্শ চরিত্রের অনুকরণে আপনার পবিত্র নাম প্রচার করিয়া গিয়াছেন। তাঁহার নাম মহারাণী শরৎসুন্দরী। সেই দ্বিতীয়া ভবানীর পবিত্র চরিত্র কিছুদিনের জন্য।
বঙ্গভূমিতে হিন্দুবিধবা-নামে এক শিব প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। এইরূপ কথিত আছে যে, উত্তর ভবানীশ্বর মন্দিরই এক সময়েই নিম্মিত হয়। বড়নগরের ভবানীশ্বর-মন্দিরে যে শিলালিপি ছিল, তাহার অন্তর্ধান ঘটিয়াছে; সুতরাং কোন অব্দে তাহা নির্মিত হয়, বলিতে পারা যায় না। কাশীর ভবানীশ্বর মন্দিরে এইরূপ লিখিত আছে:-