১০:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
সাঙ্গু নদী: বান্দরবানের হৃদয়ে পাহাড়, নদী আর জীবনের ছন্দ একটি বিষয় এখনও জেন- জি দের জন্য ম্যানুয়ালি আছে জাপানে ভালুকের হামলা থামছে না, নীতিতে ‘নিরাপত্তা–সংরক্ষণ’ সমন্বয়ের ভাবনা” নোরা ফাতেহি তার নতুন গান শেয়ার করলেন, শুরু হলো তার পপ গার্ল যুগ ব্ল্যাক ফ্রাইডের আগেই এম৪ ম্যাকবুক এয়ারে রেকর্ড ছাড় বিশ্বের সেরা ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার স্বীকৃতি পেল সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফাকিহ হাসপাতাল সংখ্যালঘু কলেজছাত্রী শমরিয়া রানী নিখোঁজের ১৫ দিন: পরিবার ও মানবাধিকার কর্মীদের রহস্যজনক আচরণের অভিযোগ তারকাখচিত রক অ্যান্ড রোল হল অব ফেম ২০২৫, একযোগে ডিসনি প্লাসে সম্প্রচার  গুগল প্লে ও ইউটিউবের নতুন কেনা সিনেমা আর পড়বে না মুভিজ অ্যানিওয়্যারে সাহিত্য প্রচারে শারজাহের ভূমিকা: সংস্কৃতি ও জ্ঞানের সেতুবন্ধন

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১০৬)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 28
শশাঙ্ক মণ্ডল

কৃষি ও কৃষক

চতুর্থ অধ্যায়

বরিশাল জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হিন্দু জমিদারদের প্রাধান্য ছিল, চাষিদের তলাকার অংশে মুসলমান কৃষকদের প্রাধান্য ছিল।  কৃষকপ্রজা পার্টির সে যুগে বরিশালের কৃষকদের মধ্যে বিশাল প্রভাব ছিল; তারা ১৯৪০- ৪২ এর দিকে ঋণসালিসি বোর্ডের কাছে হাজার হাজার কৃষকের ঋণ মকুবের ব্যাপারে আবেদন করছেন তা লক্ষ করা গেল। এ সময়ে বাউফল, পটুয়াখালি থানায় যথাক্রমে ৩৩১৩ এবং ১৮৯০টি আবেদনপত্র খতিয়ে দেখছেন ঋণসালিসি বোর্ড তা সরকারি নথিতে লক্ষ করা যাচ্ছে। কৃষকনেতা খন্দকার উকীলউদ্দিন, সুরেন সরকারের নেতৃত্বে বাগেরহাট মহকুমার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের পাশাপাশি বরিশালের লাগোয়া এলাকায় কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলার প্রচেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছিল ১৯৪৫ সালের দিকে।

অবশ্য এটা মনে রাখা দরকার বিস্তীর্ণ সুন্দরবনের কৃষকদের মধ্যে তেভাগা আন্দোলন বিশেষ ব্যাপকতা সৃষ্টি করেছিল নির্দিষ্ট কয়েকটি অঞ্চলে। এই আন্দোলন বাংলাদেশের সামগ্রিক কৃষক আন্দোলনে একটা বলিষ্ঠ ছাপ রাখতে পেরেছিল। সরকারের পক্ষ থেকে প্রথমে এই আন্দোলনের তীব্রতা অনুধাবন করতে পারেনি। তা ছাড়া ‘৪৭ এর পট পরিবর্তনের মুখে প্রশাসন থমকে যায় কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে তেভাগা আন্দোলন দমনে পুলিশি আক্রমণ উভয় দেশেই তীব্র হয়ে ওঠে।

স্বাধীনতার প্রাকমুহূর্তে সেদিনকার লীগ সরকার তেভাগা আন্দোলনের ভয়ঙ্করতা লক্ষ করে বাধ্য হয়েছিল বর্গাদার বিল পাশ করতে। এর ফলে চাষিদের মনে কিছুটা আশার সৃষ্টি হয়- নতুন সরকার চাষির স্বার্থে কাজ করবে- এ ধরণের মনোভাব সৃষ্টি হয় উভয় দেশে। ইতিমধ্যে ভারতের স্বাধীনতা লাভ এটা বাস্তব হয়ে উঠল। সরকারি কর্তৃপক্ষ কৃষক আন্দোলনের নেতাদের ডাকলেন নতুন পরিস্থিতিকে মেনে নিতে এবং বিভিন্ন মহকুমা শাসকদের পক্ষ থেকে বলা হল আন্দোলনের জন্য চাষিদের যে ক্ষতি হয়েছে সরকার সেজন্য ঋণ দিতে চায় এবং এই ঋণ কৃষক সমিতির নেতাদের সুপারিশের ভিত্তিতে দেওয়া হবে।

কৃষক সমিতির নেতারা বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা সরকারি দপ্তরে পাঠালেন ঋণের জন্য এবং তারই ভিত্তিতে চাষিরা কিছু সরকারি সাহায্য পেল। কৃষকরা লক্ষ করল- জমি বন্ধক ছাড়া সর্ব প্রথম তারা সরকারি ঋণের সুযোগ পেল এবং তা কৃষক সমিতির নেতাদের কথামত। কৃষকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগল, যুগযুগান্তের ‘হীনমন্যতাবোধ চাষিদের জীবন থেকে কিছুটা অপসারিত হল এবং সে একতাবদ্ধ হলে অনেক কিছু সে করতে পারে এ ধারণা জাগল। আর শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীরা কৃষিসংস্কারের গুরুত্ব উপলব্ধি করলেন।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

সাঙ্গু নদী: বান্দরবানের হৃদয়ে পাহাড়, নদী আর জীবনের ছন্দ

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১০৬)

১২:০০:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
শশাঙ্ক মণ্ডল

কৃষি ও কৃষক

চতুর্থ অধ্যায়

বরিশাল জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হিন্দু জমিদারদের প্রাধান্য ছিল, চাষিদের তলাকার অংশে মুসলমান কৃষকদের প্রাধান্য ছিল।  কৃষকপ্রজা পার্টির সে যুগে বরিশালের কৃষকদের মধ্যে বিশাল প্রভাব ছিল; তারা ১৯৪০- ৪২ এর দিকে ঋণসালিসি বোর্ডের কাছে হাজার হাজার কৃষকের ঋণ মকুবের ব্যাপারে আবেদন করছেন তা লক্ষ করা গেল। এ সময়ে বাউফল, পটুয়াখালি থানায় যথাক্রমে ৩৩১৩ এবং ১৮৯০টি আবেদনপত্র খতিয়ে দেখছেন ঋণসালিসি বোর্ড তা সরকারি নথিতে লক্ষ করা যাচ্ছে। কৃষকনেতা খন্দকার উকীলউদ্দিন, সুরেন সরকারের নেতৃত্বে বাগেরহাট মহকুমার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের পাশাপাশি বরিশালের লাগোয়া এলাকায় কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলার প্রচেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছিল ১৯৪৫ সালের দিকে।

অবশ্য এটা মনে রাখা দরকার বিস্তীর্ণ সুন্দরবনের কৃষকদের মধ্যে তেভাগা আন্দোলন বিশেষ ব্যাপকতা সৃষ্টি করেছিল নির্দিষ্ট কয়েকটি অঞ্চলে। এই আন্দোলন বাংলাদেশের সামগ্রিক কৃষক আন্দোলনে একটা বলিষ্ঠ ছাপ রাখতে পেরেছিল। সরকারের পক্ষ থেকে প্রথমে এই আন্দোলনের তীব্রতা অনুধাবন করতে পারেনি। তা ছাড়া ‘৪৭ এর পট পরিবর্তনের মুখে প্রশাসন থমকে যায় কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে তেভাগা আন্দোলন দমনে পুলিশি আক্রমণ উভয় দেশেই তীব্র হয়ে ওঠে।

স্বাধীনতার প্রাকমুহূর্তে সেদিনকার লীগ সরকার তেভাগা আন্দোলনের ভয়ঙ্করতা লক্ষ করে বাধ্য হয়েছিল বর্গাদার বিল পাশ করতে। এর ফলে চাষিদের মনে কিছুটা আশার সৃষ্টি হয়- নতুন সরকার চাষির স্বার্থে কাজ করবে- এ ধরণের মনোভাব সৃষ্টি হয় উভয় দেশে। ইতিমধ্যে ভারতের স্বাধীনতা লাভ এটা বাস্তব হয়ে উঠল। সরকারি কর্তৃপক্ষ কৃষক আন্দোলনের নেতাদের ডাকলেন নতুন পরিস্থিতিকে মেনে নিতে এবং বিভিন্ন মহকুমা শাসকদের পক্ষ থেকে বলা হল আন্দোলনের জন্য চাষিদের যে ক্ষতি হয়েছে সরকার সেজন্য ঋণ দিতে চায় এবং এই ঋণ কৃষক সমিতির নেতাদের সুপারিশের ভিত্তিতে দেওয়া হবে।

কৃষক সমিতির নেতারা বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা সরকারি দপ্তরে পাঠালেন ঋণের জন্য এবং তারই ভিত্তিতে চাষিরা কিছু সরকারি সাহায্য পেল। কৃষকরা লক্ষ করল- জমি বন্ধক ছাড়া সর্ব প্রথম তারা সরকারি ঋণের সুযোগ পেল এবং তা কৃষক সমিতির নেতাদের কথামত। কৃষকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগল, যুগযুগান্তের ‘হীনমন্যতাবোধ চাষিদের জীবন থেকে কিছুটা অপসারিত হল এবং সে একতাবদ্ধ হলে অনেক কিছু সে করতে পারে এ ধারণা জাগল। আর শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীরা কৃষিসংস্কারের গুরুত্ব উপলব্ধি করলেন।