সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “তিন সপ্তাহে প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে”
চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম ২১ দিনে প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এত কম সময়ে এত বেশি প্রবাসী আয় এর আগে আসেনি। গত আগস্টে নতুন সরকার গঠনের পর প্রতি মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে। তবে এবার তিন সপ্তাহেই প্রবাসী আয় এলো ২০০ কোটি ৭২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রবাসী আয়ের এই জোরালো প্রবাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মোট মজুত বা রিজার্ভ গতকাল সোমবার দিন শেষে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলারে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৬ কোটি ডলারে। দীর্ঘদিন পর বিপিএম৬ হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভ দুই হাজার কোটি ডলার ছাড়াল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসের প্রথম ২১ দিনে প্রতিদিন গড়ে ৯ কোটি ৫৫ লাখ ৮২ হাজার ৩৮০ ডলার দেশে এসেছে। গত তিন সপ্তাহে প্রতিদিন যে প্রবাসী আয় এসেছে, রেমিট্যান্সের এমন প্রবাহ সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায়নি। আগের মাস নভেম্বরে প্রতিদিন প্রবাসী আয় এসেছিল গড়ে সাত কোটি ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ডলার। আর গত বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রতিদিন প্রবাসী আয় এসেছিল গড়ে ৬ কোটি ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার ৩৩৩ ডলার।
ডিসেম্বরে যে প্রবাসী আয় দেশে এসেছে, তার ৬১ কোটি ৩১ লাখ ডলার এসেছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে। রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭ কোটি ৭৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার। সব বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৩১ কোটি ১৬ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫১ লাখ ৬০ হাজার ডলার। একক ব্যাংক হিসাবে ২১ দিনে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে, ২৭ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। এরপর সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এনেছে অগ্রণী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “প্রধান উপদেষ্টাকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ফোন”
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। ফোনালাপে তারা ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আজকে কথা বলেছেন। চ্যালেঞ্জিং সময়ে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সুলিভান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ফোনালাপে উভয় নেতা ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও তা সুরক্ষার ক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “আরো তীব্র হয়েছে ব্যাংকগুলোর ডলার সংকট”
চলতি মাসে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় ব্যাংকের মাধ্যমে বেশি রেমিট্যান্স আসছে। রফতানি আয়ও প্রবৃদ্ধির ধারায়। এর পরও দেশের ব্যাংকগুলোয় ডলারের সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাড়তি দামে রেমিট্যান্সের ডলার কিনছে বেশির ভাগ ব্যাংক। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকের পাশাপাশি কার্ব মার্কেটেও (খুচরা বাজার) ডলারের বিনিময় হার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে। গতকাল এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোয় প্রতি ডলার ১২৯ টাকায়ও কেনাবেচা হয়েছে।
চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিদেশী হিসাবে (নস্ট্র অ্যাকাউন্ট) ডলার স্থিতি কমে এসেছে। চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকগুলোর বিদেশী হিসাবে স্থিতির পরিমাণ ছিল ৬১০ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। ধারাবাহিকভাবে কমে নভেম্বর শেষে তা ৪৩৮ কোটি ৩৮ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। সে হিসাবে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে ১৭১ কোটি ৯৫ লাখ ডলার বা ২৮ দশমিক ১৭ শতাংশ।
ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় এলসি দায় সমন্বয় ও বিদেশী ঋণ পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে দেশের ব্যাংকগুলো। গত রোববার সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে ইস্যু করা একটি চিঠিতে এ ডলার সংকটের বিষয়টি উঠে আসে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির সবক’টি এডি শাখার (বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের অনুমোদনপ্রাপ্ত শাখা) ব্যবস্থাপকের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের সর্বোচ্চ বিনিময় হার ১২০ টাকা নির্ধারণ করলেও এ দরে কোথায়ও ডলার মিলছে না। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার কিংবা এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে এ দরে কেনা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকও রিজার্ভ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। ফলে সোনালী ব্যাংকের আমদানি বিলের মূল্য পরিশোধ বা আউটওয়ার্ড রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে ডলারের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় গ্রাহকদের ডলারের বাজারদর অবহিত করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “সরকারের সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের”
অন্তর্বর্তী সরকার গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক তার সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক পরিচালক আবদুলায়ে সেক। সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আবদুলায়ে সেক প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এমনটাই জানান। তিনি আগামী জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাংক থেকে অবসরে যাচ্ছেন। তার আগে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন। ড. ইউনূস বিশ্বব্যাংক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভৌত অবকাঠামো, জলবায়ু সহিষ্ণুতা, সেবা পদ্ধতি ডিজিটালাইজেশন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাখাতের উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে সহায়তা করায় আবদুলায়ে সেককে ধন্যবাদ জানান। আবদুলায়ে সেক প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, গত ১৯শে ডিসেম্বর বিশ্বব্যাংক প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থায়ন অনুমোদন করেছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে জলবায়ু-সহিষ্ণুতা ও টেকসই পরিবেশ উন্নয়নের পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগরীর স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবার মানন্নোয়নে ব্যয় করা হবে। বাংলাদেশে সবুজ অর্থায়ন ও নগর উন্নয়নে গতকাল রোববার বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ৯০০ মিলিয়ন ডলারের দু’টি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এর মধ্যে একটি চুক্তির আওতায় কক্সবাজার থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত অর্থনৈতিক করিডোর বরাবর জলবায়ু-সহিষ্ণু এবং নারী-বান্ধব অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে নগর উন্নয়ন করা হবে। অন্য চুক্তির আওতায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা দেওয়া হবে, যা চলতি মাসের মধ্যে জাতীয় কোষাগারে ছাড় করা হবে। ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন সহায়তা প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। বিশেষ করে দারিদ্র্য বিমোচন, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে অবদান রাখছে। প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বব্যাংকের বিদায়ী আবাসিক পরিচালকের সুস্থ-সুন্দর অবসর জীবন এবং তার পরিবারের জন্য সুস্বাস্থ্য কামনা করেন। সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।