০৩:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৬) শাওমির ১৭ আল্ট্রা ‘লাইকা এডিশন’: স্মার্টফোনে ফিরছে ম্যানুয়াল জুম রিং একাত্তরেও উৎসবের রাজকীয় গ্ল্যামার, লাল শাড়িতে নতুন সংজ্ঞা রচনা রেখার ইউক্রেনের দাবি: রাশিয়ার ওরেনবুর্গে বড় গ্যাস প্রক্রিয়াজাত কারখানায় ড্রোন হামলা দীপু চন্দ্র দাস হত্যাসহ নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধন শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে বাংলাদেশ, ঢাকাসহ সারাদেশে বেড়েছে শীতের দাপট জিয়ার কবর জিয়ারত করলেন তারেক রহমান গুলিস্তানের শপিং কমপ্লেক্সের ছাদে গুদামে আগুন তারেক রহমানের পক্ষে সাভারে শ্রদ্ধা জানাল বিএনপি প্রতিনিধিদল বিশ্ববাজারে পৌঁছাতে ভার্চুয়াল আইডলে বাজি কেপপ সংস্থার

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -৫৩)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 59

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

বুড়োর মুখটা কোনো কারণে কেমন যেন গম্ভীর হয়ে গেল। নিঃশব্দে পাইপ টানতে টানতে হাঁটতে লাগলেন উনি।

ফের হঠাৎ বললেন, ‘তোর বাবারে খুন করেছিল, কইলি না?’

‘হ্যাঁ।”

তালি-মারা, তেলকালিমাখা ট্রাউজার্সে হাতটা মুছে নিয়ে বুড়ো এবার আমার পিঠ চাপড়ে দিলেন। বললেন:

‘চল, আমার বাসায় চল্। আলু, আর পি’য়াজ-সিদ্ধ খেতে দেব, জলগরম করে চা-ও করব’খন। নিশ্চয় তোর খুব খিদে পেয়েছে, না রে?’

বাতিটা এবার খুবই হাল্কা ঠেকল আমার। আবারও মনে হল, আবুজামাস থেকে পালিয়ে চলে আসাটা খুবই দরকার ছিল। কাজটা বেশ বুদ্ধিমানের মতোই করেছি।

আমার মামাকে ওঁরা সবাই মিলে খুজে বের করলেন। দেখা গেল, তিনি ফিটার নন, বয়লার-শপের ফোরম্যান।

দেখা হতেই চাঁচাছোলা ভাষায় মামা আমায় জানিয়ে দিলেন আমি একটি গণ্ডমূর্খ আর আমায় বাড়ি ফিরে যেতেই হবে।

প্রথম দিনই খাওয়ার সময় চর্বি-মাখা, ইট-রঙের গোঁফজোড়া বাসন-মোছা ঝাড়ন দিয়ে মুছতে-মুছতে খিটখিটে মেজাজ দেখিয়ে মামা বললেন, ‘এখেনে তোর কী করার আছে? যার যেখানে জায়গা সেখানেই সে নিজের আখের গোছাতে পারে। আমার জায়গা আমি বেছে নিয়েছিলুম। তাই শিক্ষানবিস থেকে হলুম ফিটার, তারপর উন্নতি করতে-করতে এখন হয়েছি ফোরম্যান। তাহলে? আমিই-বা উন্নতি করতে পারলুম কেন, আর আরেক জনই-বা পারল না কেন? কারণ, অন্যেরা মুখফোড়গিরি করে উঠতে চায়। কাজ করতে চায় না, বুঝলি না? এঞ্জিনিয়ারের ওপর বড় হিংসে ওদের।

এক লাফে একেবারে সঙ্গে উঠতে চায়। তোর নিজের কথাই ধর না, ইশকুলে টিকে থাকলি না কেন? তাহলে আস্তে-ধীরে একদিন ডাক্তারি কিংবা যে-কোনো কারিগরি-বিদ্যে শিখতে পারতিস। কিন্তু তা হবে কেন? তুই অতি-চালাক হতে গেলি কিনা! কুড়েমি, আল্সেমি, তাছাড়া আবার কী? আমার কথা হল, একবার একটা কাজে লেগে পড়লে, ওই কাজে লেগে থেকেই উন্নতির রাস্তা খুঁজতে হবে। ধীরেসুস্থে, কাজে মন লাগিয়ে উঠতে হবে।

জীবনে চলার ওই একটিই রাস্তা” কথাগুলো শুনে বড় কষ্ট হল আমার। তবু যথাসম্ভব শান্তভাবে বললুম, ‘কিন্তু নিকোলাই-মামা, আমার বাবার কথাই ধর। উনি তো সৈনিক ছিলেন। তোমার কথামতো ওঁর নিম্নপদস্থ অফিসারদের প্রশিক্ষণ-স্কুলে ঢোকা উচিত ছিল। তাহলে উনি অফিসার হতে পারতেন। হয়তো একদিন ক্যাপ্টেনের পদও পেতেন। তুমি বলতে চাও, বাবা ওসব কিছু না-করে যা করেছিলেন, ক্যাপ্টেন না হয়ে উনি যে পার্টির গোপন কাজের কর্মী হয়েছিলেন, তার দরকার ছিল না?’

শুনে মামা ভুরু কোঁচকালেন।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৬)

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -৫৩)

০৮:০০:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

বুড়োর মুখটা কোনো কারণে কেমন যেন গম্ভীর হয়ে গেল। নিঃশব্দে পাইপ টানতে টানতে হাঁটতে লাগলেন উনি।

ফের হঠাৎ বললেন, ‘তোর বাবারে খুন করেছিল, কইলি না?’

‘হ্যাঁ।”

তালি-মারা, তেলকালিমাখা ট্রাউজার্সে হাতটা মুছে নিয়ে বুড়ো এবার আমার পিঠ চাপড়ে দিলেন। বললেন:

‘চল, আমার বাসায় চল্। আলু, আর পি’য়াজ-সিদ্ধ খেতে দেব, জলগরম করে চা-ও করব’খন। নিশ্চয় তোর খুব খিদে পেয়েছে, না রে?’

বাতিটা এবার খুবই হাল্কা ঠেকল আমার। আবারও মনে হল, আবুজামাস থেকে পালিয়ে চলে আসাটা খুবই দরকার ছিল। কাজটা বেশ বুদ্ধিমানের মতোই করেছি।

আমার মামাকে ওঁরা সবাই মিলে খুজে বের করলেন। দেখা গেল, তিনি ফিটার নন, বয়লার-শপের ফোরম্যান।

দেখা হতেই চাঁচাছোলা ভাষায় মামা আমায় জানিয়ে দিলেন আমি একটি গণ্ডমূর্খ আর আমায় বাড়ি ফিরে যেতেই হবে।

প্রথম দিনই খাওয়ার সময় চর্বি-মাখা, ইট-রঙের গোঁফজোড়া বাসন-মোছা ঝাড়ন দিয়ে মুছতে-মুছতে খিটখিটে মেজাজ দেখিয়ে মামা বললেন, ‘এখেনে তোর কী করার আছে? যার যেখানে জায়গা সেখানেই সে নিজের আখের গোছাতে পারে। আমার জায়গা আমি বেছে নিয়েছিলুম। তাই শিক্ষানবিস থেকে হলুম ফিটার, তারপর উন্নতি করতে-করতে এখন হয়েছি ফোরম্যান। তাহলে? আমিই-বা উন্নতি করতে পারলুম কেন, আর আরেক জনই-বা পারল না কেন? কারণ, অন্যেরা মুখফোড়গিরি করে উঠতে চায়। কাজ করতে চায় না, বুঝলি না? এঞ্জিনিয়ারের ওপর বড় হিংসে ওদের।

এক লাফে একেবারে সঙ্গে উঠতে চায়। তোর নিজের কথাই ধর না, ইশকুলে টিকে থাকলি না কেন? তাহলে আস্তে-ধীরে একদিন ডাক্তারি কিংবা যে-কোনো কারিগরি-বিদ্যে শিখতে পারতিস। কিন্তু তা হবে কেন? তুই অতি-চালাক হতে গেলি কিনা! কুড়েমি, আল্সেমি, তাছাড়া আবার কী? আমার কথা হল, একবার একটা কাজে লেগে পড়লে, ওই কাজে লেগে থেকেই উন্নতির রাস্তা খুঁজতে হবে। ধীরেসুস্থে, কাজে মন লাগিয়ে উঠতে হবে।

জীবনে চলার ওই একটিই রাস্তা” কথাগুলো শুনে বড় কষ্ট হল আমার। তবু যথাসম্ভব শান্তভাবে বললুম, ‘কিন্তু নিকোলাই-মামা, আমার বাবার কথাই ধর। উনি তো সৈনিক ছিলেন। তোমার কথামতো ওঁর নিম্নপদস্থ অফিসারদের প্রশিক্ষণ-স্কুলে ঢোকা উচিত ছিল। তাহলে উনি অফিসার হতে পারতেন। হয়তো একদিন ক্যাপ্টেনের পদও পেতেন। তুমি বলতে চাও, বাবা ওসব কিছু না-করে যা করেছিলেন, ক্যাপ্টেন না হয়ে উনি যে পার্টির গোপন কাজের কর্মী হয়েছিলেন, তার দরকার ছিল না?’

শুনে মামা ভুরু কোঁচকালেন।