আর্কাদি গাইদার
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
‘তোর বাবা সম্বন্ধে আমি মন্দ কথা বলতে চাই নে। তবে ও যা করেছিল, কী জানি বাবা, আমি তো তার কোনো অর্থ বুঝি নে। যদি জিজ্ঞেসা করিস তো বলি, তোর বাবার বুদ্ধিসুদ্ধি বড় কম ছিল, খালি গোলমাল পাকাতেই জানত।
আমাকেও সাত ঝামেলায় প্রায় জড়িয়ে ফেলেছিল আর কী। অফিস থেকে তখন সবে আমায় ফোরম্যানের পদটা দেবে বলে ঠিক করেছে, এমন সময় হঠাৎ কোত্থাও কিছু নেই, অফিস থেকে একদিন বলে কিনা: ‘ও, তোমার বাসায় যে আত্মীয়টি আসত সে বুঝি ওইরকম?’ কোনোক্রমে ব্যাপারটা চাপা দিতে পথ পাই না তখন।’
বাটি থেকে মাংসসুদ্ধ এক-টুকরো হাড় তুলে নিয়ে তার ওপর ঘন করে মাস্টার্ড আর নূন ছড়িয়ে তাতে বড়-বড় হলদে দাঁতগুলো বসিয়ে দিলেন। তারপর ব্যাজার হয়ে মাথা নাড়লেন মামাবাবু।
তাঁর স্ত্রী, আমার মামীমা, দেখতে লম্বা, সুন্দর গড়নপেটন, খাওয়ার পর উনি মামাকে একটা রঙ-করা মাটির পাত্রে বাড়িতে-তৈরি ভাস এনে দিলেন। মামা ওঁকে বললেন:
‘এখন একটু ঘুমুব। ঘণ্টাখানেক পরে ডেকে দিও আমায়। ভার্ভারা-বোনটাকে দু-ছত্তর চিঠি লিখতে হবে। বাড়ি যাওয়ার সময় বরিসের হাতে চিঠিটা দিয়ে দেব।’
‘ও কখন যাবে?’
‘কেন, আসচে কাল।’
এমন সময় জানলায় কে যেন টোকা দিল।
‘নিকোলাই-কাকা, জমায়েতে আসচেন তো?’ বাইরের রাস্তা থেকে কে যেন বলল।
‘কোথায় আসছি?’
‘জমায়েতে। চৌকো ময়দানে এখনই মেলা নোক।’