০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

দিল্লির রায় আগামী বিধানসভা নির্বাচনগুলো সহজ করে দিলো বিজেপিকে

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 15

প্রশান্ত ঝা

সাত মাসদিল্লির নির্বাচনী ফলাফল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও বিজেপি-নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে এই উপহারটাই দিয়েছে।

আগামী সাত মাসযখন পর্যন্ত বিহার নির্বাচন গতি পাবে নাবিজেপিকে আর কোনো নির্বাচন জেতার চাপ মোকাবিলা করতে হবে না। লোকসভার পরে যে রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ও শক্তি কিছুটা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছিলতা নিয়েও আপাতত ভাবতে হবে না। কেননা এখন তারা বারবার দেখাতে পেরেছেহরিয়ানামহারাষ্ট্র এবং সম্প্রতি দিল্লিতে২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের ফলাফল ঠিক শেষের শুরু” ছিল না।

বিরোধী জোটের ঐক্যবদ্ধ আক্রমণ নিয়েও বিজেপিকে ভাবতে হচ্ছে নাকারণ এই তিনটি নির্বাচনী পরাজয় ভারতীয় জাতীয় বিকাশমুখী অন্তর্ভুক্তিমূলক জোট বা ইন্ডিয়া জোটের অন্দরে বিরোধ ও দ্বন্দ্ব আরও তীব্র করবে। আর অদূর ভবিষ্যতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জাতীয় পরিসরে পদচারণা বাড়ার সম্ভাবনাও এখন ক্ষীণযা হয়তো বড় ধরনের প্রতিকূল পরিবেশেও আম আদমি পার্টির একচ্ছত্র জয়ে দেখা যেতে পারত।

বিজেপির অন্দরে ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও আর অস্থিরতার কারণ নেইএখানে স্পষ্ট যে নরেন্দ্র মোদীই সর্বোচ্চঅমিত শাহ দলীয় যন্ত্র পরিচালনা করেন এবং বাকিরা সেই জুটির থেকেই শক্তি পান। বৃহত্তর আদর্শিক পরিবারের সঙ্গেও সংঘাতের বিষয়টি নেইলোকসভার ফলাফলের পর থেকে সম্পর্কের নতুন সমন্বয় এবং ঘনিষ্ঠ পরামর্শ ও সহযোগিতা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের শতবর্ষে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। এছাড়া জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ)-এর স্থিতিশীলতাও প্রশ্নের মুখে পড়ছে নাকারণ শরিকরা বেশি চাপ সৃষ্টি করার আগে সতর্ক থাকবে এবং মোদী-ছাপানকে আঁকড়ে ধরে থাকার প্রণোদনাই তারা দেখছে।

রাজনীতির পরিসর ও নীতিনির্ধারণের চ্যালেঞ্জ

তবে বিজেপির দুশ্চিন্তারও যথেষ্ট কারণ আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক তিন রাজ্যের ফলাফল বিজেপিকে এই জটিল সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য বড় পরিসর এনে দিয়েছে। এসব দুশ্চিন্তার মূল উৎস নীতিনির্ধারণের জগৎ।

বর্তমান পরিস্থিতির গুরুত্ব কমিয়ে দেখার সুযোগ নেই। বাজেটে মধ্যবিত্তের কিছুটা স্বস্তি ও চাহিদা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বটেকিন্তু বাস্তবতা হল ভারতের অর্থনীতি ভালো করছে না। এই মন্দা ঘুরে দাঁড়াবে কি নাবা এটি কাঠামোগত না কি সাময়িকসে প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। অর্থনৈতিক জরিপে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে যে দেশি-বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে গেছে। আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও শিল্পোৎপাদনের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি আসেনি। ফলে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সৃষ্টি যে প্রয়োজনতা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে ভূরাজনীতিতে আমেরিকার বিভ্রান্ত ও আগ্রাসী রূপান্তর এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিপুল অগ্রযাত্রাদুটিই অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের ওপর তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

এটাই আমাদের রাজনৈতিক অর্থনীতির ভিত্তিগত সংকটযে সংকট অন্তত আংশিকভাবে ২০২৪ সালের লোকসভায় বিজেপির ফলাফলের পেছনে কাজ করেছিলযে সংকট বিজেপির বহুবর্ণ ও বহুস্তরের সমর্থনকাঠামোতে ফাটল ধরাতে পারেএবং যে সংকটই সবচেয়ে জটিল ও অনতিক্রম্য বলে মনে হয়।

দিল্লির নির্বাচনী ফলাফল থেকে পাওয়া সাত মাসের এই রাজনৈতিক অবকাশই বর্তমান সরকারের একমাত্র সুযোগএবং সম্ভবত ২০২৯ পর্যন্ত এটাইযেখানে রাজনৈতিক জটিলতা একটু পাশে রেখে পুরোপুরি নীতিনির্ধারণ ও বাস্তবায়নের দিকে মনোনিবেশ করা সম্ভব।

বিহার নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপির নজর চলে যাবে সম ধরে রাখার দিকেপশ্চিমবঙ্গে জোরালো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া এবং তামিলনাডু ও কেরলে প্রবেশের কৌশল গড়ে তোলার দিকে। ২০২৬-এর মাঝামাঝি থাকা নির্বাচনের পরপরই বিজেপিকে ২০২৭-এর কথা ভাবতে হবেতখন উত্তর প্রদেশের নির্বাচন আসন্ন (যা হবে দেখা যে ২০২৪-এর ধাক্কা থেকে দলটি কতটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে)। অশান্ত রাজনৈতিক পটভূমিবিভক্ত সমাজ ও দুর্বল রাজকীয় কর্তৃত্ব বিরাজ করলে মনিপুরের নির্বাচন কীভাবে আয়োজন ও জেতা যায়সেটাও একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে। পাঞ্জাবে প্রভাব বিস্তার বা শক্তি বাড়ানোর পরিকল্পনা করতে হবে। পাশাপাশি উত্তরাখণ্ড ও গোয়া ধরে রাখার চিন্তা করতে হবে।

সেই রাজ্য নির্বাচনগুলোর কয়েক মাস পরই রাষ্ট্রপতি ভবনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী আবার বসানো সম্ভব হবে কি নাতা নিয়ে ভাবতে হবেকেননা আগের দুটো নির্বাচনের মতো এবার সংখ্যাগরিষ্ঠতার আরামে থাকা সম্ভব নাও হতে পারে। ২০২৭-এর শেষ নাগাদ গুজরাটে নির্বাচনযেখানে বিজেপি টানা ৩০ বছর ক্ষমতায় থাকার নজির গড়বে। ২০২৮ সালে শুরুতেই উত্তর-পূর্বের তিনটি রাজ্যে ভোটতারপর গ্রীষ্মে কর্নাটকবছরের শেষে আবার মূল ভূখণ্ডের কিছু রাজ্যে নির্বাচনএর মধ্যেই ২০২৯-এর বড় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে এগোতে হবে।

এই সময়তালিকা স্পষ্টই দেখায়যদি সত্যিই বিজেপি তার শাসনব্যবস্থা সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চায়এমন সময় যখন দলটি রাজনৈতিকভাবে কিছুটা নিশ্চিন্ততাহলে এই বছরটিই একমাত্র সুযোগ। এর অর্থ হতে পারে আরও কঠোর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। ভূরাজনীতির পরিসরে জটিল সমীকরণ মেনে নেওয়াও প্রয়োজন হতে পারে। প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার জন্য অর্থনৈতিক তদারকি সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে যে ধারণা আছেতা ভাঙার চেষ্টা করতে হবেকেননা এই ধারণা বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যাদেরকে সবচেয়ে কাছের” বলে মনে করা হয়তাঁদের ছাড়াও অন্য বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সুযোগ দেওয়ার দিকে নজর দিতে হতে পারে। আরো বিস্তৃত আকারে আয়ের সহায়তা দেওয়ার যে রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে উঠেছেতা কীভাবে আর্থিকভাবে টেকসই করা যায়সে পথ বের করতে হবে। জাতীয় পর্যায়ে বিজেপির বিরুদ্ধে যেসব দল দাঁড়ায়তাদের শাসিত রাজ্যগুলোর সঙ্গেও আরও সমন্বয়মূলকভাবে কাজ করতে হবে। লোকসভার ধাক্কা সামলে বিজেপির প্রধান লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার করাযে কাজে তারা দুর্দান্ত সফল হয়েছে। দিল্লির ফলাফল তাদের সামনে দরজা খুলে দিল যেচাইলে এখন তারা নীতি ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও সেই আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার করতে পারে।

আশাউত্থান ও পতন

বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিসমূহের কাছে দিল্লির নির্বাচন হতাশার বার্তা বয়ে এনেছে।

আশার ঢেউ এবং একজন নেতার ব্যক্তিত্বকে ভর করে যে নতুন রাজনৈতিক দল উঠে আসেতারা সহজেই পুরোনো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে খলনায়ক হিসেবে দেখিয়ে নতুন ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দিতে পারে। কিন্তু এটাই তাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা: কাঠামোগত সমস্যার সহজ সমাধান পাওয়া দুষ্করফলে মানুষ দ্রুত আশাভঙ্গের স্বীকার হতে পারেআর নেতার বিশ্বাসযোগ্যতাও টেকসই রাখা কঠিন। তার ওপর ক্ষমতা ও অধিকার সীমিত হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।

আম আদমি পার্টির ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। তারা এমন এক ভূখণ্ডে কাজ করছিলযেখানে রাষ্ট্রের পূর্ণ সাংবিধানিক ক্ষমতা নেই। ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক স্বচ্ছতার দাবি রক্ষা করতে পারেনিবরং অন্য দলগুলোর মতোই ক্ষমতার নানাবিধ চালচিত্রে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একমাত্র বড় সম্পদতার পরিচ্ছন্ন” ভাবমূর্তিনিয়ে জনমনে সন্দেহ ছড়াতে পেরেছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে আম আদমি পার্টির প্রশংসনীয় উদ্যোগ আগের নির্বাচনে তাদের ফলাফলকে দৃঢ় করেছিল এবং একটি অনুগত সমর্থনশিবির গড়তে পেরেছিল বটেতবে এবার আর সেটি যথেষ্ট হয়নি।

এর পরিণাম হলএখন কেজরিওয়ালকে আরও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পার্টি ও নিজের ভাবমূর্তি পুনর্গঠিত করতে হবে। তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে। পাঞ্জাবে তাদের সরকার আছেকিন্তু সেখানে নেতৃত্ব এখন আর দিল্লি-কেন্দ্রিক হবে কি নাসেটা প্রশ্নসাপেক্ষ। আইনি ঝামেলায়ও তিনি জড়িয়ে আছেন। পাশাপাশি তাঁকে নতুন বার্তা এবং নতুনভাবে সেই বার্তা বহন করার উপযুক্ত ভাবমূর্তি গড়তে হবে। এটা অসম্ভব নয়কারণ ক্ষমতার বাইরে থাকা তাকে কিছুটা মুক্ত করতে পারেতিনি স্বভাবতই প্রতিবাদী রাজনীতির মানুষ। কিন্তু সামনে পথটা দীর্ঘ ও কঠিন।

১৪০তম বর্ষে রাজনৈতিক আঁধার

এদিকে কংগ্রেস তার চিরপরিচিত অবস্থানেই রয়ে গেছে। তারা দিল্লিতে ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিলএখনো অনেকের কাছে তাদের শাসনামলের স্মৃতি মধুরকিন্তু পরপর তিনটি নির্বাচনে দিল্লির কোনো কেন্দ্রেই তারা মানুষের বিশ্বাস পায়নি। ভোট-শেয়ার সামান্য বেড়েছে বা তারা বিভাজকের ভূমিকা নিয়েছেএসবই কংগ্রেসের সান্ত্বনা। কিন্তু এত সামান্য আশায় ভরসা করতে হলে ভবিষ্যৎ যে অন্ধকারময়তা বলাই বাহুল্য।

এই ফলাফলের আসল মানে হলপশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুর মতোউত্তর প্রদেশ ও বিহারের মতোওডিশা ও অন্ধ্র প্রদেশের মতোদিল্লিও এখন কংগ্রেসের ক্রমাগত ক্ষয়ের আরেকটি প্রমাণ। পরের নির্বাচন বিহারেযেখানে কংগ্রেস শুধুই একটি অনুজপ্রতিম শরিক। ২০২৫ সাল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠার ১৪০তম বার্ষিকীতবে এ বছরও তাদের রাজনৈতিক অন্ধকারের মধ্যেই কাটতে চলেছে। অথচ মাত্র আট মাস আগে তারা ভেবেছিলতাদের ভাগ্য হয়তো ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

আরও বিস্তৃতভাবে দেখতে গেলেআট মাস আগে লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি-বিরোধী মহল মনে করেছিল যে সংরক্ষণ নিয়ে বিজেপির অবস্থান নিয়ে সংশয় তৈরির মাধ্যমেঅর্থনৈতিক অসন্তোষকে কাজে লাগিয়েআয়ের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য বজায় রেখে মোদী-শাহ জুটির শক্তি খর্ব করা যাবে। কিন্তু বিজেপি তাদের কৌশলের মাধ্যমে সেই ফর্মুলার কার্যকারিতা ক্ষুণ্ন করতে পেরেছেযা ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ পথ নিয়েই আরও বড় প্রশ্ন তৈরি করেছে।

দিল্লির রাজনীতি এক অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য বহন করে। এটি পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পায়নিমাত্র সাতটি লোকসভা আসন রয়েছেআর এক দশক ধরে এমন একটি দল এখানে আধিপত্য করেছে যাদের কেন্দ্রীয় সরকারে কোনো অবস্থান ছিল না। তবু দিল্লি জাতীয় রাজনীতি ও সর্বভারতীয় গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। কারণ এটাই দেশের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক রাজধানীএখানে সেই সব গণমাধ্যমের সদর দপ্তর যাদের দেশজুড়ে সর্বাধিক প্রভাবআর দেশের প্রায় সব অঞ্চল থেকেই এখানে অভিবাসী বাস করেন।

কিন্তু এর বাইরেও বিষয় আছে। এই শহরের রাজনীতি নতুন পরীক্ষানিরীক্ষার প্রতি উন্মুক্ত। এক দশক আগে এখানকার মানুষ এক রাজনৈতিক উদ্যোক্তাকে সুযোগ দিয়েছিলনতুন দলের উত্থান তারা দীর্ঘ সময় ধরে পর্যবেক্ষণ করেছেআদি সাফল্যে প্রত্যয়ী হয়ে সেটা আবার পুরস্কৃত করেছে। কিন্তু যখন সেই স্টার্ট-আপ” ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ল বা স্থিতিশীল মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারল নাবিনিয়োগকারীরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই আগ্রহী হয়ে উঠল এবং ফিরে গেল প্রধান শক্তির কাছেই। বড় শক্তির সঙ্গে এই মিশ্রণ দিল্লির নাগরিকদের জন্য ভালো হবে কি নাযারা শহরে উন্নত জীবনের আশা নিয়ে আসেতা সময় বলবে।

(লেখাটি হিন্দুস্থানটাইমস থেকে অনূদিত)

দিল্লির রায় আগামী বিধানসভা নির্বাচনগুলো সহজ করে দিলো বিজেপিকে

০৮:০০:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রশান্ত ঝা

সাত মাসদিল্লির নির্বাচনী ফলাফল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও বিজেপি-নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে এই উপহারটাই দিয়েছে।

আগামী সাত মাসযখন পর্যন্ত বিহার নির্বাচন গতি পাবে নাবিজেপিকে আর কোনো নির্বাচন জেতার চাপ মোকাবিলা করতে হবে না। লোকসভার পরে যে রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ও শক্তি কিছুটা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছিলতা নিয়েও আপাতত ভাবতে হবে না। কেননা এখন তারা বারবার দেখাতে পেরেছেহরিয়ানামহারাষ্ট্র এবং সম্প্রতি দিল্লিতে২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের ফলাফল ঠিক শেষের শুরু” ছিল না।

বিরোধী জোটের ঐক্যবদ্ধ আক্রমণ নিয়েও বিজেপিকে ভাবতে হচ্ছে নাকারণ এই তিনটি নির্বাচনী পরাজয় ভারতীয় জাতীয় বিকাশমুখী অন্তর্ভুক্তিমূলক জোট বা ইন্ডিয়া জোটের অন্দরে বিরোধ ও দ্বন্দ্ব আরও তীব্র করবে। আর অদূর ভবিষ্যতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জাতীয় পরিসরে পদচারণা বাড়ার সম্ভাবনাও এখন ক্ষীণযা হয়তো বড় ধরনের প্রতিকূল পরিবেশেও আম আদমি পার্টির একচ্ছত্র জয়ে দেখা যেতে পারত।

বিজেপির অন্দরে ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও আর অস্থিরতার কারণ নেইএখানে স্পষ্ট যে নরেন্দ্র মোদীই সর্বোচ্চঅমিত শাহ দলীয় যন্ত্র পরিচালনা করেন এবং বাকিরা সেই জুটির থেকেই শক্তি পান। বৃহত্তর আদর্শিক পরিবারের সঙ্গেও সংঘাতের বিষয়টি নেইলোকসভার ফলাফলের পর থেকে সম্পর্কের নতুন সমন্বয় এবং ঘনিষ্ঠ পরামর্শ ও সহযোগিতা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের শতবর্ষে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। এছাড়া জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ)-এর স্থিতিশীলতাও প্রশ্নের মুখে পড়ছে নাকারণ শরিকরা বেশি চাপ সৃষ্টি করার আগে সতর্ক থাকবে এবং মোদী-ছাপানকে আঁকড়ে ধরে থাকার প্রণোদনাই তারা দেখছে।

রাজনীতির পরিসর ও নীতিনির্ধারণের চ্যালেঞ্জ

তবে বিজেপির দুশ্চিন্তারও যথেষ্ট কারণ আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক তিন রাজ্যের ফলাফল বিজেপিকে এই জটিল সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য বড় পরিসর এনে দিয়েছে। এসব দুশ্চিন্তার মূল উৎস নীতিনির্ধারণের জগৎ।

বর্তমান পরিস্থিতির গুরুত্ব কমিয়ে দেখার সুযোগ নেই। বাজেটে মধ্যবিত্তের কিছুটা স্বস্তি ও চাহিদা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বটেকিন্তু বাস্তবতা হল ভারতের অর্থনীতি ভালো করছে না। এই মন্দা ঘুরে দাঁড়াবে কি নাবা এটি কাঠামোগত না কি সাময়িকসে প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। অর্থনৈতিক জরিপে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে যে দেশি-বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে গেছে। আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও শিল্পোৎপাদনের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি আসেনি। ফলে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সৃষ্টি যে প্রয়োজনতা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে ভূরাজনীতিতে আমেরিকার বিভ্রান্ত ও আগ্রাসী রূপান্তর এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিপুল অগ্রযাত্রাদুটিই অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের ওপর তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

এটাই আমাদের রাজনৈতিক অর্থনীতির ভিত্তিগত সংকটযে সংকট অন্তত আংশিকভাবে ২০২৪ সালের লোকসভায় বিজেপির ফলাফলের পেছনে কাজ করেছিলযে সংকট বিজেপির বহুবর্ণ ও বহুস্তরের সমর্থনকাঠামোতে ফাটল ধরাতে পারেএবং যে সংকটই সবচেয়ে জটিল ও অনতিক্রম্য বলে মনে হয়।

দিল্লির নির্বাচনী ফলাফল থেকে পাওয়া সাত মাসের এই রাজনৈতিক অবকাশই বর্তমান সরকারের একমাত্র সুযোগএবং সম্ভবত ২০২৯ পর্যন্ত এটাইযেখানে রাজনৈতিক জটিলতা একটু পাশে রেখে পুরোপুরি নীতিনির্ধারণ ও বাস্তবায়নের দিকে মনোনিবেশ করা সম্ভব।

বিহার নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপির নজর চলে যাবে সম ধরে রাখার দিকেপশ্চিমবঙ্গে জোরালো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া এবং তামিলনাডু ও কেরলে প্রবেশের কৌশল গড়ে তোলার দিকে। ২০২৬-এর মাঝামাঝি থাকা নির্বাচনের পরপরই বিজেপিকে ২০২৭-এর কথা ভাবতে হবেতখন উত্তর প্রদেশের নির্বাচন আসন্ন (যা হবে দেখা যে ২০২৪-এর ধাক্কা থেকে দলটি কতটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে)। অশান্ত রাজনৈতিক পটভূমিবিভক্ত সমাজ ও দুর্বল রাজকীয় কর্তৃত্ব বিরাজ করলে মনিপুরের নির্বাচন কীভাবে আয়োজন ও জেতা যায়সেটাও একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে। পাঞ্জাবে প্রভাব বিস্তার বা শক্তি বাড়ানোর পরিকল্পনা করতে হবে। পাশাপাশি উত্তরাখণ্ড ও গোয়া ধরে রাখার চিন্তা করতে হবে।

সেই রাজ্য নির্বাচনগুলোর কয়েক মাস পরই রাষ্ট্রপতি ভবনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী আবার বসানো সম্ভব হবে কি নাতা নিয়ে ভাবতে হবেকেননা আগের দুটো নির্বাচনের মতো এবার সংখ্যাগরিষ্ঠতার আরামে থাকা সম্ভব নাও হতে পারে। ২০২৭-এর শেষ নাগাদ গুজরাটে নির্বাচনযেখানে বিজেপি টানা ৩০ বছর ক্ষমতায় থাকার নজির গড়বে। ২০২৮ সালে শুরুতেই উত্তর-পূর্বের তিনটি রাজ্যে ভোটতারপর গ্রীষ্মে কর্নাটকবছরের শেষে আবার মূল ভূখণ্ডের কিছু রাজ্যে নির্বাচনএর মধ্যেই ২০২৯-এর বড় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে এগোতে হবে।

এই সময়তালিকা স্পষ্টই দেখায়যদি সত্যিই বিজেপি তার শাসনব্যবস্থা সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চায়এমন সময় যখন দলটি রাজনৈতিকভাবে কিছুটা নিশ্চিন্ততাহলে এই বছরটিই একমাত্র সুযোগ। এর অর্থ হতে পারে আরও কঠোর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। ভূরাজনীতির পরিসরে জটিল সমীকরণ মেনে নেওয়াও প্রয়োজন হতে পারে। প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার জন্য অর্থনৈতিক তদারকি সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে যে ধারণা আছেতা ভাঙার চেষ্টা করতে হবেকেননা এই ধারণা বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যাদেরকে সবচেয়ে কাছের” বলে মনে করা হয়তাঁদের ছাড়াও অন্য বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সুযোগ দেওয়ার দিকে নজর দিতে হতে পারে। আরো বিস্তৃত আকারে আয়ের সহায়তা দেওয়ার যে রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে উঠেছেতা কীভাবে আর্থিকভাবে টেকসই করা যায়সে পথ বের করতে হবে। জাতীয় পর্যায়ে বিজেপির বিরুদ্ধে যেসব দল দাঁড়ায়তাদের শাসিত রাজ্যগুলোর সঙ্গেও আরও সমন্বয়মূলকভাবে কাজ করতে হবে। লোকসভার ধাক্কা সামলে বিজেপির প্রধান লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার করাযে কাজে তারা দুর্দান্ত সফল হয়েছে। দিল্লির ফলাফল তাদের সামনে দরজা খুলে দিল যেচাইলে এখন তারা নীতি ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও সেই আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার করতে পারে।

আশাউত্থান ও পতন

বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিসমূহের কাছে দিল্লির নির্বাচন হতাশার বার্তা বয়ে এনেছে।

আশার ঢেউ এবং একজন নেতার ব্যক্তিত্বকে ভর করে যে নতুন রাজনৈতিক দল উঠে আসেতারা সহজেই পুরোনো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে খলনায়ক হিসেবে দেখিয়ে নতুন ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দিতে পারে। কিন্তু এটাই তাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা: কাঠামোগত সমস্যার সহজ সমাধান পাওয়া দুষ্করফলে মানুষ দ্রুত আশাভঙ্গের স্বীকার হতে পারেআর নেতার বিশ্বাসযোগ্যতাও টেকসই রাখা কঠিন। তার ওপর ক্ষমতা ও অধিকার সীমিত হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।

আম আদমি পার্টির ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। তারা এমন এক ভূখণ্ডে কাজ করছিলযেখানে রাষ্ট্রের পূর্ণ সাংবিধানিক ক্ষমতা নেই। ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক স্বচ্ছতার দাবি রক্ষা করতে পারেনিবরং অন্য দলগুলোর মতোই ক্ষমতার নানাবিধ চালচিত্রে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একমাত্র বড় সম্পদতার পরিচ্ছন্ন” ভাবমূর্তিনিয়ে জনমনে সন্দেহ ছড়াতে পেরেছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে আম আদমি পার্টির প্রশংসনীয় উদ্যোগ আগের নির্বাচনে তাদের ফলাফলকে দৃঢ় করেছিল এবং একটি অনুগত সমর্থনশিবির গড়তে পেরেছিল বটেতবে এবার আর সেটি যথেষ্ট হয়নি।

এর পরিণাম হলএখন কেজরিওয়ালকে আরও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পার্টি ও নিজের ভাবমূর্তি পুনর্গঠিত করতে হবে। তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে। পাঞ্জাবে তাদের সরকার আছেকিন্তু সেখানে নেতৃত্ব এখন আর দিল্লি-কেন্দ্রিক হবে কি নাসেটা প্রশ্নসাপেক্ষ। আইনি ঝামেলায়ও তিনি জড়িয়ে আছেন। পাশাপাশি তাঁকে নতুন বার্তা এবং নতুনভাবে সেই বার্তা বহন করার উপযুক্ত ভাবমূর্তি গড়তে হবে। এটা অসম্ভব নয়কারণ ক্ষমতার বাইরে থাকা তাকে কিছুটা মুক্ত করতে পারেতিনি স্বভাবতই প্রতিবাদী রাজনীতির মানুষ। কিন্তু সামনে পথটা দীর্ঘ ও কঠিন।

১৪০তম বর্ষে রাজনৈতিক আঁধার

এদিকে কংগ্রেস তার চিরপরিচিত অবস্থানেই রয়ে গেছে। তারা দিল্লিতে ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিলএখনো অনেকের কাছে তাদের শাসনামলের স্মৃতি মধুরকিন্তু পরপর তিনটি নির্বাচনে দিল্লির কোনো কেন্দ্রেই তারা মানুষের বিশ্বাস পায়নি। ভোট-শেয়ার সামান্য বেড়েছে বা তারা বিভাজকের ভূমিকা নিয়েছেএসবই কংগ্রেসের সান্ত্বনা। কিন্তু এত সামান্য আশায় ভরসা করতে হলে ভবিষ্যৎ যে অন্ধকারময়তা বলাই বাহুল্য।

এই ফলাফলের আসল মানে হলপশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুর মতোউত্তর প্রদেশ ও বিহারের মতোওডিশা ও অন্ধ্র প্রদেশের মতোদিল্লিও এখন কংগ্রেসের ক্রমাগত ক্ষয়ের আরেকটি প্রমাণ। পরের নির্বাচন বিহারেযেখানে কংগ্রেস শুধুই একটি অনুজপ্রতিম শরিক। ২০২৫ সাল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠার ১৪০তম বার্ষিকীতবে এ বছরও তাদের রাজনৈতিক অন্ধকারের মধ্যেই কাটতে চলেছে। অথচ মাত্র আট মাস আগে তারা ভেবেছিলতাদের ভাগ্য হয়তো ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

আরও বিস্তৃতভাবে দেখতে গেলেআট মাস আগে লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি-বিরোধী মহল মনে করেছিল যে সংরক্ষণ নিয়ে বিজেপির অবস্থান নিয়ে সংশয় তৈরির মাধ্যমেঅর্থনৈতিক অসন্তোষকে কাজে লাগিয়েআয়ের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য বজায় রেখে মোদী-শাহ জুটির শক্তি খর্ব করা যাবে। কিন্তু বিজেপি তাদের কৌশলের মাধ্যমে সেই ফর্মুলার কার্যকারিতা ক্ষুণ্ন করতে পেরেছেযা ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ পথ নিয়েই আরও বড় প্রশ্ন তৈরি করেছে।

দিল্লির রাজনীতি এক অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য বহন করে। এটি পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পায়নিমাত্র সাতটি লোকসভা আসন রয়েছেআর এক দশক ধরে এমন একটি দল এখানে আধিপত্য করেছে যাদের কেন্দ্রীয় সরকারে কোনো অবস্থান ছিল না। তবু দিল্লি জাতীয় রাজনীতি ও সর্বভারতীয় গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। কারণ এটাই দেশের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক রাজধানীএখানে সেই সব গণমাধ্যমের সদর দপ্তর যাদের দেশজুড়ে সর্বাধিক প্রভাবআর দেশের প্রায় সব অঞ্চল থেকেই এখানে অভিবাসী বাস করেন।

কিন্তু এর বাইরেও বিষয় আছে। এই শহরের রাজনীতি নতুন পরীক্ষানিরীক্ষার প্রতি উন্মুক্ত। এক দশক আগে এখানকার মানুষ এক রাজনৈতিক উদ্যোক্তাকে সুযোগ দিয়েছিলনতুন দলের উত্থান তারা দীর্ঘ সময় ধরে পর্যবেক্ষণ করেছেআদি সাফল্যে প্রত্যয়ী হয়ে সেটা আবার পুরস্কৃত করেছে। কিন্তু যখন সেই স্টার্ট-আপ” ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ল বা স্থিতিশীল মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারল নাবিনিয়োগকারীরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই আগ্রহী হয়ে উঠল এবং ফিরে গেল প্রধান শক্তির কাছেই। বড় শক্তির সঙ্গে এই মিশ্রণ দিল্লির নাগরিকদের জন্য ভালো হবে কি নাযারা শহরে উন্নত জীবনের আশা নিয়ে আসেতা সময় বলবে।

(লেখাটি হিন্দুস্থানটাইমস থেকে অনূদিত)