সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- ২০২৪ সালে খেলাপি ঋণের হার দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ডিসেম্বরে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়
- গত ১৫ বছরে যে পরিমাণ অনিয়ম ও লুণ্ঠন হয়েছে, তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল
- শতভাগ গভর্ন্যান্স এবং আইনের শাসন ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়
- ৩০ শতাংশেরও বেশি ঋণ এখন খেলাপি অবস্থায় রয়েছে, যা অর্থনীতির জন্য বিপজ্জনক সংকেত
গত দেড় দশকে বাংলাদেশে ব্যাংক খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ঋণ আদায়ে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে।
- ডিসেম্বর ২০২৪-এ খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
- দেশের ব্যাংকগুলোর ৩০ শতাংশেরও বেশি ঋণ এখন খেলাপি অবস্থায় রয়েছে, যা অর্থনীতির জন্য বিপজ্জনক সংকেত।
খেলাপি ঋণের ক্রমবর্ধমান হার
ব্যাংক খাতে সংকট আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।
- মার্চ ২০২৪: খেলাপি ঋণের হার ছিল ১১.১১%
- জুন ২০২৪: এই হার বেড়ে হয় ১২.৫৬%
- সেপ্টেম্বর ২০২৪: আরও বৃদ্ধি পেয়ে ১৬.৯৩%
- ডিসেম্বর ২০২৪: প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়।
আশঙ্কাজনক পূর্বাভাস
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী,
- চলমান অডিট শেষে খেলাপি ঋণের হার ৩৫ শতাংশ ছাড়াতে পারে।
- বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশনা করার শর্তে বলেছেন, “এই হার ৪০ শতাংশেও পৌঁছাতে পারে।”
দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের প্রভাব
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর উল্লেখ করেছেন,
- “গত ১৫ বছরে যে পরিমাণ অনিয়ম ও লুণ্ঠন হয়েছে, তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।”
খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ
- পদ্ধতিগত দুর্বলতা এবং নিয়ন্ত্রণের অভাব।
- অর্থ পাচার এবং শোষণমূলক অনুশীলন।
- গোপন করা ঋণগুলো চিহ্নিত হওয়ায় খেলাপি ঋণের হার বেড়েছে।
আর্থিক সংকট ও সমাধানের উপায়
একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরে মতে,
- “খেলাপি ঋণের হার ৩৫ শতাংশেরও বেশি হতে পারে।”
- বিদেশি ব্যাংকগুলো বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর ক্রেডিট লিমিট কমিয়ে দিয়েছে।
- শতভাগ গভর্ন্যান্স নিশ্চিত না করলে এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।
আইনের শাসনের প্রয়োজনীয়তা
সরকারি একটি ব্যাংকের একজন সাবেক এম ডি বলেন,
- “আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে জনগণ আর্থিক সংকট থেকে মুক্তি পাবে না।”
- “অপরাধ ও লুণ্ঠন রোধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।”
উপসংহার
বাংলাদেশের ব্যাংক খাত চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। খেলাপি ঋণের হার ৩০% ছাড়িয়ে গেছে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
- দুর্নীতি, অনিয়ম ও শাসনব্যবস্থার ঘাটতি এ সংকটের মূল কারণ।
- শতভাগ গভর্ন্যান্স এবং আইনের শাসন ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।