০৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫২) শেয়ারবাজারে ধস অব্যাহত: ডিএসই-তে লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার নিচে সিটি ব্যাংক ও ইউনিসেফের চুক্তি: প্রান্তিক যুবকদের সবুজ দক্ষতায় সক্ষম করে তুলতে উদ্যোগ বিবিসি চেয়ারম্যানের ক্ষমাপ্রার্থনা: ট্রাম্পের বক্তৃতা সম্পাদনায় ‘বিচারের ভুল’ স্বীকার দিল্লির লালকেল্লার কাছে গাড়ি বিস্ফোরণ, আহত বহু বৃষ্টি থামাল চতুর্থ টি-টোয়েন্টি, ২–১ ব্যবধানে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড এনসিপি বুলেট নিয়েও প্রস্তুত- নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারি ৫টি ব্যাংক একীভূতকরণে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে পারে সরকার: বাংলাদেশ ব্যাংক জাতীয় টেলিযোগাযোগ মনিটরিং সেন্টারের নতুন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান সরওয়ার ঢাকায় দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৭৭)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
  • 151
শ্রী নিখিলনাথ রায়
হেষ্টিংস সাহেব বারাণসীতে আসিয়া, যখন রাজপ্রাসাদ আক্রমণ করিতে আদেশ দেন, তখন স্ত্রীলোকদের প্রতি কোনরূপ অত্যাচার করা হয় নাই এবং অত্যাচার হইবার সম্ভাবনাও ছিল না কারণ, নগরবাসী সকলে ও চেৎ সিংহের সৈন্যগণ সেই সময় ইংরেজ সিপাহীদিগকে তরবারির আঘাতে খণ্ড বিখণ্ড করিয়া ফেলে। আমরা পূর্ব্বে তাহার উল্লেখ করিয়াছি। সুতরাং সে সময়ে তাঁহাদের প্রতি কোনরূপ অত্যাচার হয় নাই। একমাত্র বিজয়গড়ে তাঁহাদের প্রতি অত্যাচার হইয়াছিল এবং সেই অত্যাচারের কথাই সর্ব্বত্র আলোচিত হইয়া থাকে।
বিজয়গড় কাশী হইতে ২৫ ক্রোশ দক্ষিণ এবং শোণনদ হইতে ৪০০ ক্রোশ উত্তরে অবস্থিত। সেই স্থানে রাজমাতা অবস্থান করিতেছিলেন এবং বিজয়গড়েই তাঁহাদের উপর পাশবিক অত্যাচার হয়। এই বিজয়গড়ের অত্যাচার বারাণসীর অত্যাচার বলিয়া এতদঞ্চলে কথিত হইয়া থাকে। কান্তবাবু এ অত্যাচার হইতে সৈনিকদিগকে নিবৃত্ত করিতে সমর্থ হন নাই, আমরা পূর্ব্বেই এ কথার উল্লেখ করিয়াছি। সমর্থ না হইলেও তিনি এ বিষয়ে যে চেষ্টা করিয়াছিলেন, তজ্জন্য অবশ্যই ধন্যবাদের পাত্র। সমর্থ হইলে, তাঁহার নাম চিরস্মরণীয় হইত।
এই সময়ে ‘কান্ত বাবু রাজমাতার নিকট হইতে যে সমস্ত বহুমূল্য অলঙ্কার প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, তৎসমুদায় অস্থাপি কাশীমবাজার রাজভবনে বিদ্যমান আছে এবং কাশীরাজমাতার প্রদত্ত অলঙ্কার বালরা তাঁহারা সে গুলিকে নির্দেশ করিয়া থাকেন। হেষ্টিংস চেৎসিংহকে রাজ্যচ্যুত করিয়া তাঁহার ভাগিনেয়কে বারাণসী-রাজা প্রদান করেন। এই সময়ে সকলেই আপন আপন উদর পূরণ করিয়াছিলেন। কেবল স্যৈগণ যে লুণ্ঠন করিয়া আপনাদের ক্ষোভমিটাইয়াছিল এমন নহে, হেষ্টিংস ও তাঁহার অনুচরগণও আপনাদের পোটকা পূর্ণ করেন। রাজমাতার প্রদত্ত অলঙ্কার ব্যতীত কান্ত বাবু লুণ্ঠনেরও যথোচিত অংশ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। সকলেই যখন নিজ নিজ অংশ প্রাপ্ত হইল, তখন তিনি স্বীয় অংশ ছাড়িবেনই বা কেন?
লুণ্ঠিত দ্রব্যাদির সঙ্গে কান্তবাবু কাশীরাজভবন হইতে লক্ষ্মীনারায়ণ শিলা, রামচন্দ্রী মোহর, একমুখ রুদ্রাক্ষ ও দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ, লুণ্ঠনের অংশ স্বরূপ আনয়ন করেন। সে সমস্ত অদ্যাপি কাশীমবাজার রাজবাটীতে অবস্থান করিতেছে। লক্ষ্মীনারায়ণ তাঁহাদিগের রক্ষক হইয়া সর্ব্বপ্রকার বিপদ হইতে রক্ষা করিতেছেন। এই লুণ্ঠনের সময় কান্ত বাবু আর একটি দ্রব্য আনয়ন করেন, সেটি একটি পাথরের দালান। চেৎ সিংহের বাটী হইতে উত্তোলন করিয়া দালানটি কাশীমবাজারে তাঁহার স্ববাটীতে আনয়নপূর্ব্বক স্থাপন করা হয়।
জনপ্রিয় সংবাদ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫২)

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৭৭)

১১:০০:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
শ্রী নিখিলনাথ রায়
হেষ্টিংস সাহেব বারাণসীতে আসিয়া, যখন রাজপ্রাসাদ আক্রমণ করিতে আদেশ দেন, তখন স্ত্রীলোকদের প্রতি কোনরূপ অত্যাচার করা হয় নাই এবং অত্যাচার হইবার সম্ভাবনাও ছিল না কারণ, নগরবাসী সকলে ও চেৎ সিংহের সৈন্যগণ সেই সময় ইংরেজ সিপাহীদিগকে তরবারির আঘাতে খণ্ড বিখণ্ড করিয়া ফেলে। আমরা পূর্ব্বে তাহার উল্লেখ করিয়াছি। সুতরাং সে সময়ে তাঁহাদের প্রতি কোনরূপ অত্যাচার হয় নাই। একমাত্র বিজয়গড়ে তাঁহাদের প্রতি অত্যাচার হইয়াছিল এবং সেই অত্যাচারের কথাই সর্ব্বত্র আলোচিত হইয়া থাকে।
বিজয়গড় কাশী হইতে ২৫ ক্রোশ দক্ষিণ এবং শোণনদ হইতে ৪০০ ক্রোশ উত্তরে অবস্থিত। সেই স্থানে রাজমাতা অবস্থান করিতেছিলেন এবং বিজয়গড়েই তাঁহাদের উপর পাশবিক অত্যাচার হয়। এই বিজয়গড়ের অত্যাচার বারাণসীর অত্যাচার বলিয়া এতদঞ্চলে কথিত হইয়া থাকে। কান্তবাবু এ অত্যাচার হইতে সৈনিকদিগকে নিবৃত্ত করিতে সমর্থ হন নাই, আমরা পূর্ব্বেই এ কথার উল্লেখ করিয়াছি। সমর্থ না হইলেও তিনি এ বিষয়ে যে চেষ্টা করিয়াছিলেন, তজ্জন্য অবশ্যই ধন্যবাদের পাত্র। সমর্থ হইলে, তাঁহার নাম চিরস্মরণীয় হইত।
এই সময়ে ‘কান্ত বাবু রাজমাতার নিকট হইতে যে সমস্ত বহুমূল্য অলঙ্কার প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, তৎসমুদায় অস্থাপি কাশীমবাজার রাজভবনে বিদ্যমান আছে এবং কাশীরাজমাতার প্রদত্ত অলঙ্কার বালরা তাঁহারা সে গুলিকে নির্দেশ করিয়া থাকেন। হেষ্টিংস চেৎসিংহকে রাজ্যচ্যুত করিয়া তাঁহার ভাগিনেয়কে বারাণসী-রাজা প্রদান করেন। এই সময়ে সকলেই আপন আপন উদর পূরণ করিয়াছিলেন। কেবল স্যৈগণ যে লুণ্ঠন করিয়া আপনাদের ক্ষোভমিটাইয়াছিল এমন নহে, হেষ্টিংস ও তাঁহার অনুচরগণও আপনাদের পোটকা পূর্ণ করেন। রাজমাতার প্রদত্ত অলঙ্কার ব্যতীত কান্ত বাবু লুণ্ঠনেরও যথোচিত অংশ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। সকলেই যখন নিজ নিজ অংশ প্রাপ্ত হইল, তখন তিনি স্বীয় অংশ ছাড়িবেনই বা কেন?
লুণ্ঠিত দ্রব্যাদির সঙ্গে কান্তবাবু কাশীরাজভবন হইতে লক্ষ্মীনারায়ণ শিলা, রামচন্দ্রী মোহর, একমুখ রুদ্রাক্ষ ও দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ, লুণ্ঠনের অংশ স্বরূপ আনয়ন করেন। সে সমস্ত অদ্যাপি কাশীমবাজার রাজবাটীতে অবস্থান করিতেছে। লক্ষ্মীনারায়ণ তাঁহাদিগের রক্ষক হইয়া সর্ব্বপ্রকার বিপদ হইতে রক্ষা করিতেছেন। এই লুণ্ঠনের সময় কান্ত বাবু আর একটি দ্রব্য আনয়ন করেন, সেটি একটি পাথরের দালান। চেৎ সিংহের বাটী হইতে উত্তোলন করিয়া দালানটি কাশীমবাজারে তাঁহার স্ববাটীতে আনয়নপূর্ব্বক স্থাপন করা হয়।