সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “জুলাইয়ের মধ্যে ভোটের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণার চিন্তা ইসির, লক্ষ্য ডিসেম্বরে ভোট”
আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি শেষ করে আগামী জুন–জুলাইয়ের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করার চিন্তা করছে সাংবিধানিক এই সংস্থা।
সাংবিধানিকভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব ইসির। নির্বাচনের দিনক্ষণ তারাই ঠিক করে। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আগামী সংসদ নির্বাচন কবে হবে—তা মূলত নির্ভর করছে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ওপর। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস একাধিকবার বলেছেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
ইসি সূত্র জানায়, ডিসেম্বরে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য একটি খসড়া কর্মপরিকল্পনা করা হয়েছে। কর্মপরিকল্পনায় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিন–তারিখ ঠিক করা না হলেও প্রস্তুতিমূলক কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ইসি মনে করছে, জুনের মধ্যে সংস্কার প্রক্রিয়া ও জাতীয় ঐকমত্য গঠনের প্রক্রিয়া একটি রূপ পাবে। তখন সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করা সহজ হবে।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “ঢাকায় আসছেন ট্রাম্পের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা”
চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। মার্কিন কর্মকর্তাদের এই সফরে বাংলাদেশের সংস্কার এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়তা, মিয়ানমারের পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা সংকটসহ ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের নানা বিষয়ে আলোচনা হবে।
ঢাকা ও ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ১৫ এপ্রিল চার দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিকের। পরদিন ১৬ এপ্রিল আসার কথা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হেরাপের। বাংলাদেশে অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরসঙ্গী হিসেবে মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এটি হতে যাচ্ছে দেশটির উচ্চপর্যায়ের কোনো প্রতিনিধিদলের প্রথম বাংলাদেশ সফর। গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ট্রাম্প।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সফরের সময় নিকোল চুলিক অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংস্কার প্রক্রিয়া বিশেষ করে গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করবেন। চলমান সংস্কার নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার সময় যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, তা জানতে চাইবেন। তিনি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করতে পারেন।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “ট্রাম্পের শুল্কনীতি ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ আরো উসকে দিতে পারে”
বড় আকারের খেলাপি ঋণের চাপে নাজুক পরিস্থিতি পার করছে দেশের ব্যাংক খাত। ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের ২০ শতাংশের বেশি এরই মধ্যে খেলাপির খাতায় উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত পাল্টা শুল্কনীতি দেশের ব্যাংক খাতকে আরো কঠিন পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশের ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের ৩০-৪০ শতাংশই বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতসংশ্লিষ্ট। এ খাতে কিছু ব্যাংকের বিনিয়োগ নিজেদের ঋণ পোর্টফোলিওর অর্ধেকেরও বেশি। ঋণের পাশাপাশি ব্যাংকের বৈদেশিক বাণিজ্য তথা ঋণপত্রের (এলসি) বড় অংশ বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতকে ঘিরে আবর্তিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি কমে গেলে উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি এ খাতে বিনিয়োগকারী ব্যাংকগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “বিক্ষোভে উত্তাল দেশ”
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল ছিল দেশ। বিশ্বব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল’ কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে গতকাল সকাল থেকেই রাস্তায় নেমে আসেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। মিছিল-স্লোগানে প্রতিবাদ জানান জায়নবাদী ইসরাইলের গণহত্যা ও বর্বর আগ্রাসনের। কাজ বন্ধ রেখে সড়কে নেমে প্রতিবাদী মিছিলে শামিল হন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রতিবাদ বিক্ষোভে রাজধানী কার্যত মিছিলের নগরী হয়ে ওঠে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয় ঢাকাসহ সারা দেশে।
রাজধানীতে বায়তুল মোকাররম, পল্টন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, মহাখালী, মিরপুর, রামপুরা, বাড্ডা, গুলশান, বারিধারাসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিক্ষোভকারীর উপস্থিতি দেখা গেছে। যেখান থেকে দাবি উঠেছে অবিলম্বে আগ্রাসন বন্ধের। যে দাবিতে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি রাজপথে স্লোগান দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন। মিছিল-সমাবেশ থেকে নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানানোর পাশাপাশি ইসরাইলি পণ্য বয়কটেরও ডাক দেয়া হয়েছে। স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়েছে- ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন। ফরম দ্য রিভার টু দ্য সী, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি। এদিন বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। ইসরাইলি পণ্য রাখা বা দেশটিকে সমর্থন দেয়ার অভিযোগে ভাঙচুর করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে। এ ছাড়াও ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের কাছাকাছি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে, আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের জন্য ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে পৌঁছাতে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানায় বাংলাদেশ।
ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি রাজপথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তারা। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঢাকার পাশাপাশি রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হয় প্রতিবাদ সমাবেশ। এ ছাড়াও ব্র্যাক, ইস্ট ওয়েস্ট, কানাডিয়ান, নর্থ সাউথসহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরাও ছিলেন রাজপথে। যোগ দিয়েছিলেন মেডিকেল, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরাও। দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন স্লোগানে মুখরিত ছিল চারদিক। এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে অংশগ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন ঢাকার বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও। বিক্ষোভ থেকে শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘসহ বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। একইসঙ্গে মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর নীরব ভূমিকারও সমালোচনা করা হয় বিক্ষোভ থেকে। বক্তারা বলেন, ইসরাইলি সহিংসতা বন্ধ করে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে পৌঁছাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলে, গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসন, দখলদারিত্ব এবং নির্মম গণহত্যা যেন গোটা বিশ্বের সচেতন মানুষকে বাকরুদ্ধ করে তুলেছে। ইসরাইলের খুনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর রক্তপিপাসু নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এখন শুধু মানবিক দায়িত্ব নয়, বরং এটি মুসলমান এবং মানুষ হিসেবে সকলের কর্তব্য। এদিন দুপুরে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যোগ দেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরাও। জেরুজালেম ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনিদের পূর্ণ অধিকার রয়েছে এবং তাদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বৈধ ও ন্যায্য বলে জানান তারা।